বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের অ্যালামনাইদের সাফল্য উদ্‌যাপন করল ব্রিটিশ কাউন্সিল

ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশে স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ডস ২০২৬ আয়োজন করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। এবার প্রতিষ্ঠানটি চতুর্থবারের মতো এই আয়োজন করল। সম্প্রতি ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন খাতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

বিশ্বের নির্বাচিত কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পর্যায়ে এই পুরস্কার আয়োজন করছে, যা এ অঞ্চলে যুক্তরাজ্যের অ্যালামনাইদের উল্লেখযোগ্য প্রভাবের প্রতিফলন। এবারের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজ। এ ছাড়া ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের ডেপুটি হাইকমিশনার ও ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর জেমস গোল্ডম্যান, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী ও বিভিন্ন খাতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও সংগীতশিল্পী হাবিব ওয়াহিদের পরিবেশনা, যিনি লন্ডনের স্কুল অব অডিও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করেছেন।

বিজনেস অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড, সায়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি অ্যাওয়ার্ড এবং সোশ্যাল অ্যাকশন অ্যাওয়ার্ড—এই মোট তিনটি ক্যাটাগরিতে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করা পেশাজীবীদের সাফল্য উদ্‌যাপন করা হয়।

ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস বলেন, ‘স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ডস এমন ব্যক্তিদের সম্মান জানায়, যাঁদের চিন্তা, প্রতিভা ও নেতৃত্ব দেশের সীমানা ছাড়িয়ে গেছে। সরকারি সেবা, ব্যবসা, গবেষণা ও সামাজিক উন্নয়নের নানা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যুক্তরাজ্য থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা অ্যালামনাইরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন, যা যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করছে।

বিজ্ঞান ও টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে যেসব প্রাক্তন শিক্ষার্থী তাঁদের পেশাগত জীবনে এবং এর বাইরে উল্লেখযোগ্য অবদান ও বিস্তৃত প্রভাব রেখে চলেছেন, তাঁদের সম্মান জানাতে দেওয়া হয় সায়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি। এ বছর এ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন জনস্বাস্থ্য গবেষক শমিক মারুফ। তিনি লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের একজন সাবেক শিক্ষার্থী এবং চিভেনিং স্কলার। জনস্বাস্থ্য উদ্ভাবক হিসেবে শমিক অবহেলিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ প্রতিরোধে ডিজিটাল নজরদারি ও প্রমাণভিত্তিক কৌশল উন্নয়ন ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। আইসিডিডিআরবিতে তিনি অবহেলিত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ মোকাবিলায় স্বল্প ব্যয়ে কার্যকর সমাধান উদ্ভাবনে কাজ করছেন, যার মাধ্যমে মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য উন্নত সেবা নিশ্চিত হচ্ছে। এই ক্যাটাগরিতে অন্য দুই ফাইনালিস্ট ছিলেন নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ফরিদ উদ্দিন ফারহাদ।

আরও পড়ুন

বিজনেস অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় সেসব প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে, যাঁরা নতুন সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী ধারণা, সমাধান কিংবা প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে, এমন ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য। এ বছর এই পুরস্কার পেয়েছেন ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন এবং রয়্যাল হলোয়ে, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফাসবীর এসকান্দার। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বাইট-সাইজ মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম দ্য ফ্রন্ট পেজের প্রতিষ্ঠাতা, যা একই সঙ্গে বিজ্ঞাপন ও জনসংযোগ কার্যক্রমে নতুন একটি ধারার সূচনা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য সৃজনশীলভাবে বিজ্ঞাপন ও পিআর প্রচারের সুযোগ তৈরি করেছে।

সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা এবং মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অসাধারণ অবদান রাখা সাবেক শিক্ষার্থীদের কাজকে সম্মান জানাতে দেওয়া হয় সোশ্যাল অ্যাকশন অ্যাওয়ার্ড। চিভেনিং স্কলার এবং নটিংহাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটির অ্যালামনাই সুমাইয়া আফরিন মিষ্টিকে এই অ্যাওয়ার্ডটি প্রদান করা হয়েছে। একজন শিশু ও কিশোর মনোবিজ্ঞানী হিসেবে সুমায়া কাউন্সেলিং, সুরক্ষা উদ্যোগ এবং ওয়েলবিয়িং কারিকুলামের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্কুলভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে শক্তিশালী করছেন। নটিংহাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটি থেকে অ্যাপ্লাইড চাইল্ড সাইকোলজিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের পাশাপাশি তিনি নবীন

আরও পড়ুন

মনোবিজ্ঞানীদের প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার্থীদের মেন্টর করছেন। ব্লুমএইডের সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি প্রমাণভিত্তিক কাউন্সেলিং এবং যুব নেতৃত্বাধীন উদ্যোগগুলোকে প্রসারিত করছেন, যা শিশু ও কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যসহায়তা–ব্যবস্থা উন্নত করছে। এই ক্যাটাগরির ফাইনালিস্ট ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ডের মুনজেরিন শহীদ এবং সোয়ানসি ইউনিভার্সিটির শামীম আরা শিউলি।