প্রশ্ন :
সারা দেশে কলেজে পর্যায়ের সব প্রতিযোগীকে টপকে শ্রেষ্ঠ হয়েছ, কেমন লাগছে?
আফরা মেহজাবীন: সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কলেজশিক্ষার্থী হতে পারাটা আমার জন্য বড় অর্জন। খুব আনন্দ লাগছে।
প্রশ্ন :
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহের এই প্রতিযোগিতায় কী কী বিষয়ের জন্য তুমি শ্রেষ্ঠ হয়েছ?
আফরা মেহজাবীন: ভালো ফলের পাশাপাশি আরও ১০টি যোগ্যতা বিবেচনা করে এই পর্যায়ে আসতে হয়েছে। মোট ১১টি বিষয়ের ওপর ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে বাছাই করা হয়েছে।
তুমি ভালো ফলের কথা বললে, পাশাপাশি আরও ১০টি যোগ্যতার কথাও বললে। সেগুলোর বিষয়ে জানতে চাই।
আফরা মেহজাবীন: আমি গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছি। জেএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছিলাম এবং বৃত্তি পাই। এ ছাড়া সংগীত, লেখালেখি, ছবি আঁকা, গার্লস গাইড, নৈতিক দৃঢ়তা, সামাজিক কর্মকাণ্ড, খেলাধুলা ইত্যাদি বিষয়েও আমার সম্পৃক্ততা ছিল। আমি বিদ্যালয়ে থাকতে গার্লস গাইডের দলনেতা ছিলাম। এবারের প্রতিযোগিতায় একটি দেশাত্মবোধক গান গেয়েছিলাম। এ ছাড়া বাল্যবিবাহ রোধের বিষয়ে গম্ভীরার মাধ্যমে দেখাতে হয়েছে। রাজশাহী জেলা বাল্যবিবাহ নিরোধ কমিটিতে বিদ্যালয় পর্যায়ে একজন সক্রিয় সদস্য ছিলাম। এসএসসি পর্যন্ত টেনিস খেলেছি। এখন রাজশাহী কলেজে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞানে পড়ছি।
রাজশাহী কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোর মধ্যে সেরা হয়েছিল। এই কলেজের পড়াশোনা কেমন?
আফরা মেহজাবীন: কলেজে পড়াশোনা নিঃসন্দেহে ভালো হয়। স্যাররা খুব যত্ন নিয়ে ক্লাস নেন। প্রযুক্তির সহযোগিতায় ক্লাস হয়। তবে কলেজের পাশাপাশি ব্যাচে গিয়ে আমি প্রাইভেট পড়ি। কারণ, এখন প্রতিযোগিতার যুগ।
কটি বিষয়ে প্রাইভেট পড়?
আফরা মেহজাবীন: বাংলা, ইংরেজি, পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, উচ্চতর গণিত।
কলেজে ভালো পড়াশোনা হয়, তাহলে প্রাইভেট পড় কেন? প্রাইভেট না পড়লে তো মা–বাবার খরচ কমত।
আফরা মেহজাবীন: কলেজে মূল বিষয় পড়ানো হয় এবং হাতে-কলমেও শেখানো হয়। এরপরও নিজের উন্নতির জন্য নিজে থেকেই পড়ি।
ব্যাচে কি তোমার কলেজের শিক্ষকদের কাছে পড়?
আফরা মেহজাবীন: কলেজের শিক্ষকদের কাছে না, বাইরের শিক্ষকদের কাছে পড়ি।
কলেজ-প্রাইভেট, এত পড়াশোনার পর সহশিক্ষা কার্যক্রম তাহলে কখন কর?
আফরা মেহজাবীন: শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী হতে প্রাথমিক থেকে শুরু করে কলেজ পর্যন্ত কী কী কার্যক্রম করেছি, সবকিছু বিবেচনা করা হয়েছে। প্রাথমিকে পড়ার সময়ই আমি গান শিখতাম। তখন নজরুল একাডেমি থেকে পুরস্কারও পেয়েছি। যদিও এখন গান তেমন করি না। বিদ্যালয়ে গম্ভীরা, উপস্থাপনা ও আবৃত্তি করতাম। একেক সময় একেক ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্তি ছিলাম। ২০১৯ সালে বিদ্যালয় পর্যায়ে বিভাগীয় পর্যায়ে সেরা হয়েছিলাম। এখন লেখালেখি বেশি করি। এটি আমার খুব ভালো লাগে। একটি দৈনিকে নিয়মিত লেখালেখি করি। ‘সীমানা শেষে’ নামে আমার নিজের একটি গ্রন্থ (ভ্রমণকাহিনি) আছে। ২০১৯ সালে এটি প্রকাশিত। একাডেমিক বিষয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়ি, আবৃত্তি করি এবং বিতর্কের সঙ্গেও যুক্ত আছি।
তোমার ভবিষ্যৎ চিন্তা কী?
আফরা মেহজাবীন: আমি বিজ্ঞানী হতে চাই। মূলত গবেষণা করতে চাই। এর আগে দুটি গবেষণা করেছি। গবেষণার প্রতি আমার খুব আগ্রহ।
অন্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কিছু বলতে চাও?
আফরা মেহজাবীন: পড়াশোনাকে মূল লক্ষ্য হিসেবে ধরে নিয়ে সহশিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকলে এবং একটি বিষয়ে আটকে না থেকে বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করলে পরবর্তী সময়ে সুবিধা হবে বলে মনে হয়। পড়াশোনার পাশাপাশি বাইরের কার্যক্রমের সঙ্গেও যুক্ত থাকা দরকার। তাহলে জীবনটা সুন্দর করা সম্ভব।
প্রশ্ন: তোমাকে ধন্যবাদ।
আফরা মেহজাবীন: আপনাদেরও ধন্যবাদ।