অনলাইন ক্লাস আরও আকর্ষণীয় করার উপায় কী
করোনা আবহে অনেক দিন হয়ে গেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দরজা বন্ধ। কবে আবার স্কুলে শারীরিকভাবে উপস্থিতির মাধ্যমে ক্লাস শুরু হবে, তার ঠিক নেই। ফলে ভরসা সেই অনলাইন ক্লাস। শিক্ষা কার্যক্রম চলছে অনলাইনে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে অনলাইন ক্লাসের উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে। শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় ক্রমাগত সাধিত হবে সেই উৎকর্ষ। শিক্ষকের যোগ্যতা ও দক্ষতার পাশাপাশি আরও অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে অনলাইন ক্লাসের সফলতা। অনলাইন ক্লাসকে আকর্ষণীয় করে তুলতে শুধু পাঠ্যবই পড়ানো যথেষ্ট নয়। এর বাইরেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অতিরিক্ত কিছু ভূমিকা পালন করতে হয় বা হচ্ছে।
অনলাইন ক্লাসের হাত ধরে নতুন চ্যালেঞ্জে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কারণ, প্রযুক্তির মাধ্যমে শুধু তো পড়ালেই হবে না, ছাত্রছাত্রীরা যাতে অনলাইন ক্লাসের প্রতি উৎসাহ না হারিয়ে ফেলে, সেদিকেও নজর রাখতে হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। উচ্চ ক্লাসের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাসের কাজটা তুলনামূলকভাবে সহজ হলেও শিশুদের জন্য খুবই কঠিন। এ ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের অনলাইন ক্লাসের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে শুধু বই–ই যথেষ্ট নয়। অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা এমনটাই মনে করেন। তাঁরা বলছেন, অনলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রেও পরিবেশটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় নজর রাখতে হয় ক্লাসের সময়।
কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো, যার মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনলাইন ক্লাসকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ
দ্রুত বা অতি ধীরে ক্লাস পরিচালনা করা উচিত নয়। বেশি দ্রুত হলে যেমন শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারে না, তেমনি অতি ধীরে হলেও শিক্ষার্থীরা বিরক্ত বা অন্য মনস্ক হয়ে পড়তে পারে। এখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনেক পথ আছে। করোনার কারণে অনেক পথ খুলে গেছে। আর সব সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির কল্যাণে। ফলে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখার একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা খুবই প্রয়োজন। এই যোগাযোগ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ের জন্যই জরুরি। সেই সঙ্গে গ্রুপ তৈরি করা যায়, এমন অ্যাপ বা সফটওয়্যারের খোঁজ করতে হবে।
দীর্ঘদিন স্কুলের দরজা বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীরা তাদের বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা করতে পারছে না, যার ফলে তাদের মন খারাপ হচ্ছে। এই সময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মনের কথা শুনতে পারলে শিক্ষক-শিক্ষিকার সঙ্গে শিক্ষার্থীর নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা নিতে পারে।
উৎসাহী থাকুন এবং উৎসাহিত করুন
শিশুরা সব সময় বড়দের থেকে উৎসাহ পায়। ফলে একজন শিক্ষকের সামান্য কিছু পদক্ষেপ শিশুকে পড়াশোনার প্রতি আরও বেশি উৎসাহিত করতে পারে। তাই শিক্ষার্থীকে সব সময় উৎসাহিত করুন। তারা যাতে এটা বুঝতে পারে ক্লাস ভার্চ্যুয়ালি হলেও আপনি তাদের কথা ভাবছেন। তারা যাতে এগিয়ে যেতে পারে, সে জন্য পাশে দাঁড়ান। এ জন্য মেসেঞ্জারের চ্যাট বক্সে মাঝেমধ্যে কোনো স্মাইলি দিলে তারাই খুশিই হবে বা তাদের প্রশংসা করা যেতে পারে। এতেই শিশু শিক্ষার্থীরা অনেক খুশি হবে।
শিক্ষার্থীদের উন্নতির ওপর নজর রাখুন
কচিকাঁচাদের বারবার তাদের ভুলভ্রান্তি মনে না করিয়ে দিলে তারা শিখতে পারে না। ফলে অনলাইন ক্লাসে তারা কতটা শিখতে পারছে, সেদিকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দৃষ্টি থাকা প্রয়োজন। যে কারণে তাদের নিয়মিত পড়া দেওয়া যেতে পারে। সেই কাজ তারা যেন করে, সেদিকেও নজর দিতে হবে।
প্রয়োজনে অভিভাবকদের সহায়তা
এখন অভিভাবকেরা তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে অনেক বেশি সময় কাটান। ফলে তাদের পড়াশোনার প্রতিও বেশি খেয়াল রাখেন তাঁরা। যে কারণে যেকোনো প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস ও দ্য ওয়ার