আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) আশ্বাস এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আস্থা রেখে অনশন ভাঙলেন গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইউজিসি প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ ও সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান।
গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা ইউজিসির সামনে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি শেষে গত বুধবার অনশন শুরু করেছিলেন। এর আগে এই দাবিতে ‘লংমার্চ টু ইউজিসি’ কর্মসূচির আওতায় গত সোমবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে রওনা হন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। সেদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা ইউজিসির সামনে অবস্থান নেন। এরই মধ্যে গতকাল ইউজিসির পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জানানো হয়, গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ অবস্থায় এখন দুই দিন অবস্থান এবং দুইদিন অনশন কর্মসূচি শেষে আজ তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একজন ফখরুল হাসান ফয়সাল আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হবে বলে তাঁরা আশা করছিলেন। আজ সেটি সম্ভব হয়নি বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে ইউজিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরবর্তী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয় উত্থাপন করবে। এ অবস্থায় ইউজিসির আশ্বাসে ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপর আস্থা রেখে তাঁরা অনশন ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের এখনকার দাবি হলো, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে তাঁদের প্রস্তাবিত চারটি নামের মধ্য থেকে একটি চূড়ান্ত করতে হবে। তাঁদের দেওয়া চারটি নাম হলো-বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডভান্সড টেকনোলজি এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবিতে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আন্দোলন করছেন গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা।
২০১৬ সালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রতিষ্ঠিত বিশেষায়িত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নাম ছিল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ’। তবে অন্তর্বর্তী সরকার গত ফেব্রুয়ারি মাসে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি করেছে। গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামকরণের পর থেকেই ক্ষুব্ধ হন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা প্রথমে বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি নামের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। দাবি আদায়ে স্মারকলিপি, মানববন্ধন, শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা, ‘রেল ব্লকেড’ ‘শাটডাউন’সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এর মধ্যে আশ্বাসের ভিত্তিতে কখনো কখনো কর্মসূচি স্থগিত করা হলেও এখনো দাবি পূরণ হয়নি।