চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদনের রেকর্ড, সবচেয়ে ‘এ’ ইউনিটে ১,০১,৬৬৩ প্রার্থী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষার আবেদন আড়াই লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মোট ২ লাখ ৫৪ হাজার ৬৫৯ শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। আগের শিক্ষাবর্ষের তুলনায় সর্বোচ্চ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক রাশেদ মোস্তফা।

৪ জানুয়ারি ভর্তির আবেদন শুরু হয়ে শেষ হয়েছে ১৮ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত আবেদন ফি জমা দিয়েছেন ২ লাখ ৪০ হাজার ৮০৫ শিক্ষার্থী। ২০ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদন ফি জমা দিতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। তখন মোট কত শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন, সে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এ ছাড়া ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩০০ টাকা সার্ভিস চার্জ প্রদান করে আবেদনপত্র সংশোধনের সুযোগ রয়েছে।

মোট আসন

বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আসন রয়েছে ৪ হাজার ৯২৬টি। এর মধ্যে সাধারণ আসন ৪ হাজার ১৮৯টি। আর বাকি ৭৩৭টি আসন বিভিন্ন কোটায় বরাদ্দ থাকে। আবেদনের হিসাবে এক আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন প্রায় ৫২ জন (৫১ দশমিক ৭০)।

আবেদন বেশি কোন ইউনিটে

এবার সর্বোচ্চ আবেদন পড়েছে ‘এ’ ইউনিটে (বিজ্ঞান) ১ লাখ ১ হাজার ৬৬৩। ‘বি’ ইউনিট ও ‘বি-১’ উপ-ইউনিটে (কলা ও মানববিদ্যা) যথাক্রমে ৬৮ হাজার ৩৯৬ ও ২ হাজার ৭৬৩ জন আবেদন করেছেন। ‘সি’ ইউনিটে (ব্যবসায়) ১৮ হাজার ৭৯৫ জন এবং ‘ডি’ ইউনিটে (সামাজিক বিজ্ঞান) ৫৯ হাজার ৯০৬ জন ও ‘ডি-১’ উপ-ইউনিটে (সামাজিক বিজ্ঞান) ৩ হাজার ১৪৬ জন ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন।

প্রথমবারের মতো এবার চট্টগ্রামের বাইরে একাধিক কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

পরীক্ষা কবে শুরু

‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২ মার্চ। ৭ মার্চ ‘সি’ ইউনিট, ৮ মার্চ ‘বি’ ইউনিট ও ১৬ মার্চ ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে ‘বি-১’ ও ‘ডি-১’ উপ–ইউনিটের পরীক্ষা যথাক্রমে ৩ ও ৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে।

পরীক্ষায় কত নম্বর

প্রতি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা মোট ১২০ নম্বরের। এর মধ্যে বহুনির্বাচনী পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা আর বাকি ২০ নম্বর এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ থেকে যুক্ত হবে। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা যাবে। ‘ডি-১’ উপ–ইউনিট বাদে সব ইউনিটেই পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর হবে ৪০। এবারও দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে শর্ত সাপেক্ষে সুযোগ রাখা হয়েছে। দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণকারীদের মোট নম্বর থেকে ৫ নম্বর কাটা হবে।

‘এ’ ইউনিট: এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বাংলায় ১০, ইংরেজিতে ১৫, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত ও জীববিদ্যা প্রতিটিই ২৫ নম্বর করে (শিক্ষার্থীদের যেকোনো তিনটি বিষয়ে উত্তর দিতে হবে) থাকবে। পরীক্ষায় বাংলায় ন্যূনতম ৩, ইংরেজিতে ৪ নম্বর পেতে হবে।

‘বি’ ইউনিট: এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা বা ঐচ্ছিক ইংরেজিতে ৩৫, ইংরেজিতে ৩৫, সাধারণ জ্ঞানে ৩০ নম্বর থাকবে। পাস করতে হলে আলাদাভাবে বাংলায় ন্যূনতম ৭, ইংরেজিতে ৬ ও সাধারণ জ্ঞানে ১৩ নম্বর পেতে হবে।

‘বি-১’ উপ–ইউনিট: কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ অধিভুক্ত চারুকলা ইনস্টিটিউট, নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগ ‘বি-১’ উপ–ইউনিটের অধীন।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা বা ঐচ্ছিক ইংরেজিতে ৩৫, ইংরেজিতে ৩৫, সাধারণ জ্ঞানে ৩০ নম্বর থাকবে। এ ছাড়া আলাদাভাবে বাংলায় ন্যূনতম ৬, ইংরেজিতে ৫ আর সাধারণ জ্ঞানে ১৭ নম্বর পেতে হবে।

‘সি’ ইউনিট: ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত সব বিভাগ নিয়ে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই ইউনিটে ইংরেজিতে ৪০, বিশ্লেষণ দক্ষতায় ৩০ ও সমস্যা সমাধান অংশে ৩০ নম্বর থাকবে।

‘ডি’ ইউনিট: সমাজবিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত সব বিভাগ, আইন অনুষদের আইন বিভাগ, শিক্ষা অনুষদের ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগ, জীববিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ভূগোল, পরিবেশবিদ্যা ও মনোবিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পরীক্ষা হবে ‘ডি’ ইউনিটের। এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা বা ঐচ্ছিক ইংরেজিতে ৩০, ইংরেজিতে ৩০, বিশ্লেষণ দক্ষতায় ২০, সাধারণ জ্ঞান, গণিত বা অর্থনীতিতে ২০ নম্বর থাকবে। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা যাবে। পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর হবে ৪০।

‘ডি-১’ উপ–ইউনিট: ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের জন্য পরীক্ষা হবে ‘ডি-১’ উপ–ইউনিটে। এই ইউনিটে মোট ১২০ নম্বরের মধ্যে বহুনির্বাচনী পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বাকি ২০ নম্বর এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএ থেকে যুক্ত হবে। এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা বা ঐচ্ছিক ইংরেজিতে ৩৫, ইংরেজিতে ৩০, সাধারণ জ্ঞানে ৩৫ নম্বর থাকবে। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা যাবে। পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর হবে ৩৫। তবে জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড়দের ন্যূনতম পাস নম্বর হবে ২৫।

আরও পড়ুন