নাচের মেয়ে

জান্নাতুল ফেরদৌস
জান্নাতুল ফেরদৌস

‘নাচের প্রতি আগ্রহ ছিল ছোটবেলা থেকে। তখন দেখতাম বন্ধুবান্ধবেরা অনেকেই ক্লাস শেষ করে নাচের ক্লাসে যায়। মনে হতো, ইশ্​! আমিও যদি ওদের সঙ্গে যেতে পারতাম! আমার আগ্রহ দেখে এক বান্ধবীর মা আমাকে ভর্তি করিয়ে দেন নাচের স্কুলে।’ জান্নাতুল ফেরদৌসের গল্পটা শুরু হলো এভাবে।

জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অর্থনীতি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন তিনি। জামালপুর শিশু একাডেমিতে নাচে যাঁর হাতেখড়ি, তিনিই এখন কলেজের যেকোনো সামাজিক বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চ মাতিয়ে রাখেন। হোক বর্ষবরণ বা পয়লা বৈশাখ—জান্নাতুল মঞ্চে আছেন। জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও নৃত্যশিল্পী হিসেবে অংশ নেন তিনি। 

জান্নাতুল বলেন, ‘২০১৫ এবং ২০১৬ সাল আমার জীবনের একটি স্মরণীয় মুহূর্ত। ওই সময় অংশগ্রহণ করি চ্যানেল আই আয়োজিত সেরা নাচিয়ে অনুষ্ঠানে। যদিও সেখানে প্রথম হতে পারিনি, চতুর্থ হয়েছি। তবে অনেক কিছুই শিখতে পেরেছি।’ একটা মজার স্মৃতির কথা বললেন তিনি। ‘একবার আমাদের প্রশিক্ষণের জন্য ভারত থেকে একজন প্রশিক্ষককে আনা হয়েছিল। নাচের বিভিন্ন বিষয় তিনি আমাদের বুঝিয়ে বলছিলেন। তাঁর কথা শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, টের পাইনি।’ বলে জান্নাতুল ফেরদৌসের হাসি আর থামতেই চায় না। 

আশেক মাহমুদ কলেজের এই ছাত্রীর ঝুলিতে রয়েছে বেশ কিছু পুরস্কার। ২০০৫ সালে পদ্মকুঁড়ি ও ২০০৬ সালে শাপলাকুঁড়ি প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্যায়ে হয়েছিলেন প্রথম। এ ছাড়া জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় ২০১১ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত টানা তিনবার প্রথম স্থান অর্জন করেছেন তিনি।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জুনিয়র নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস। নাচের প্রশিক্ষক হিসেবে রয়েছেন মণিমেলা খেলাঘর আসরে। নাচের পাশাপাশি গত বছর ‘কাগজের উড়োজাহাজ’ নামে একটি টেলিফিল্মেও অভিনয় করেন তিনি। ভবিষ্যতে নাচের ওপর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা আছে তাঁর। 

গ্রন্থনা: ফজলে রাব্বী