ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনে পড়াশোনার আদ্যোপান্ত

ইমপেরিয়াল কলেজের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার স্বপ্ন দেখলে আপনার গন্তব্য হতে পারে ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডন। কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিংস ২০২৬ এ বিশ্ববিদ্যালয়টি বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। বিজ্ঞান, প্রকৌশল, চিকিৎসাশাস্ত্র এবং ব্যবসায় শিক্ষায় উৎকর্ষ অর্জনের লক্ষ্যে বিদেশে পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্তমানে ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনে পড়াশোনা করছেন ২০ হাজার ৪৪৮ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৪৫ শতাংশ (৯ হাজার ২৩০ জন) আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী। ফলে এটি হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার একটি অন্যতম কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৪৩৫টি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম রয়েছে, যা উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষার্থীদের জন্য বিস্তৃত সুযোগ তৈরি করেছে।

বিশ্বমানের গবেষণা সুবিধা

ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডন কেবল একাডেমিক উৎকর্ষের জন্যই নয়, বরং সর্বাধুনিক গবেষণা সুবিধা এবং হ্যান্ডস-অন লার্নিংয়ের সুযোগের জন্যও বিখ্যাত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—

হাইড্রোডাইনামিকস ল্যাবরেটরি: ঢেউয়ের গতিবিধি ও তার প্রভাব নিয়ে গবেষণার জন্য ব্যবহৃত হয়। মেরিন এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং গবেষণার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কেপিএমজি ডেটা অবজারভেটরি (DO): ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বড় এই গবেষণাগারে রয়েছে ৬৪টি মনিটর ও ৩২টি কম্পিউটার, যা তৈরি করে ৩১৩ ডিগ্রি সারাউন্ড ভিশন। জটিল ডেটা বিশ্লেষণের জন্য এটি অনন্য একটি স্থান।

আরও পড়ুন
বর্তমানে ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনে পড়াশোনা করছেন ২০ হাজার ৪৪৮ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৪৫ শতাংশ (৯ হাজার ২৩০ জন) আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী
ছবি: ইমপেরিয়াল কলেজের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া
আরও পড়ুন

অ্যাডভান্সড উইন্ড টানেলস: কম গতির পরীক্ষণ থেকে শুরু করে ম্যাক ৯ গতিবেগ পর্যন্ত গবেষণার সুযোগ রয়েছে, যা বিমান ও গাড়িশিল্পের উন্নত গবেষণায় ব্যবহৃত হয়।

ফুল মোশন ফ্লাইট সিমুলেটর: বর্তমান এবং ভবিষ্যতের বিমান নকশার কর্মক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

কার্বন ক্যাপচার পাইলট প্ল্যান্ট: চারতলা শিল্পমানের এই ল্যাব শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের জলবায়ু সংকট মোকাবিলার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দেয়।

এসব সুবিধা নিশ্চিত করে যে শিক্ষার্থীরা শুধু তত্ত্বগত জ্ঞান অর্জন করেন না বরং বাস্তব উদ্ভাবনের অভিজ্ঞতাও লাভ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৪৩৫টি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম রয়েছে, যা উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিক্ষার্থীদের জন্য বিস্তৃত সুযোগ তৈরি করেছে।
ছবি: ইমপেরিয়াল কলেজের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া
আরও পড়ুন

কোর্সসমূহ—

ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনে বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তৃত শিক্ষাক্রম রয়েছে—

*৬৬টি স্নাতক প্রোগ্রাম—প্রধানত প্রকৌশল, জীবনবিজ্ঞান, চিকিৎসাশাস্ত্র ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান।

*১৬৩টি স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম—বিজ্ঞানের বিশেষায়িত বিভিন্ন শাখায়।

*১৫টি ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রোগ্রামের মধ্যে রয়েছে খ্যাতনামা ফুলটাইম এমবিএ, সাপ্তাহিক এবং অনলাইন এমবিএ কোর্স।

*১১টি সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রোগ্রাম, যা শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ একাডেমিক অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

ভর্তিতে শর্তাবলি (আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য)—

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে। ন্যূনতম স্কোর—

*টোয়েফল (TOEFL): ৯১ বা তার বেশি

*আইইএলটিএস (IELTS): ৬.৫ বা তার বেশি

টিউশন ফি ও জীবনযাত্রার খরচ—

ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনে পড়াশোনা করা একটি বড় ধরনের বিনিয়োগ, তবে এটি বিশ্বব্যাপী ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ তৈরি করে।

–দেশীয় শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি: ৯ হাজার ৩০৬ পাউন্ড থেকে শুরু

–আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি: ৩৫ হাজার ২১৩ পাউন্ড থেকে শুরু

–বার্ষিক আনুমানিক জীবনযাত্রার খরচ: ২০ হাজার ৯৮৮ পাউন্ড। (১ পাউন্ড সমান বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৬৪ টাকা)।

আরও পড়ুন