অটোমেশনের কারণে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হতে পারিনি: স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী

রাজধানীর সিরডাপে ‘বেসরকারি স্বাস্থ্যশিক্ষার মানোন্নয়ন এবং ভর্তিপ্রক্রিয়ায় চলমান শিক্ষার্থীসংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল।

স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা বলেছেন, সরকার চিকিৎসা শিক্ষা খাতে মানের উন্নতির সঙ্গে আপস করবে না। ভর্তিপ্রক্রিয়ায় চলমান শিক্ষার্থীসংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সময়োপযোগী ব্যবস্থা নেবে। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মেডিকেল কলেজে ভর্তিতে অটোমেশন কোনো নতুন ব্যবস্থা নয়। অটোমেশনের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারিনি।’ তিনি বলেন, ‘শিক্ষার মান বজায় না রাখলে যে কেউ বা কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো কাজ করা উচিত নয়।’

গতকাল শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বেসরকারি স্বাস্থ্যশিক্ষার মানোন্নয়ন এবং ভর্তিপ্রক্রিয়ায় চলমান শিক্ষার্থীসংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বেসরকারি মেডিকেল কলেজের জোট প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) এই আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল। বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, শিক্ষক ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।

আরও পড়ুন

প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তিতে অটোমেশন পদ্ধতি বাতিলের দাবি করেছে। তারা বলছে, এমন ব্যবস্থা করতে হবে, যেন অভিভাবকেরা তাঁদের পছন্দের মেডিকেল কলেজে সন্তানদের ভর্তি করাতে পারেন।

অটোমেশন পদ্ধতিতে মেধার ওপর ভিত্তি করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। মেধাতালিকায় ওপরের দিকে থাকা শিক্ষার্থীরা আগে তাঁদের পছন্দের কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। কে কোন কলেজে ভর্তি হচ্ছেন, তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় দেখতে পারে, জানতে পারে। শিক্ষার্থীদের সারি ভেঙে কাউকে কোনো কলেজে ভর্তি করানোর সুযোগ নেই।

মেডিকেল কলেজে ভর্তিপ্রক্রিয়ায় চলমান ছাত্রসংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অটোমেশন কোনো নতুন ব্যবস্থা নয়। এটি পাকিস্তান আমলেও ছিল। এই পদ্ধতির কারণে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। আমিও ভুক্তভোগী ছিলাম। এই অটোমেশনের কারণে আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারিনি।’

আরও পড়ুন

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম আবদুল মোমেন অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসকদের মান ভালো। হাসপাতালের প্রতি মানুষের আস্থা আনতে হবে, প্রতিযোগিতা বাড়াতে হবে। চিকিৎসার মান বাড়লে মানুষ প্রতিদান দেবে।’

প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ মুবিন খান বলেন, ভর্তির ক্ষেত্রে অটোমেশন পদ্ধতি চালুর কারণে বেসরকারি মেডিকেলে চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ১ হাজার ২০০ আসন খালি আছে, শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারছেন না। এই পদ্ধতির কারণে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো এখন ধ্বংসের মুখে। মুবিন খান আরও বলেন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ খাতকে ধ্বংস করার নীলনকশা তৈরি করা হয়েছে। মনে রাখতে হবে, একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা কঠিন, এটি ধ্বংস করা সহজ। শিক্ষার্থীদের পছন্দ অনুযায়ী মেডিকেলে ভর্তির ব্যবস্থা থাকা উচিত।

আরও পড়ুন