কানাডায় পড়ার প্রস্তুতি, বিমানবন্দরে ভিসা অফিসার যে যে প্রশ্ন করবেন: শেষ পর্ব

ছবি: সংগৃহীত

কানাডায় ফল সেশনে পড়তে আসার প্রস্তুতির ধারাবাহিকতায় আজ ছাপা হচ্ছে কানাডার বিমানবন্দরে ভিসা অফিসার আপনাকে যে প্রশ্ন করবেন, তার বিস্তারিত বিবরণ। তাঁরা কানাডায় বর্ডার সার্ভিস অফিসার নামে পরিচিত। তাঁরা কালো পোশাক পরে থাকেন সাধারণত।

কানাডায় ভিসা ইস্যু করার সময় কোনো ইন্টারভিউ হয় না। আপনার ডকুমেন্টস দেখে এবং তা যাচাই-বাছাই করে স্টুডেন্ট ভিসা দেওয়া হয়। তবে প্লেন থেকে কানাডায় প্রথম নামার পর ভিসা অফিসার আপনাকে কয়েকটি প্রশ্ন করবেন। মূলত সবাইকে একই ধরনের প্রশ্ন তাঁরা করেন। সাধারণত কী ধরনের প্রশ্ন করতে পারেন আর তাঁর উত্তর কী হবে, আসুন একটু জেনে নিই।

প্রশ্ন:

ভিসা অফিসার আপনার কাগজপত্র দেখার আগে আপনাকে সম্ভাষণ (গুড মর্নিং, গুড আফটার নুন, গুড ইভনিং ধরনের) জানিয়ে জানতে চাইবেন, ‘তুমি কী কারণে কানাডায় এসেছ?’

আপনি যে কানাডায় পড়াশোনা করতে এসেছেন, সে কথা জানাবেন।

আরও পড়ুন
ফাইল ছবি
প্রশ্ন:

তুমি কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়তে এসেছ?

আপনি যে ইউনিভার্সিটি বা কলেজে পড়তে আসছেন, সেটির নাম বলবেন। ভিসা অফিসারের সব ইউনিভার্সিটি বা কলেজের নাম মনে না–ও থাকতে পারে, তাই সেটি কোন প্রভিন্স ও কোন শহরে তা বলতে পারেন।

ফাইল ছবি
আরও পড়ুন
প্রশ্ন:

তুমি কানাডায় থাকার সময় তোমাকে অর্থনৈতিক সাপোর্ট কে দেবে?

আপনি ভিসার আবেদনের সময় যে আবেদন করেছিলেন, সে সময় একটি স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি) লিখে ছিলেন। সেখানে আপনি উল্লেখ করেছিলেন কে আপনার কানাডায় পড়ার খরচ ও আনুষঙ্গিক জোগাবেন। যা লিখেছিলেন ঠিক তা–ই বলবেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে মা–বাবার কথা উল্লেখ থাকে এসওপিতে। অর্থাৎ বলবেন,‘ আমার মা–বাবার কানাডায় খরচ ও আনুষঙ্গিক বহন করবে।’

আরও পড়ুন
প্রশ্ন:

তুমি কানাডায় কত ডলার সঙ্গে নিয়ে এসেছ?

আপনি যত ডলার ক্যাশ নিয়ে এসেছেন, তা বলবেন।

আরও পড়ুন
প্রশ্ন:

তুমি কানাডায় কত দিন থাকবে?

আপনার কোর্সটি যত দিনের, আপনি তাঁকে ঠিক তত দিনের কথা বলবেন। যদি ৪ বছরের কোর্স হয়, তাহলে বলবেন, আপনি চার বছর কোর্স শেষ করে আবার নিজের দেশে চলে যাবেন।

প্রশ্ন:

তুমি কোথায় থাকবে?

আপনি আসার আগে ঠিক করে এসেছেন আপনি কোথায় থাকবেন। যদি কোনো বাসা ঠিক করে থাকেন, তাহলে সেই বাসার ঠিকানা বলবেন, যদি কোনো পরিচিত কারও বাসায় থাকেন, তবে তাঁর নাম ও ঠিকানা বলবেন। যদি হোটেলে থাকেন, তাহলে তার ঠিকানা বলবেন। যদি ক্যাম্পাসে, অর্থাৎ ডর্মে ( হোস্টেল) থাকবেন, তাহলে সেই ঠিকানা বলবেন।

আরও পড়ুন
প্রশ্ন:

তুমি কি আসার আগে তোমার টিউশন ফি দিয়ে এসেছ?

প্রায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটিতে টিউশন ফি দিয়ে দিয়ে আসতে হয়। তাই বলবেন, ‘হ্যাঁ, আমি আমার টিউশন ফি দিয়ে এসেছি।’

বিদায় সম্ভাষণ: অফিসার আপনাকে বিদায় সম্ভাষণ (গুড মর্নিং, গুড আফটার নুন, গুড ইভনিং ধরনের) জানিয়ে আপনার কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার আগে আপনার কাছে জানতে চাইবেন, ‘তোমার কোনো প্রশ্ন আছে কি না।’ আপনার যদি কোনো প্রশ্ন না থাকে, তবে তাঁকেও ‘তোমাকেও ধন্যবাদ’ বলে চলে আসবেন।

সব প্রশ্ন ইংলিশে হবে, ভয়ের কিছু নেই। ইংলিশে টুকটাক ভুল হলে কোনো সমস্যা নেই।
যেকোনো শিক্ষার্থীর কাছে কাগজপত্র দেখতে চাইতে পারেন অফিসার। এ ব্যাপারে আমরা চতুর্থ পর্বে লিখেছি—‘যে যে কাগজপত্র সাথে আনবেন।’ মূলত সেগুলোই দেখতে চাইতে পারেন। চাওয়ামাত্র তা দেখবেন।

ভিসা অফিসারের সঙ্গে অতিরিক্ত কোনো কথা না বলাই ভালো। বিশেষ করে কোনো ব্যক্তিগত কথা। কোনো কথা মিথ্যা বলা যাবে না। স্মার্টলি কথা বলবেন। কখনোই ওভার স্মার্ট হবেন না। মনে রাখবেন, ২০-২৫ ঘণ্টা ক্লান্তিকর ভ্রমণের পর তাঁর মুখোমুখি হচ্ছেন। তাই একটু সাবধান থাকবেন। সবকিছু সহজভাবে নেবেন। ভিসা অফিসাররাও আমাদের মতো রক্তে–মাংসে গড়া মানুষ, তাই ভয়ের কিছু নেই।

ফল সেশনে আপনার কানাডায় আগমন শুভ হোক। আপনার নতুন যাত্রা হোক আনন্দময়।

আরও পড়ুন