এসএসসি পরীক্ষা-২০২৫: রসায়ন বিষয়ে এ+ পেতে ১২ পরামর্শ
প্রিয় পরীক্ষার্থী, তোমাদের পরের পরীক্ষাটা হলো রসায়ন। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হলো রসায়ন। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি বেশ প্রয়োজন পড়বে। রসায়ন বিষয়ে মোট ১২টি অধ্যায় রয়েছে। সবগুলো অধ্যায় তোমাদের সিলেবাসে রয়েছে। তাই এ বিষয়টির সব অধ্যায় থেকে প্রশ্ন হতে পারে। বহুনির্বাচনি প্রশ্নেও কিছু গাণিতিক সমস্যা দেওয়া থাকে। কম সময়ে কীভাবে গাণিতিক সমস্যার সমাধান করা যায়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। পরীক্ষার আগে যে দুই দিন সময় পাবে তখন গাণিতিক সমস্যা অনুশীলন করবে। রসায়নে বহুনির্বাচনি অংশে নম্বর থাকবে ২৫, সৃজনশীল বা রচনামূলক অংশে ৫০ এবং ব্যবহারিক অংশে নম্বর ২৫।
অধ্যায় ১—
রসায়নের প্রথম অধ্যায় হলো রসায়নের প্রাথমিক ধারণা বিষয় নিয়ে। এখানে রসায়নের গুরুত্ব, গবেষণা প্রক্রিয়া, রসায়ন পরীক্ষাগারের সাংকেতিক চিহ্ন সম্পর্কে পড়বে। এখান থেকে বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর আসতে পারে।
অধ্যায় ২—
দ্বিতীয় অধ্যায়ে ব্যাপন, নিঃসরণ, ঊর্ধ্বপাতন, গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক ইত্যাদি বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে। মনে রেখো, আমরা যানবাহনের জ্বালানি হিসেবে যে সিএনজি গ্যাস ব্যবহার করে থাকি, এটা আসলে উচ্চ চাপে সংকুচিত মিথেন গ্যাস। সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য এ অধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যায় ৩—
পদার্থের গঠন অধ্যায়ে অণু-পরমাণু, ইলেকট্রন, প্রোটন, শক্তি স্তরে ইলেকট্রন বিন্যাস ভালো করে দেখে নেবে। মৌলিক ও যৌগিক গ্যাস সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখবে। তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ ও তার ব্যবহার কিন্তু দরকারি। মনে রেখো, আবিষ্কৃত মৌলের সংখ্যা ১১৮টি, প্রকৃতিতে পাওয়া যায় ৯৮টি।
অধ্যায় ৪—
চতুর্থ অধ্যায়ে পারমাণবিক সংখ্যা, ইলেকট্রন বিন্যাস সঠিকভাবে জানা না থাকলে পর্যায় সারণিতে মৌলের অবস্থান নির্ণয় করা যাবে না। তাই এ দুটি বিষয়কে আয়ত্তে আনতে হবে। পর্যায় সারণি অধ্যায়ের শ্রেণি নির্ণয় ও পর্যায় নির্ণয় ভালো করে পড়বে। আণবিক ও গাঠনিক সংকেত ঠিক বুঝে নেবে।
রসায়নে বহুনির্বাচনি অংশে নম্বর ২৫, সৃজনশীল বা রচনামূলক অংশে ৫০ এবং ব্যবহারিক অংশে নম্বর ২৫।
অধ্যায় ৫—
পঞ্চম অধ্যায়ে বিভিন্ন ধরনের সংকেত যেমন আণবিক ও গাঠনিক সংকেত লেখার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পরমাণু বা যৌগ মূলকের যোজনি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। রসায়নে গাণিতিক সমস্যার সমাধান ঠিকমতো করবে। একক ঠিকমতো লিখবে। ভুল করলে কিন্তু নম্বর কাটা যাবে। রাসায়নিক বন্ধন অধ্যায়ে রাসায়নিক সংকেত সঠিক হতে হবে। বহুনির্বাচনিতে বেশি মনোযোগ দেবে।
অধ্যায় ৬—
ষষ্ঠ অধ্যায়ে অঙ্ক বেশি থাকে, তা ভালো করে অনুশীলন করবে। লিমিটিং বিক্রিয়া, মোলার ঘনমাত্রা, অণুর সংখ্যা ইত্যাদি বের করতে গেলে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিক্রিয়ার সমতা যথাযথভাবে করতে হবে।
অধ্যায় ৭—
রাসায়নিক বিক্রিয়া অধ্যায় থেকে বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল দুই ধরনের প্রশ্ন পরীক্ষায় আসা কিন্তু স্বাভাবিক। জারণ-বিজারণ, রাসায়নিক পরিবর্তনের হার, এক ও উভয়মুখী বিক্রিয়ার বিষয়টি বুঝে পড়বে। লা-শাতেলিয়ার নীতি সম্পর্কে পড়বে, এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যায় ৮—
অষ্টম অধ্যায়ে অনেক ব্যবহারিক বিষয় রয়েছে। ড্রাই সেল, ড্যানিয়েল সেল, অ্যানায়ন ও ক্যাটায়ন, ইলেকট্রোপ্লেটিং বিষয় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সব ধরনের শক্তির একক জুল। প্রতিবছর জ্বালানি পুড়িয়ে ২১.৩ বিলিয়ন টন কার্বন ডাই–অক্সাইড তৈরি করা হচ্ছে পৃথিবীতে।
অধ্যায় ৯—
অ্যাসিড, ক্ষার ও লবণের বৈশিষ্ট্যের কথা মনে রাখবে। পানির খরতা, আর্সেনিকযুক্ত পানি, ক্ষার ও ক্ষারক নিয়ে গুলিয়ে ফেলবে না। এ অধ্যায় থেকে বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল দুই ধরনের প্রশ্ন পরীক্ষায় আসবে।
অধ্যায় ১০—
দশম অধ্যায়ে খনিজ, আকরিক, শিলা, সংকর ধাতু সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। ইলেকট্রোপ্লেটিং ও গালভানাইজিং, সালফার ইত্যাদি সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে।
অধ্যায় ১১—
একাদশ অধ্যায়ে সমীকরণ, কার্যকরীমূলক, পলিমারের ব্যবহার বেশি থাকে; তা মনোযোগসহ পড়বে। ফরমালিন, ভিনেগার, প্রাকৃতিক গ্যাসের সংযুক্তি ও ব্যবহার সম্পর্কে বিশেষ ধারণা রাখতে হবে। পলিমার, পিভিসি, পলিপ্রোপিলিন, পলিথিনের ব্যবহার অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যায় ১২—
দ্বাদশ অধ্যায়ে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহারের নানা কিছু যেমন খাওয়ার লবণ, ভিনেগার, বেকিং পাউডার, সাবান, শ্যাম্পু, ডিটারজেন্ট, ব্লিচিং পাউডারের প্রস্তুতি, ধর্ম ও ব্যবহার জানা জরুরি। খনিজ সম্পদ অধ্যায়ে প্রাকৃতিক গ্যাস, পলিমার, হাইড্রোকার্বন, অ্যালডিহাইড ও অ্যালকোহলের ধর্ম ভালো করে পড়বে।
লেখক: এ এস এম আসাদুজ্জামান, সিনিয়র শিক্ষক, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা