এইচএসসি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র | অধ্যায় ১ : সৃজনশীল প্রশ্ন

অধ্যায় ১

উদ্দীপকের আলোকে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও

প্রশ্ন

ক. ব্যবস্থাপক কে?

খ. ‘ব্যবস্থাপনা একটি চলমান প্রক্রিয়া’—ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ‘y’ চিহ্নিত ঘরে কোন কাজটির অনুপস্থিতি রয়েছে? বর্ণনা করো।

ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত ‘x’ চিহ্নিত ঘরে ব্যবস্থাপনার যে কাজটি রয়েছে, তার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণের কোনো সম্পর্ক আছে কি? তোমার মতামতের সপক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তর

ক. যেসব ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা প্রণয়ন, সংগঠিতকরণ, কর্মী সংস্থান, নেতৃত্ব ও নির্দেশনা দান, প্রেষণা প্রদান, সমন্বয় সাধন ও নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া সম্পাদনের সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাঁদের ব্যবস্থাপক বলে।

খ. ব্যবস্থাপনার পারস্পরিক নির্ভরশীল ও ধারাবাহিক কার্যসমষ্টিকে ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া বলে।

ব্যবস্থাপনা কার্য পরিকল্পনা দ্বারা শুরু হয়ে সংগঠিতকরণ, কর্মী সংস্থান, নির্দেশনা প্রদান, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শেষ হয়। নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আবার নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এভাবে ব্যবস্থাপনা কার্যসমূহ চলমান ধারায় আবর্তিত হয় বলে একে একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে গণ্য করা হয়। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান যত দিন চলে, এ প্রক্রিয়াও তত দিন অব্যাহত থাকে।

গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ‘y’ চিহ্নিত ঘরে নির্দেশনার কাজটি অনুপস্থিত রয়েছে।

সাধারণভাবে কর্মীদের কাছ থেকে কাজ আদায়ের লক্ষ্যে ব্যবস্থাপক কর্মীদের যে আদেশ-নির্দেশ প্রদান করেন, তাকে নির্দেশনা বলে। তবে কেবল আদেশ প্রদানই নির্দেশনা নয়। কোন কাজ কখন, কীভাবে সম্পাদন করতে হবে, সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষ অধস্তন কর্মীদের আদেশ প্রদানের পাশাপাশি উপদেশ, অনুরোধ, পরামর্শ ও উৎসাহ দিয়ে থাকে।

উদ্দীপকে বর্ণিত ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ায় কর্মী সংস্থানের পর নির্দেশনার কাজটি বিদ্যমান। পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করার জন্য যেমন সংগঠিতকরণ করতে হয়, আবার সংগঠিতকরণ প্রক্রিয়াকে সফল করার জন্য দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তোলা প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য শুধু দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তুললেই হবে না। দক্ষ কর্মী বাহিনীকে কাজে লাগানোর জন্য যথাসময়ে নির্দেশনা প্রদান করতে হয়। ব্যবস্থাপনার এই কাজ অন্যান্য কার্যাবলিকে সক্রিয় করে তোলে।

ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত ‘x’ ঘরে ব্যবস্থাপনার যে কাজটি রয়েছে, তার সঙ্গে পূর্ববর্তী কাজের সম্পর্ক রয়েছে অত্যন্ত নিবিড়।

কারণ ‘x’ ঘরে উল্লিখিত কাজ হলো পরিকল্পনা। আর তার পূর্ববর্তী কাজটি হলো নিয়ন্ত্রণ। ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ায় একটি কাজের সঙ্গে আরেকটি কাজের নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান।

কাঙ্ক্ষিত উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য ভবিষ্যতে কোন কাজ কে করবে, কীভাবে করবে, কখন করবে, কত সময়ের মধ্যে করা হবে ইত্যাদি নির্ধারণ করাকে বা এ-সংক্রান্ত নকশা প্রণয়নের কাজকে পরিকল্পনা বলে। আর পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের কার্যাদি সম্পন্ন হয়েছে কি না, তা পরিমাপ, বিচ্যুতি ঘটলে তার কারণ নির্ণয় ও বিশ্লেষণ এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ বলে।

পরিকল্পনার মাধ্যমে কে, কীভাবে কোথায়, কখন কার্য সম্পাদন করবে, তা বোঝায়। আর নিয়ন্ত্রণ হলো পরিকল্পনা অনুযায়ী সব কাজ ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা যাচাই করা। পরিকল্পনা ব্যবস্থাপনার অন্যান্য কাজের ভিত্তিস্বরূপ। আর নিয়ন্ত্রণ সেই কাজকে আরও ভুল সংশোধনের মাধ্যমে শক্তিশালী করে তোলে। তাই পরিকল্পনা গ্রহণে ব্যবস্থাপককে সতর্ক থাকতে হয়।

ব্যবস্থাপনা চক্রে পরিকল্পনা দিয়ে ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু হলেও শেষ কাজ নিয়ন্ত্রণের পর আবার পরিকল্পনা দিয়ে শুরু হয়। এ ক্ষেত্রে পরিকল্পনা আদর্শমান হিসেবে কাজ করে, যা নিয়ন্ত্রণের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হয়। আবার নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে যে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নির্দেশিত হয়, তা পরবর্তী পরিকল্পনা গ্রহণে ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। তাই নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে পরিকল্পনা অঙ্গাঙ্গিভাবে সম্পৃক্ত।

মো. মাজেদুল হক খান, সহকারী অধ্যাপক, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা

এই অধ্যায়ের প্রকাশিত পূর্বের সৃজনশীল প্রশ্ন