ভারতেও ইউরোপের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে দুবার শিক্ষার্থী ভর্তি
বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো এবার ভারতীয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বছরে দুবার শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হবে। আজ মঙ্গলবার দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসির চেয়ারম্যান জগদীশ কুমার এ কথা জানিয়েছেন। ২০২৪-২৫ ভর্তির বর্ষ থেকেই নতুন এই ব্যবস্থা চালু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অনেকেই বলেছেন, এর ফলে ভারতের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীদের বছর নষ্ট বা ‘ইয়ার লস’ শব্দটি আর থাকবে না।
এনডিটিভি ও গাফলের খবরে বলা হয়েছে, সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জগদীশ জানিয়েছেন, বছরে দুবার ভর্তি-প্রক্রিয়া থাকলে শিক্ষার্থীরা নানা দিক থেকে উপকৃত হবেন। অনেক ছাত্রছাত্রী জুলাই-আগস্ট ভর্তি বর্ষে সমস্যায় পড়েন। কারও বোর্ড পরীক্ষার ফল বের হতে দেরি হয়, অনেকের অসুস্থতা থাকে, ব্যক্তিগত নানা কারণেও তাঁরা হয়তো ভর্তি হতে পারেন না। এতে সাধারণত বছরটাই নষ্ট হয়। কিন্তু ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি বছরে দুইবার ভর্তির সুযোগ থাকে, তাহলে তাঁদের আর বছর নষ্ট হবে না। তাঁদের প্রস্তুতিও জারি থাকবে, উল্টো দিকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোও বছরে দুইবার ক্যাম্পাসিং করতে পারবে, এতে কর্মসংস্থান বাড়বে।
নতুন এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আসছে শিক্ষাবর্ষ ২০২৪-২৫ থেকে বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি অথবা জুলাই-আগস্টে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবেন।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নামী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বছরে দুবার শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়। জার্মানি, ব্রিটেন, ফ্রান্স, স্পেন, সুইডেন, নেদারল্যান্ডসের একাধিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘সামার’ ও ‘উইন্টার’-এ শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়। ভারতের ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘ভারতীয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুইবার ভর্তির প্রক্রিয়া চালু হলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা, শিক্ষার্থী বিনিময় বা গবেষণার সুযোগ বাড়বে। আমরাও বিশ্বের উচ্চমানের শিক্ষাব্যবস্থার অংশ হতে পারব।’
এদিকে ভারতের অনেক শিক্ষাবিদ প্রশ্ন তুলেছেন যে বছরে দুবার শিক্ষার্থী ভর্তি করলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী অতিরিক্ত কাজের চাপের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন? অনেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। অস্থায়ী শিক্ষক, পার্শ্বশিক্ষক দিয়ে কাজ চালে এসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী অধ্যাপকের অভাবে শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এ অবস্থায় দুইবার শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রমে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিশেহারা অবস্থা হবে।
তবে ইউজিসি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, তাঁরা এ ব্যবস্থা সবার জন্য বাধ্যতামূলক করছেন না। ইউজিসি এই ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা চাপিয়ে দিতে চায় না। যেসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের ছাত্র নেওয়ার ক্ষমতা বাড়াতে চায়, তারা এটা করতে পারে। যারা মনে করবে পারবে না, তারা কাঠামোর দিকে নজর দেবে।