বাংলাদেশ-ভারত-চীনের শিক্ষার্থীদের পছন্দ কেন মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে চীনা শিক্ষার্থী সবচেয়ে বেশি পড়তে এসেছেন, সংখ্যায় ২৯ হাজার ৩৮৮।ছবি: এএফপি

মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন শুধু দেশি শিক্ষার্থীদের নয়, হাজার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীরও পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠছে। চীনা, বাংলাদেশি ও ভারতীয় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে, কারণ, এখানে তাঁরা সাশ্রয়ী খরচে মানসম্মত শিক্ষা অর্জন করতে পারছেন। শুধু শিক্ষার সুযোগই নয়, মালয়েশিয়া তাঁদের জন্য হয়ে উঠেছে একটি সমৃদ্ধ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতার ক্ষেত্র, যা দেশটির অর্থনীতিতেও বড় ধরনের অবদান রাখছে।

আরও পড়ুন

রেকর্ড চীনা শিক্ষার্থী

এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিস (ইএমজিএস)-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে চীনা শিক্ষার্থী সবচেয়ে বেশি পড়তে এসেছেন, সংখ্যায় ২৯ হাজার ৩৮৮। এরপরের বাংলাদেশের ৮ হাজার ৯৫৭ শিক্ষার্থী ও ভারতের ৩ হাজার ৪১০ শিক্ষার্থী। ইএমজিএসের প্রধান নভি তাজউদ্দিন জানান, তবে চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা সামান্য কমেছে। গত বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ কম শিক্ষার্থী এসেছেন। কারণ, মালয়েশিয়ার কিছু শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় তাঁদের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী কোটা পূর্ণ করে ফেলেছে। তিনি জানান, ‘ফলে নতুন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না, যতক্ষণ না বর্তমান শিক্ষার্থীরা স্নাতক করে গ্র্যাজুয়েট হয়ে যান। এই নিয়ন্ত্রণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা, মান নিয়ন্ত্রণ এবং উপযুক্ত সম্পদ বণ্টনের জন্য নেওয়া হয়েছে।’

চীনা শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সাম্প্রতিক বছরে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২০ সালে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা শিক্ষার্থীর আবেদন ছিল ৮ হাজার ৮৭৬টি, যা ২০২১ সালে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ১৯ হাজার ২০২-এ পৌঁছায় আর ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ হাজার ৬২৭-এ।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ ও ভারতে আগ্রহ বৃদ্ধি

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৮ হাজার ৯৫৭-এ পৌঁছেছে, যেখানে আগের বছর ছিল ৬ হাজার ১০৩। ভারতীয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪১ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৪১০-এ পৌঁছেছে। এ বছর মোট ৮৭ হাজার ২০৬ শিক্ষার্থী এসেছেন, যা আগের বছরের ৮১ হাজার ৯৯২-এর তুলনায় ৬ শতাংশ বৃদ্ধি বা বেশি।

ইএমজিএসের তালিকা

সাশ্রয়ী শিক্ষা

এখন প্রশ্ন হতে পারে মালয়েশিয়ায় বিদেশি শিক্ষার্থী, বিশেষ করে ভারত, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের গন্তব্য কেন হয়ে উঠছে। এ চাহিদার পেছনে রয়েছে বিভিন্ন কারণ। সবচেয়ে বড় কারণ হলো খরচ। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর চেয়ে মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার খরচের তুলনায় সাশ্রয়ী। মানেও পিছিয়ে নেই। নভি তাজউদ্দিন বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় স্বীকৃত কিছু বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা রয়েছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা স্থানীয়ভাবে অধ্যয়ন করে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, জাপান ও চীনের স্বীকৃত ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন কম খরচে। বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী মালয়েশিয়ায় অধ্যয়ন করছেন। এর ফলে মাসিক মোট অর্থনৈতিক অবদান প্রায় ১ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন রিংগিত আর বার্ষিক প্রভাব ১৭ দশমিক ২৮ বিলিয়ন রিংগিত।’ তথ্যসূত্র: মালয় মেইল ডটকম

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন