এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৬, প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের মানতে হবে যে যে নিয়ম
২০২৬ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হবে ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে। প্রাইভেট প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর তালিকাভুক্তি ফি ১০০ টাকা। ২১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৫ জানুয়ারির মধ্যে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এ বছর নির্বাচিত ১৮টি কলেজের মাধ্যমে এ পরীক্ষার্থীরা প্রাইভেটে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।
গতকাল মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর ২০২৫) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) বা সমমান পরীক্ষা ২০২১ এবং এর আগের বছরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ২০২৬ নালের এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। তা ছাড়া বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা ২০২০ এবং তৎপূর্ববর্তী বছরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ২০২৬ সালের এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।
রেজিস্ট্রেশন নবায়ন ব্যতীত প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা ২০২৬ সালের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী এইচএসসি পরীক্ষা-২০২৬ এ অংশ নিতে পারবেন। শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রণীত পরীক্ষা পরিচালনার নিয়মাবলি প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের বেলায়ও প্রযোজ্য হবে। প্রাইভেট পরীক্ষার্থীকে বোর্ড থেকে নির্ধারিত যেকোনো একটি কলেজের মাধ্যমে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। তবে শিক্ষক, পুলিশ ও প্রতিরক্ষা বাহিনীতে চাকরিরত ব্যক্তি এবং শারীরিক কিংবা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রাইভেট পরীক্ষার্থীকে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে না।
প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা যে কলেজের মাধ্যমে নিবন্ধন করা বা রেজিস্ট্রেশন করবে, সে কলেজের জন্য নির্ধারিত কেন্দ্রে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশ নেবেন। কোনো অবস্থাতেই কেন্দ্র পরিবর্তন করা যাবে না। প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা কেবল মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও ইসলামি শিক্ষা শাখায় পরীক্ষা দিতে পারবেন। যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা আছে (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যতীত) সে বিষয়/বিষয়গুলো নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা চতুর্থ বিষয় গ্রহণ করতে পারবেন না।
বোর্ডের কোনো কর্মচারী কর্মরত অবস্থায় নিজ বোর্ড থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না। তবে ইচ্ছা করলে নিজ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে বাংলাদেশের অন্য যেকোনো বোর্ড থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের বোর্ড থেকে নির্ধারিত কলেজের অধ্যক্ষের নিকট ১৫ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় ফি ও অন্যান্য দলিলসহ সাদা কাগজে আবেদন করতে হবে।
প্রাইভেট প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর তালিকাভুক্তি ফি ১০০ টাকা এবং ২১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৫ জানুয়ারির মধ্যে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। পূরণ করা অনলাইন তালিকা এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার মূল নম্বরপত্র সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থেকে সত্যায়িত করে ২০২৬ সালের ১১ জানুয়ারির মধ্যে বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় জমা দিতে হবে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, মূল নম্বরপত্র তালিকার ক্রমানুসারে সাজিয়ে দিতে হবে।
প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখা থেকে ১৫/০১/২০২৬ তারিখে গ্রহণ করতে হবে এবং উক্ত শাখা থেকে একই সঙ্গে PROBLEMATIC PRINT OUT সংশোধনের নিমিত্তে গ্রহণ করতে হবে। PROBLEMATIC PRINT OUT–এ প্রয়োজনীয় সংশোধন করে ২০/০১/২০২৬ তারিখে বোর্ডের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিতে হবে এবং উক্ত শাখায় যোগাযোগ করে ফরম পূরণের পূর্বে সংশোধিত অবশিষ্ট রেজিস্ট্রেশন কার্ড গ্রহণ করতে হবে।
প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী (Test) পরীক্ষায় অবশ্যই অংশগ্রহণ করতে হবে। আবশ্যিক বিষয় বাংলা, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ অন্য যেকোনো তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। প্রত্যেক বিষয়ের পূর্ণমান ১০০ এবং সময় ৩ ঘণ্টা।
প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষার পূর্বে বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত তারিখের মধ্যে নির্ধারিত কলেজের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। উক্ত রেজিস্ট্রেশন শুধু এক বছরের জন্য বলবৎ থাকবে। প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের গৃহীত বিষয়গুলো পাঠ্যসূচিতে উল্লিখিত গুচ্ছ মোতাবেক হতে হবে। গুচ্ছবহির্ভূত বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে পরীক্ষা বাতিল বলে গণ্য হবে।
প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের ২০২৬ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষের নিকট পরীক্ষার ফি জমা দিতে হবে। নির্বাচিত প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা বোর্ডের পরীক্ষাসংক্রান্ত নিয়মাবলি মেনে চলতে বাধ্য থাকবেন। কোনো কারণ না দেখিয়ে যেকোনো পরীক্ষার্থীর আবেদন ফরম বাতিল করার ক্ষমতা বোর্ড সংরক্ষণ করে।
২০২৬ সালের নির্বাচিত কলেজগুলো হলো—
১. ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজ
২. সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ
৩. ভাসানটেক সরকারি কলেজ
৪. বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ
৫. নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজ
৬. মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজ
৭. মানিকগঞ্জের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ
৮. গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ
৯. নরসিংদী সরকারি কলেজ
১০. কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজ
১১. টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজ
১২. টাঙ্গাইলের নাগরপুর সরকারি কলেজ
১৩. ফরিদপুরের সরকারি ইয়াছিন কলেজ
১৪. শরীয়তপুর সরকারি কলেজ
১৫. মাদারীপুর সরকারি কলেজ
১৬. রাজবাড়ী সরকারি কলেজ
১৭. গোপালগেঞ্জের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ ও
১৮. আবুধাবির শেখ খলিফা বিন যায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ।