এইচএসসি পরীক্ষার কক্ষে যে ৮টি টিপস কাজে দেবে
চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ২৬ জুন। বাংলা প্রথম পত্র বিষয় দিয়ে এবারের পরীক্ষা শুরু হবে। এটি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা। এইচএসসি পরীক্ষার কক্ষে কী করবে আর কী করবে না, এবার জেনে নাও। এসব টিপস পরীক্ষার সময় অনেক সহায়ক হবে।
দুশ্চিন্তা করবে না
এখন থেকেই পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করবে। দুশ্চিন্তা ভালো পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। অনেক শিক্ষার্থী অতিরিক্ত টেনশনের কারণে অনেক জানা প্রশ্নের উত্তরও সঠিকভাবে করতে পারে না। পরীক্ষার কক্ষে প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর প্রশ্নপত্রটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
খাতা হাতে পেয়ে যা করবে
পরীক্ষার কক্ষে প্রথমে খাতা হাতে পেয়ে পেনসিল দিয়ে মার্জিন টানতে হবে। উত্তরপত্রের ‘ওএমআর শিটে’ পরীক্ষার রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড, বোর্ডের নাম ইত্যাদি সঠিকভাবে প্রথমে বলপয়েন্ট কলম দিয়ে লিখতে হবে। পরে বলপয়েন্ট কলম দিয়ে সঠিকভাবে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই এইচএসসি পরীক্ষার খাতা বা উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না।
প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর যা করবে
প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর পুরো প্রশ্নটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। কোনো প্রশ্ন আংশিক পরিবর্তন করে দেওয়া হলো কি না, তা খেয়াল রাখতে হবে। প্রশ্নপত্র দেখে মনে মনে পুরো পরীক্ষার পরিকল্পনা করতে হবে। কীভাবে শুরু করবে এবং কীভাবে শেষ করবে, তার ছক মনে মনে করে নিলে পরীক্ষা অনেক সহজ হয়ে যাবে।
সময় ভাগ করে নাও
প্রশ্নের মান অর্থাৎ নম্বর অনুযায়ী কতটুকু লিখতে হবে, তা নির্ধারণ করেই লেখা শুরু করতে হবে। শুরুর প্রশ্নগুলো যতটা সম্ভব ভালো করে দেওয়া উচিত, তবে তা হতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। একটি রচনামূলক প্রশ্নের বা সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য সাধারণত ১৯ থেকে ২০ মিনিট সময়ের মধ্যে লেখা শেষ করতে হবে।
প্রশ্ন নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ
যেসব প্রশ্নের উত্তর ভালো জানা আছে, সেগুলো আগে লেখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। পরীক্ষক যখন খাতা মূল্যায়ন করবেন, তখন শুরুতেই লেখার মান ভালো দেখলে শিক্ষার্থীর প্রতি ইতিবাচক ধারণা পাবেন। এতে ওই বিষয়ে ভালো নম্বর পাওয়া সহজ হবে। তুলনামূলক সহজ ও জানা প্রশ্নের উত্তর পর্যায়ক্রমে লেখাই ভালো।
উত্তরপত্র পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে
পরীক্ষার খাতায় ওভার রাইটিং, কাটাছেঁড়া, অস্পষ্ট লেখা ইত্যাদি করা যাবে না। লেখায় কোনো ভুল হলে এক টানে কেটে দিতে হবে। লেখার ভাষা সহজ-সরল ও প্রাঞ্জল হওয়া উচিত। একটি প্রশ্নের উত্তর লেখা শেষ হলে পরের পৃষ্ঠায় প্রশ্নের উত্তর শুরু করবে। এ ছাড়া প্রশ্নের উত্তরে ধারাবাহিকতা ভালো ফলের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
অপ্রাসঙ্গিক কিছু লেখা যাবে না
বেশি লিখলে বেশি নম্বর পাওয়া যায়, এটা ভুল ধারণা। অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক লিখে উত্তর বড় করা যাবে না। অপ্রাসঙ্গিক উত্তর লিখে খাতা ভরলে সময় নষ্ট হবে, বেশি নম্বর কিন্তু পাওয়া যাবে না। অনেকেই কয়েক লাইনে এক পৃষ্ঠা শেষ করে পরবর্তী পৃষ্ঠায় লেখা শুরু করে। এতে পরীক্ষকেরা বিরক্ত হন। মনে রেখো, প্রাসঙ্গিক ও যথাযথ উত্তরেই কিন্তু বেশি নম্বর পাওয়া যায়।
রিভিশন দাও লেখার শেষে
পরীক্ষার শেষে খাতা রিভিশনের জন্য পাঁচ থেকে সাত মিনিট সময় রাখবে। এ সময় সবার আগে লক্ষ করবে, প্রশ্নের সঙ্গে উত্তরপত্রে লেখা ক্রমিকের মিল আছে কি না। প্রশ্নের সৃজনশীল অংশের ক্রমিকও (যেমন ক, খ, গ, ঘ) ঠিকমতো লেখা হয়েছে কি না, দেখতে হবে। ক্রমিক নম্বর ভুল হলে কিন্তু পরীক্ষক নম্বর দেওয়ার জন্য প্রশ্ন ও উত্তরের মধ্যে মিল পাবে না। এ ছাড়া কোথাও কোনো ভুল আছে কি না, বা কোনো প্রশ্ন বাদ পড়ল কি না, মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে।
লেখক: অধ্যাপক মো.আফলাতুন, অধ্যক্ষ, শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সরকারি কলেজ, গাজীপুর।