শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এ বছরের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী হয়েছে চারজন। তারা হলো কারিগরি পর্যায়ে রংপুরের আইডিয়াল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির ছাত্র মো. রাগীব ইয়াসির রোহান, কলেজ পর্যায়ে রাজশাহী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মোসা. আফরা মেহজাবীন, বিদ্যালয় পর্যায়ে টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী সাবাহ বিনতে বায়েজিদ ও মাদ্রাসা পর্যায়ে গোপালগঞ্জ ছালেহিয়া কামিল মাদ্রাসার ছাত্র মো. রহমাতুল্লাহ। ১৯ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠান করে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের মধ্যে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছে রাগীব ইয়াসির। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিবেদক মোশতাক আহমেদ।
তুমি এখন কোথায় আছ?
রাগীব ইয়াসির: ছুটিতে গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারীতে।
দ্বিতীয়বারের মতো কারিগরিতে শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী হয়েছ। পরপর দুবার শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী হওয়ার অনুভূতি জানতে চাই।
রাগীব ইয়াসির: দেশসেরা হতে পেরে খুব ভালো লাগছে। এটি আমার বড় পাওয়া। আর দেশসেরা হওয়া সহজও না। উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ হয়ে তারপর জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ হতে হয়েছে।
গতবারও সেরা হয়েছ, এবারও সেরা হয়েছ, কীভাবে সম্ভব হলো?
রাগীব ইয়াসির: প্রতিযোগিতায় নির্ধারিত বিষয়বস্তুর ওপর নম্বরের ভিত্তিতে বাছাই করা হয়। সেগুলোয় আমার অবস্থান ভালো ছিল।
কী কী বিষয়ের ওপর এটি করা হয়েছে, যদি কয়েকটি বলতে?
রাগীব ইয়াসির: যেমন গত বছরের এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় আমি সব বিষয়েই জিপিএ-৫ পেয়েছি। ক্লাসে উপস্থিতি ছিল ৯৫ শতাংশের ওপরে। আমি স্কাউটিংয়ে দুটি সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। আরেকটি অ্যাওয়ার্ডের জন্যও মনোনীত হয়েছি। এ ছাড়া সংগীত, চিত্রাঙ্কন দক্ষতা দেখা হয়েছে। সামাজিক কার্যক্রমেও সম্পৃক্ততা আছে। নেতৃত্বদানের দক্ষতাও দেখা হয়েছে। আমি এখনো ক্লাস ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করছি।
প্রথমবার যখন সেরা হলে, তখন কোথায় পড়তে?
রাগীব ইয়াসির: তখন আমি দশম শ্রেণিতে পড়তাম, লালমনিরহাটের আদিতমারীতে। আর এখন পড়ি রংপুরের আইডিয়াল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে। চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্সে। রংপুরে বাসা ভাড়া (মেস) করে থাকি।
সাধারণত দেখা যায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী সাধারণ শিক্ষায় পড়াশোনা করে, সেখানে তুমি কোন চিন্তা থেকে কারিগরিকে বেছে নিলে?
রাগীব ইয়াসির: আমি নবম শ্রেণি থেকে কারিগরিতে আসি। এখানে হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া হয়। আমি মনে করি, এর চাহিদা দেশের ভেতরের পাশাপাশি দেশের বাইরেও অনেক। এই চিন্তা থেকেই কারিগরিতে পড়তে আসা।
কোন বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্সে পড়ছ?
রাগীব ইয়াসির: কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। আমি একজন প্রকৌশলী হতে চাই।
প্রকৌশলী হতে চাও কেন?
রাগীব ইয়াসির: সরকার ধীরে ধীরে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করছে। আমরা জানি, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। যেখানে কম্পিউটারের ব্যবহার অপরিহার্য। এ জন্য কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিষয়ে পড়াশোনা করছি, যাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় অবদান রাখতে পারি। আমার ইচ্ছা প্রকৌশলী হওয়া, কিন্তু আমার স্বপ্ন হচ্ছে একজন আদর্শ মানুষ হয়ে দেশের সেবা করা।
সারা দিন কী করো?
রাগীব ইয়াসির: নামাজ, পড়াশোনা, রোভার স্কাউটিং, খেলাধুলা, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, বন্ধুদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ঘোরাঘুরি করি—এভাবেই সময় কেটে যায়।
অন্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কিছু বলতে চাও?
রাগীব ইয়াসির: শুধু পড়াশোনা নয়, পাশাপাশি অন্যান্য সহশিক্ষা কার্যক্রমেও অংশ নিতে হবে।
তোমাকে ধন্যবাদ।
রাগীব ইয়াসির: আপনাদেরও ধন্যবাদ।