ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপে ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা, একটির আবেদন শেষ ১৫ ফেব্রুয়ারি

ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপে আবেদনপ্রক্রিয়া চলছেছবি: সংগৃহীত

ইউরোপের মর্যাদাপূর্ণ উচ্চতর স্টাডি প্রোগ্রাম হলো ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপ। ইউরোপের নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সমন্বিতভাবে এ বৃত্তি দেওয়া হয়। বিভিন্ন দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ইউরোপের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার তহবিল জোগাতে ইউরোপীয় কমিশন এ বৃত্তি দেয়। গত বছর ১৪৩ দেশের ২ হাজার ৮৩৫ শিক্ষার্থী এ বৃত্তি পেয়েছেন। বৃত্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের একটি তালিকা এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে ঢাকার ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাস। টুইটে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বেশি বৃত্তি পাওয়া ২০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ তৃতীয় স্থানে। গত বছর বাংলাদেশ থেকে ১৪০ শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছেন।

গত বছর সবচেয়ে বেশি ১৯২টি বৃত্তি পেয়েছেন পাকিস্তানের শিক্ষার্থীরা। বৃত্তির সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারত। দেশটির শিক্ষার্থীরা ১৭৪টি বৃত্তি পেয়েছেন। তৃতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ। আমাদের দেশের ১৪০ শিক্ষার্থী এ বৃত্তি পেয়েছেন। এরপরই মেক্সিকো ১১৮টি, নাইজেরিয়া ১০৯, ব্রাজিল ৯৬, স্পেন ৭৩, কলম্বিয়া ও ফিলিপাইন ৭২টি করে, মিসর ৭০, ইতালি ৬৯, ইন্দোনেশিয়া ৬৮, চীন ৬৫, যুক্তরাষ্ট্র ৬০, জার্মানি ও ইথিওপিয়া ৫৩টি করে, তুরস্ক ৫২ ও কাজাখস্তান ৫১টি বৃত্তি পেয়েছে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মাস্টার্স ও জয়েন্ট মাস্টার্সে পড়াশোনার সুযোগের জন্য সুযোগ আছে ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপে। এই স্কলারশিপে তিন শর বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৮৫টি প্রোগ্রামে প্রতিবছর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পান শিক্ষার্থীরা। ২০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী ও ১ হাজার ৫০০ জনের মতো পিএইচডি শিক্ষার্থী প্রতিবছর এ বৃত্তিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পান। বিশ্বের বিভিন্ন বৃত্তির মধ্যে ইরাসমাস মুন্ডাস অনেক জনপ্রিয় একটি স্কলারশিপ।

ইরাসমাস মুন্ডাস কেন অনন্য

নতুন নতুন দেশ ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয়, উচ্চতর নতুন নতুন গবেষণা এবং বিভিন্ন ভাষাভাষী দেশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার অন্যতম সুযোগ মেলে এ বৃত্তি পেলে। মাসিক অর্থায়নে শিক্ষার্থীর ভ্রমণ, স্বাস্থ্যবিমা ও গবেষণা–সম্পর্কিত খরচ বহন এ স্কলারশিপের অন্যতম আকর্ষণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি থেকে শুরু করে সব ধরনের টিউশন ফি, লাইব্রেরি ফি, পরীক্ষা ফি, গবেষণা–সংক্রান্ত ফিসহ বিভিন্ন ধরনের কনফারেন্স, সেমিনারসহ সব কিছুরই সুবিধা পাওয়া যায় বিনা মূল্যে।

এ বৃত্তিতে জয়েন্ট মাস্টার্স প্রোগ্রামে চারটি সেমিস্টারে ভিন্ন দেশে ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ আছে। প্রতিটি দেশ থেকেই আলাদা মাস্টার্স ডিগ্রির সার্টিফিকেট দেওয়া হয় এই স্কলারশিপের মাধ্যমে। এ ছাড়া ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট মোবিলিটি (আইসিএম) অ্যাকশন’ ও ‘ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ফর হাইয়ার এডুকেশন (সিবিএইচই) অ্যাকশন’-এ আবেদন করতে পারবেন আগ্রহীরা।

আরও পড়ুন
২০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী ও ১ হাজার ৫০০ জনের মতো পিএইচডি শিক্ষার্থী প্রতিবছর এ বৃত্তিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পান
ছবি: ইরাসমাস মুন্ডাসের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

ইরাসমাস মুন্ডাসে যে যে সুযোগ মেলে

*শতভাগ টিউশন ফি ওয়েভার
*২ বছর প্রতি মাসে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ ইউরো উপবৃত্তি
*যাতায়াত ভাতা মিলবে
*সেমিস্টার শেষে এক দেশ থেকে অন্যত্র যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক বিমানের টিকিট

আবেদনের যোগ্যতা

*স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামের জন্য আবেদনে অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রি (প্রথম ডিগ্রি) অর্জন করতে হবে বা স্নাতক ডিগ্রির শেষ বছরে থাকতে হবে;
*মাস্টার্স প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার আগেই গ্র্যাজুয়েট হতে হবে;
*স্নাতক ডিগ্রি না পেলেও স্নাতক সমতুল্য ডিগ্রির সার্টিফিকেটেও আবেদন করা যাবে। তবে প্রোগ্রামটি দেশের আইন কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে;
*আইইএলটিএস স্কোর। আইইএলটিএসে ৬.৫ ব্যান্ড স্কোর হতে হবে;
*আইইএলটিএস না থাকলে বিকল্প হিসেবে ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট বা ডুয়োলিংগো পরীক্ষার ফল থাকতে হবে;
*পছন্দের প্রোগ্রামে গবেষণাভিত্তিক কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে আবেদনে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া যায়। তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়;
*অনার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল না পেলেও আবেদন করা যাবে;
*জিআরই টেস্ট স্কোর জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই ও
*১৬ বছর বয়সের পর থেকে আবেদনের জন্য গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন এবং এরপরে বয়সের বিধিনিষেধ নেই।

আরও পড়ুন

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট—

*দুটি রেকমেন্ডেশন লেটার;
*লেটার অব মোটিভেশন;
*অফিশিয়াল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট (উচ্চমাধ্যমিক ও ব্যাচেলর ডিগ্রি বা সমতুল্য);
*পূরণ করা আবেদনপত্র;
*সিভি;
*পাসপোর্ট বা আইডির স্ক্যান কপি;
*প্রুফ অব রেসিডেন্সে কপি ও
*ইংরেজি দক্ষতা নির্ধারক পরীক্ষার স্কোরসহ ইত্যাদি।

প্রথম আলো ফাইল ছবি

আবেদনপ্রক্রিয়া—

ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপে আবেদন করার জন্য প্রথমে অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে ইরাসমাস মুন্ডাস ক্যাটালগে যেতে হবে। সেখানে প্রতিটি প্রোগ্রামের নাম ও লোকেশন পাওয়া যাবে। তারপর কোর্স, আবেদনপ্রক্রিয়া ও স্কলারশিপ সম্পর্কে আরও তথ্য জানার থাকলে সরাসরি কন্ট্যাক্ট প্রজেক্ট পারসন বাটন প্রেস করে যোগাযোগ করা যাবে।

আবেদনের সময়

ইরাসমাস মুন্ডাস স্কলারশিপের তিনটিতে আবেদনের সময় তিন রকম। ১. ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট মোবিলিটি (আইসিএম) অ্যাকশন’-এ আবেদনের শেষ সময় আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি, ২. ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ফর হাইয়ার এডুকেশন (সিবিএইচই) অ্যাকশন-এ আবেদনের শেষ হয়েছে। সময় ছিল ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ৩. ইরাসমাস মুন্ডাস জয়েন্ট মাস্টার্স (ইএমজেএম) অ্যাকশন-এ আবেদনের শেষ সময় ১৫ ফেব্রুয়ারি।
আবেদনের বিস্তারিত দেখতে এখানে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন