শুরুতে আমাজনে ১০০০ ডলার বিনিয়োগ করলে আজ কত পেতেন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের নাজদাক স্টক এক্সচেঞ্জে ১৯৯৭ সালের ১৫ মে আমাজনের ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং বা আইপিও হয়। অর্থাৎ, মূলধন সংগ্রহের জন্য সবার উদ্দেশে শেয়ার বিক্রি শুরু করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি।

আইপিওর সময় প্রতিটি ১৮ মার্কিন ডলার করে মোট ৩০ লাখ শেয়ার বিক্রির জন্য উপস্থাপন করে আমাজন।

মনে করুন, আমাজন যে একদিন এমন বড় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে, তা আপনি সেই ১৯৯৭ সালেই বুঝতে পেরেছিলেন। অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে আইপিওর দিনেই এক হাজার ডলারের শেয়ার কিনে ফেললেন। সে শেয়ারগুলো যদি আজও আপনার কাছে থাকত, তবে শুরুর সেই এক হাজার ডলার বিনিয়োগে আজ কত টাকার মালিক হতেন? চলুন সে হিসাবটাই আমরা সেরে ফেলি।

শেয়ার মোট তিনবার স্প্লিট হয়

প্রতি শেয়ারের দাম ১৮ ডলার হলে এক হাজার ডলারে আপনি আমাজনের ৫৫টি শেয়ার পেতেন। সঙ্গে কিছু খুচরা পয়সা অবশ্য ফিরিয়ে দিত। যাহোক, এখানে জানার ব্যাপারটি হলো, এ পর্যন্ত আমাজনের শেয়ার মোট তিনবার ‘স্প্লিট’ হয়েছে।

আমাজনের কল্যাণেই প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস এখন বিশ্বের শীর্ষ ধনী
রয়টার্স

স্প্লিটের সাধারণ মানে যা, এ ক্ষেত্রেও তা-ই। অর্থাৎ, প্রতি শেয়ার ভাগ হয়ে একাধিক শেয়ারে পরিণত হওয়া। ১৯৯৮ সালের জুনে প্রথম স্প্লিট হয়, প্রতি শেয়ারের বিনিময়ে দুটি শেয়ার দেয় আমাজন। অর্থাৎ, আপনার ৫৫টি শেয়ার সে সময় ১১০টি শেয়ারে পরিণত হতো।

পরবর্তী স্প্লিট হয় ১৯৯৯ সালের জানুয়ারিতে। সে সময় প্রতি শেয়ারের বিনিময়ে তিনটি করে শেয়ার দেওয়া হয়। আপনার ১১০টি শেয়ার তখন ৩৩০টি শেয়ারে পরিণত হতো। একই বছরের সেপ্টেম্বরে আবার শেয়ার স্প্লিট হয়, সেবার প্রতি শেয়ার স্প্লিট হয়ে দুটি করে শেয়ারে পরিণত হয়। অর্থাৎ, আইপিওর সময় কেনা ৫৫টি শেয়ার ১৯৯৯ সালের শেষ নাগাদ মোট ৬৬০টি শেয়ারে পরিণত হতো।

এবার বর্তমানে ফিরে আসি। গতকাল নাজদাক স্টক এক্সচেঞ্জ বন্ধ হওয়ার আগে আমাজনের প্রতি শেয়ার সর্বশেষ ৩ হাজার ২৪৪ দশমিক ৯৯ ডলারে বিনিময় হয়। সে সময় আপনি যদি আপনার মালিকানাধীন ৬৬০টি শেয়ার বিক্রি করে দিতেন, তবে পেতেন মোট ২১ লাখ ৪১ হাজার ৬৯৩ দশমিক ৪০ ডলার। কিংবা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৮ কোটি ১৬ লাখ ১৫ হাজার ৬০০ টাকা।

২০১৮ সালে বিশ্বের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাজনের বাজারমূল্য এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। সেটির প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস এখন বিশ্বের শীর্ষ ধনী।

যুক্তরাজ্যে আমাজনের একটি গুদামে কর্তব্যরত কর্মী। ফাইল ছবি
রয়টার্স

সারাংশ করলে যা দাঁড়ায়

আমাজনের আইপিওর সময় আপনি যদি এক হাজার ডলার খরচ করে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার কিনতেন, তবে পেতেন ৫৫টি শেয়ার (সঙ্গে ১০ ডলার ফেরত পেতেন)। সেটি তিনবার স্প্লিট হয়ে হতো মোট ৬৬০টি শেয়ার। আর প্রতিটি ৩ হাজার ২৪৪ দশমিক ৯৯ ডলারের বিনিময়ে সেগুলো এখন বিক্রি করতে পারতেন মোট ১৮ কোটি ১৬ লাখ ১৫ হাজার ৬০০ টাকায়। অর্থাৎ, শুরুর সেই বিনিয়োগের ২ হাজার ১৬৩ গুণের বেশি।