ইন-জিনিয়াস প্রতিযোগিতা শুরু

‘জিপিএইচ ইস্পাত-প্রথম আলো ইন-জিনিয়াস’ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বুয়েটের উপাচার্য সাইফুল ইসলাম। মঞ্চে (বাঁ থেকে) অধ্যাপক খান মাহমুদ আমানত, অধ্যাপক আহসানুল কবীর, জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, জিপিএইচ ইস্পাতের চেয়ারম্যান আলমগীর কবির, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। গতকাল সোনারগাঁও হোটেলে।  প্রথম আলো
‘জিপিএইচ ইস্পাত-প্রথম আলো ইন-জিনিয়াস’ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বুয়েটের উপাচার্য সাইফুল ইসলাম। মঞ্চে (বাঁ থেকে) অধ্যাপক খান মাহমুদ আমানত, অধ্যাপক আহসানুল কবীর, জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, জিপিএইচ ইস্পাতের চেয়ারম্যান আলমগীর কবির, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। গতকাল সোনারগাঁও হোটেলে। প্রথম আলো

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পুরকৌশল বিভাগে পড়ুয়াদের জন্য শুরু হলো ভিন্নধর্মী এক প্রতিযোগিতা। স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজে উৎসাহ দিতে এই প্রতিযোগিতার নাম ‘জিপিএইচ ইস্পাত-প্রথম আলো ইন-জিনিয়াস’। গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের সুরমাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন এই প্রতিযোগিতা শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়।

আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয় প্রতিযোগিতার ওয়েবসাইট(www.prothomalo.com/engenius)। ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ ধরনের প্রতিযোগিতা দেশে এই প্রথম। আগামী কয়েক দশকে দেশের আরও ভৌত অবকাঠামো লাগবে। এ অবকাঠামো নির্মাণে প্রয়োজন দক্ষ পুরকৌশলীদের। সে জন্য এই প্রতিযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তাঁর আশা। 

অনুষ্ঠান থেকে বলা হয়, পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীদের ভৌত স্থাপনার প্রকৌশলচর্চা বিষয়ে সচেতনতা, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক মানে গড়ে ওঠার অনুপ্রেরণা দিতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন। এর উদ্দেশ্য আগামী দিনের ভৌত কাঠামো উন্নত, নান্দনিক এবং মজবুত ও দৃঢ় ভিত্তির ওপর গড়ে তোলা। যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয়, চতুর্থ বর্ষের এবং সদ্য স্নাতক শেষ করা শিক্ষার্থীরা দলীয়ভাবে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন। ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। প্রথম ধাপে ৩০টি দল, দ্বিতীয় ধাপে ১০টি এবং সব শেষে ৩টি দল নির্বাচিত হবে। বিজয়ী ৩টি দলকে পুরস্কৃত করা হবে। শীর্ষ দলটি নগদ পুরস্কার ছাড়াও বিশ্বের একটি পরিকল্পিত নগর শিক্ষাসফরের সুযোগ পাবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাইফুল ইসলাম বলেন, দেশে ভৌতকাঠামোর উন্নয়ন হচ্ছে। উঁচু উঁচু ভবন নির্মিত হচ্ছে। এর জন্য বাস্তব ও জ্ঞানসমৃদ্ধ প্রকৌশলী আমাদের দরকার। শুধু পুঁথিগত বিদ্যা দিয়ে এটা হবে না, প্রায়োগিক বিদ্যাও লাগবে।

জিপিএইচ ইস্পাত ও প্রথম আলো যৌথভাবে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। অনুষ্ঠানে জিপিএইচ ইস্পাতের চেয়ারম্যান আলমগীর কবির বলেন, জিপিএইচ দেশের ইস্পাতশিল্পে নতুন এক প্রযুক্তিভিত্তিক কারখানা চালু করতে যাচ্ছে। বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এ কারখানায় আমদানি বিকল্প ইস্পাত সামগ্রী তৈরি হবে। ইন-জিনিয়াস প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশে প্রতিভাবান প্রকৌশলীদের তুলে আনা যাবে। 

প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘তরুণদের নিয়ে যেকোনো আয়োজনে প্রথম আলো আছে, থাকবে। আমরা সব সময় বলি—হাল ছেড়ো না, ভালোর সাথে আলোর পথে। আজকের উদ্যোগটি সফল হোক, ভালো হোক।’

বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আহসানুল কবীর বলেন, উন্নত দেশগুলোতে বর্তমানে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়টির চাহিদা কমলেও বাংলাদেশে এই বিষয়ের চাহিদা আগামী ৫০ থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত থাকবে।

অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতার বিস্তারিত তুলে ধরেন বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক খান মাহমুদ আমানত। তিনি বলেন, আমাদের নিরাপদ ও টেকসই ভৌত কাঠামো দরকার। তরুণ প্রকৌশলীদের অনুপ্রেরণা দিতে হবে, যাতে তাঁরা এফ আর খানের মতো বিশ্বখ্যাত প্রকৌশলী হতে পারেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রথম আলোর যুব কর্মসূচির সমন্বয়ক মুনির হাসান বলেন, দেশে অনেক অবকাঠামো হচ্ছে। নতুন করে ভবন, সেতু তৈরি হচ্ছে। এসব নির্মাণে দক্ষ ও সচেতন পুরকৌশলী দরকার। এ লক্ষ্যেই এ বছরের জানুয়ারিতে প্রথম আলো ও জিপিএইচ ইস্পাত সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। বুয়েটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের ১১ জন শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞ এই প্রতিযোগিতায় নির্বাচক হিসেবে থাকবেন। 

অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নির্মিত ‘আলোর পথযাত্রী’ তথ্যচিত্রটি প্রদর্শন করা হয়।