বাংলা ১ম পত্র

সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর: ঝর্ণার গান
প্রিয় শিক্ষার্থী, আজ বাংলা ১ম পত্রের ‘ঝর্ণার গান’ কবিতা থেকে একটি নমুনা সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।

অভিযাত্রিক দুর্গম পথের দুঃসাহসী পথিক। বন্ধুর পথে তাদের যাত্রা। লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে তারা অটল, অবিচল। মুক্তপথের এ যাত্রী অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী। অভিযাত্রিকের চলার গতিকে বহমান নদীর সঙ্গে তুলনা করা যায়।
ক. ঝিঁঝির ডাক কখন শোনা যায়?
খ. ঝুম পাহাড় চোখ পাকিয়ে ভয় দেখায় কেন?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘ঝর্ণার গান’ কবিতার সাদৃশ্য কোথায়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘অভিযাত্রিকের চলার গতিতে ঝরনার ন্যায় গতিশীলতা বিদ্যমান’। উক্তিটি উদ্দীপক ও কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ করো।

উত্তর: ক
দুপুর-ভোরে ঝিঁঝির ডাক শোনা যায়।
উত্তর: খ
ঝুম পাহাড় যেন ঝরনার অবিরাম বয়ে চলার গতি, তার চঞ্চলতা দেখে তাকে থামাতে চায়। তার পুলকিত গতিকে সতর্ক করতে ও তার চঞ্চলতাকে থামাতে তাই চোখ পাকিয়ে ভয় দেখায়।
ঝরনা বয়ে চলে অবিরাম। নৃত্যরত অবস্থায় নানা সুমধুর সুরে গান গাইতে গাইতে সে ধেয়ে চলে। কারও তোয়াক্কা করে না। কারও ভয় নেই তার। সে তার উত্পত্তিস্থল থেকে বহুদূরে চলে যায়। পাহাড় যেন তা পছন্দ করতে পারে না। পাহাড়ের নির্জনতাকে ভঙ্গ করছে বলে, পাহাড় থেকে দূরে সরে যাচ্ছে বলে পাহাড় চোখ পাকিয়ে তাকে ভয় দেখায়। ঝরনার চঞ্চল, পুলকিত গতিকে বাধা দিতে, স্তব্ধতার মধ্যে ঝরনার এই শব্দকে থামাতেই ঝুম পাহাড় চোখ পাকিয়ে ভয় দেখায়।
উত্তর: গ
উদ্দীপকের সঙ্গে ‘ঝর্ণার গান’ কবিতার সাদৃশ্য এই যে উদ্দীপকের দুঃসাহসী অভিযাত্রী ও ‘ঝর্ণার গান’ কবিতার ঝরনা কারও কথায় কান না দিয়ে, শত বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে আপন বেগে চলে। নিজ লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে তারা অটল ও অবিচল। আপন বেগে ধেয়ে চলা তাদের লক্ষ্য।
ছন্দের রাজা কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা ‘ঝর্ণার গান’ কবিতায় কবি ঝরনাকে একটি দৃঢ়, অবিচল, গতিময় এক চরিত্র হিসেবে তুলে ধরেছেন। ঝরনার গতি অবিরাম। সে কারও ভয় পায় না। চারপাশের সবকিছুই সে দেখে ও উপলব্ধি করে কিন্তু কারও জন্য তার গতিকে মন্থর করে না। তার উদ্দেশ্য সৌন্দর্যের তৃষ্ণার্তকে খুঁজে বের করা এবং সেই লক্ষ্যেই অবিচল।
অর্থাত্ উদ্দীপকে দুঃসাহসী, পথিক যেমন দুর্গম পথ পাড়ি দেয় তেমনি ‘ঝর্ণার গান’ কবিতায় ঝরনা নানা উঁচু-নিচু, বিস্তর সংকীর্ণ পথ পাড়ি দেয়। নিজের চঞ্চলতা ও অঢেল প্রাণশক্তির মাধ্যমে প্রকৃতির নানা ঘটনা সে উপভোগ করে। কিন্তু তারা উভয়ই অর্থাত্, পথিক ও ঝরনা উভয়েই তাদের লক্ষ্যে দৃঢ় থাকে। দুজনের চলার গতি নদীর স্রোতের মতো। কারও জন্য তারা থামে না। এখানে সাদৃশ্য হিসেবে উভয়ের চলার গতিকে নির্দেশ করা হয়েছে। অর্থাত্ উদ্দীপকের পথিক ও ‘ঝর্ণার গান’ কবিতার ঝরনার গতি বহমান ও লক্ষ্যে অবিচল।
উত্তর: ঘ
‘অভিযাত্রিকের চলার গতিতে ঝরনার ন্যায় গতিশীলতা বিদ্যমান।’—উক্তিটি উদ্দীপক ও কবিতার জন্য যুক্তিযুক্ত।
উদ্দীপকে দুঃসাহসী অভিযাত্রী দুর্গম পথ দৃঢ় মনোবলের সাথে পাড়ি দেয়। সে তার লক্ষে অটল, অবিচল। অভিযাত্রিকের চলার গতি ও কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘ঝর্ণার গান’ কবিতার ঝরনার গতিময় ছুটে চলা উভয়ই যেন একই সূত্রে গাঁথা। উভয়ের গতিকে নদীর চলমান স্রোতের সঙ্গে তুলনা করা যায়।
ঝরনা কারও জন্য থামে না। সে সৌন্দর্যের তৃষ্ণার্তকে খুঁজে বেড়ায় পৃথিবীময়। কোনো বাধা, ভয় তার লক্ষ্যকে বিচলিত করতে পারে না। সে শুধু তার লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে চায়। কারও কথা, ভয় দেখানো, চারপাশের ঘটনা তাকে থামাতে পারে না। সে শুধু চেয়ে দেখে আর আপন মনে নূপুর বাজিয়ে পাথরে তাল দিয়ে নেচে-গেয়ে চলতে থাকে। অভিযাত্রিকেরা যেমন নিজের লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে অটল, অবচিল ও দুর্বার গতিতে ছুটে চলে, ঝরনাও পর্বত গাত্রে জন্ম নিয়ে ক্লান্তিহীনভাবে চঞ্চল পায়ে পুলকিত মনে বয়ে যায়।
উদ্দীপকের উক্তিটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী দুঃসাহসী অভিযত্রিক ও পর্বতকন্যা ঝরনার অবিরাম গতিতে কোনো পার্থক্য নেই। অর্থাত্ উক্তিটি যথার্থ।
সহকারী অধ্যাপক