এসএসসি পরীক্ষা-২০২৫, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ে বেশি নম্বর পাওয়ার টিপস
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের (বিজ্ঞান বিভাগের) জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সারা বছর এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা খুব বেশি গুরুত্ব দেয় না, তারা মনে করে এটা আবার পড়ার বিষয় নাকি! এ কারণে এই বিষয়ে তারা নম্বর কম পায়। তাই এ বিষয়ে সিরিয়াস হতে হবে।
সিলেবাস বড়
এ বিষয়ে মোট ১৬টি অধ্যায় রয়েছে। মনে রাখতে হবে, বিষয়টিতে ভূগোল, পৌরনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস মিলিয়ে রাখা হয়েছে। তাই সিলেবাস বড়, অনেক তথ্য-উপাত্ত রয়েছে এখানে। এ জন্য অনেক সতর্ক থাকতে হবে বিজ্ঞানের প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে। প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর পুরো প্রশ্নটি মনোযোগ দিয়ে পড়বে। প্রশ্নে কী চেয়েছে, তা বুঝে নিয়ে উত্তর লিখবে। কোনো প্রশ্ন আংশিক পরিবর্তন করে দেওয়া হলো কি না, তা খেয়াল রাখবে।
বহুনির্বাচনি অংশ
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে বহুনির্বাচনি অংশ খুব গুরুত্বপূর্ণ। সারা বইয়ের অনেক অধ্যায় মনোযোগ দিয়ে পড়বে। এ বইয়ে অনেক তথ্য–উপাত্ত ও নামের ব্যবহার রয়েছে, যা বেশি দরকারি। এ অংশে বেশি নম্বর পাওয়া সম্ভব। তবেই তুমি পরীক্ষায় এ+ পেতে পারো।
সৃজনশীল অংশ
বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে সৃজনশীল অংশে ভালো করা জরুরি। সৃজনশীল উত্তরের ধাপগুলো মেনে উত্তর লিখবে। স্বাধীন বাংলাদেশ; সৌরজগৎ ও ভূমণ্ডল; বাংলাদেশ ভূপ্রকৃতি ও জলবায়ু; রাষ্ট্র, নাগরিকতা ও আইন; বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন; জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ; এসডিজি; জাতীয় সম্পদ ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা; বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও ব্যাংক ব্যবস্থা; বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তন অধ্যায় থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন হতে পারে।
সময় ভাগ করে নাও
সৃজনশীল প্রশ্নের মান অর্থাৎ নম্বর অনুযায়ী কতটুকু লিখতে হবে, তা নির্ধারণ করেই লেখা শুরু করতে হবে। বেশি নম্বরের প্রশ্নগুলো যতটুকু সম্ভব ভালো করে দেওয়া উচিত, তবে তা হতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। সাতটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখতে অনেক সময় লাগবে, এটা মাথায় রেখেই তোমাকে সময় ভাগ করে নিতে হবে।
লেখা অযথা বড় করবে না
সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর বড় লিখলে বেশি নম্বর পাওয়া যায়, এটি একটি ভুল ধারণা। অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক উত্তর লিখবে না। প্রাসঙ্গিক ও যথাযথ ছোট উত্তরেই বেশি নম্বর পাওয়া যায়। অপ্রাসঙ্গিক উত্তর লিখে খাতা ভরলে সময় নষ্ট হবে, বেশি নম্বর পাওয়া যাবে না। এতে পরীক্ষকেরাও বিরক্ত হন।
লেখা শেষে রিভিশন
উত্তর লেখা শেষে তোমাকে রিভিশনের জন্য শেষ ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় হাতে রাখতে হবে। কোথাও কোনো ভুল আছে কি না কিংবা কোনো প্রশ্ন বাদ পড়ল কি না, মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে। ভুল ও অপ্রাসঙ্গিক কিছু থাকলে তা কেটে দেবে।
যা মনে রাখবে
১. ভাষা আন্দোলন হলো বাঙালিদের জাতীয় মুক্তির প্রথম আন্দোলন।
২. ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ এই স্লোগান নূর হোসেনের বুকে লেখা ছিল।
৩. পৃথিবীর বৃত্তের মোট পরিধি হলো ৩৬০ ডিগ্রি।
৪. জোয়ার-ভাটা প্রতি ৬ ঘণ্টা ১৩ মিনিট পরপর হয়।
৫. ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
৬. কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তিস্থল লুসাই পাহাড়।
৭. বাংলাদেশে নদীপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ হাজার ৮৩৩ কিলোমিটার।
৮. রাষ্ট্রের প্রাথমিক উপাদান হলো জনসমষ্টি।
৯. সরকারের বিভাগ রয়েছে ৩টি।
১০. বাংলাদেশের আইনসভার নাম জাতীয় সংসদ।
১১. বাংলাদেশের প্রশাসনের স্তর রয়েছে দুটি।
১২. ইউনিয়ন পরিষদ হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন স্থানীয় প্রতিষ্ঠান।
১৩. গণতন্ত্রের একটি মৌলিক বিষয় হলো নির্বাচন।
১৪. বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের ১৩৬তম সদস্যপদ লাভ করে।
১৫. বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন করবে।
১৬. উৎপাদনের উপকরণ তিনটি, যথা: ভূমি, শ্রম ও মূলধন।
১৭. প্রাকৃতিক দুর্যোগ কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নে বড় বাধা।
১৮. মূল্যবোধ সমাজবদ্ধ জীবনের বৈশিষ্ট্য।
১৯. সামাজিকীকরণ একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া।
২০. প্রযুক্তি হলো বিজ্ঞানের প্রায়োগিক দিক।
লেখক: মিজানুর রহমান, সিনিয়র শিক্ষক, ধানমন্ডি সরকারি উচ্চবালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা