মানুষের কথায় ৫০০ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রি করে দিলেন ইলন মাস্ক

টেসলার প্রায় ৫০০ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন ইলন মাস্ক
রয়টার্স

টেসলার প্রায় ৫০০ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক।

এর আগে টুইটারে ৬ কোটি ৩০ লাখ অনুসারীর কাছে তিনি জানতে চান, টেসলার ১০ শতাংশ শেয়ার তাঁর বিক্রি করা উচিত কি না। সেখানে বেশির ভাগ অনুসারীর জবাব ছিল ‘হ্যাঁ’। এতে দুই দিনে টেসলার শেয়ারদর ১৬ শতাংশ কমে যায়। গতকাল বুধবার থেকে তা অবশ্য আবার বাড়তে শুরু করে।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, টেসলা এখন বিশ্বের সবচেয়ে দামি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান, যার মোট বাজারমূল্য এক লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থায় জমা দেওয়া নথি থেকে জানা যায়, ইলন মাস্কের পক্ষে টেসলার ৩৬ লাখ শেয়ার বিক্রি করা হয়, যার বাজারমূল্য ৪০০ কোটি ডলার। মাস্ক নিজে আরও ৯ লাখ ৩৪ হাজার শেয়ার বিক্রি করেন, যার দাম প্রায় ১১০ কোটি ডলার।

এই শেয়ারের এক-পঞ্চমাংশ বিক্রি করা হয় পূর্বনির্ধারিত চুক্তি অনুযায়ী। অর্থাৎ টুইটার অনুসারীদের কাছে জানতে চাওয়ার অনেক আগেই তা ঠিক হয়ে ছিল। তবে বিক্রি হওয়া বাকি শেয়ারগুলো পূর্বনির্ধারিত নয়।

এই দফায় টেসলায় ইলন মাস্কের মোট শেয়ারের ৩ শতাংশ বিক্রি করলেন। তবে সে বিক্রির সঙ্গে সাম্প্রতিক টুইটের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, নাকি তিনি আরও শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনা করছেন, তা পরিষ্কার নয়।

গত শনিবার ইলন মাস্ক টুইট করে অনুসারীদের কাছে ভোট চান। তিনি জানতে চান, আয়কর প্রদানের জন্য তাঁর টেসলার শেয়ার বিক্রি করা উচিত কি না। টুইটে তিনি লেখেন, ‘...আমি আমার টেসলা স্টকের ১০ শতাংশ বিক্রির প্রস্তাব করছি। যে পথেই এগোক, আমি এই ভোটের ফলাফল মেনে নেব।’

টুইটে ৩৫ লাখের বেশি মানুষ ভোট দেন, যাঁদের প্রায় ৫৮ শতাংশ শেয়ার বিক্রির পক্ষে মত দেন।

তবে টুইটারে ভোট গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত সে বিষয়ে মুখ খোলেননি ইলন মাস্ক। সেখানে তিনি আরও বলেন, টেসলায় কাজ করার জন্য তিনি নগদ অর্থ পান না। তিনি লেখেন, ‘আমার কেবল স্টক আছে। আর সে কারণে নিজে থেকে কর পরিশোধে আমার একমাত্র উপায় হলো স্টক বিক্রি।’

ইলন মাস্ক বা তাঁর মতো অনেক শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা প্রতিষ্ঠানের পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করে পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন। যেমন প্রতিষ্ঠানের বাজারমূল্য যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করে, তবে প্রধান নির্বাহী নির্দিষ্ট হারে পারিশ্রমিক পাবেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই পারিশ্রমিক মূলত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। ২০১২ সালে পারিশ্রমিক হিসেবে যে শেয়ারগুলো পেয়েছেন, এখন সেটারই অংশবিশেষ বিক্রি করলেন। আর এ ধরনের লেনদেনে নির্ধারিত হারে আয়কর ধার্য করা হয়, যা সচরাচর শেয়ার বিক্রি করেই মেটানো হয়ে থাকে।

২০১৬ সালের পর এই প্রথম শেয়ার বিক্রি করলেন মাস্ক। সেবার আয়কর দেওয়ার জন্য প্রায় ৬০ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রি করেছিলেন তিনি।

বর্তমানে ইলন মাস্ক বিশ্বের শীর্ষ ধনী। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী তাঁর নিট সম্পদ এখন ৩০ হাজার কোটি ডলার ছুঁই ছুঁই।