এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মানতে হবে যে ১০ বিশেষ নির্দেশনা
২০২৫ সালের এইচএসসি (উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট) পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ২৬ জুন। সময়সূচি অনুযায়ী ২৬ জুন বাংলা প্রথম পত্রের মাধ্যমে শুরু হবে এই পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ১০ আগস্ট। এরপর ব্যবহারিক পরীক্ষা শুরু হবে। এদিকে শিক্ষা বোর্ডগুলো চলতি বছরের এইচএসসি (উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট) পরীক্ষার্থীদের জন্য ১০টি বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো—
১. আসন গ্রহণ ৩০ মিনিট আগে
পরীক্ষার কেন্দ্রে নির্ধারিত কক্ষে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর জন্য ‘নির্দিষ্ট আসন’ আছে। সেই আসনে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে বসতে হবে—এমন নির্দেশনা রয়েছে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের। প্রথম দিন পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই সকাল ৯টায় পরীক্ষার কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে। কারণ, তোমার বসার নির্দিষ্ট আসন খুঁজে বের করতে হবে। তা খুঁজতে সময় লাগবে। অন্যান্য দিন প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে প্রবেশ করে নিজের আসন গ্রহণ করতে হবে। রাস্তায় ‘যানজটের কথা’ মাথায় রেখে পরীক্ষার কেন্দ্রে যেতে হবে।
২. লিখে বৃত্ত ভরাট করা
প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে উত্তরপত্র সরবরাহ করা হবে। পরীক্ষার সময় তোমার উত্তরপত্রের সঙ্গে ‘ওএমআর শিট’ থাকবে। উত্তরপত্রের ‘ওএমআর শিটে’ তোমার পরীক্ষার রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড, বোর্ডের নাম ইত্যাদি যথাযথভাবে প্রথমে বলপয়েন্ট কলম দিয়ে লিখতে হবে। পরে বলপয়েন্ট কলম দিয়ে সঠিকভাবে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সঠিক ডিজিটের বৃত্তটি অবশ্যই ভরাট করতে হবে।
৩. উত্তরপত্র ভাঁজ করবে না
মনে রেখো, কোনো অবস্থাতেই তোমার এইচএসসি পরীক্ষার খাতা বা উত্তরপত্র ভাঁজ করবে না। উত্তরপত্র ভাঁজ করলে এর সঙ্গে থাকা ‘ওএমআর শিট’ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৪. ক্যালকুলেটর ব্যবহার
পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীর শুধু ‘সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর’ ব্যবহারের অনুমতি আছে। কোনোভাবেই উচ্চতর সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে না।
১৬ জুন ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নিচের সায়েন্টিফিক নন–প্রোগ্রামেবল মডেলের ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এসবের মধ্যে—এফএক্স-৮২এমএস, এফএক্স- ১০০এমএস, এফএক্স-৫৭০এমএস, এফএক্স-৯৯১এমএস, এফএক্স-৯৯১ইএক্স, এফএক্স-৯৯১ইএস, এফএক্স-৯৯১ইএস প্লাস, এফএক্স-৯৯১ সি ডব্লিউ ইত্যাদি মডেলের ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। উল্লেখিত মডেলের ক্যালকুলেটর ছাড়াও শিক্ষার্থীরা সাধারণ ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে।
৫. পরীক্ষার মাঝে বিরতি থাকবে না
এইচএসসির প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষায় প্রথমে বহুনির্বাচনি অংশ ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) অংশের পরীক্ষা হবে। এই দুই অংশের পরীক্ষার মধ্যে কোনো ধরনের বিরতি থাকবে না।
৬. মুঠোফোন ব্যবহার
এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রের ভেতরে কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষা চলাকালীন মুঠোফোন সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবে না। তাই এ বিষয়টি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
৭. পৃথকভাবে পাস
এইচএসসি পরীক্ষায় প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে বহুনির্বাচনি, সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) ও ব্যবহারিক অংশে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) পৃথকভাবে পাস করতে হবে।
৮. প্রবেশপত্রে উল্লিখিত বিষয়ে পরীক্ষা
প্রত্যেক পরীক্ষার্থী শুধু রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও পরীক্ষার প্রবেশপত্রে উল্লিখিত বিষয় বা যে বিষয়সমূহের উল্লেখ করা আছে, সেসব বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই অন্য বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
৯. স্থানান্তরের মাধ্যমে আসনবিন্যাস
পরীক্ষার সময় কোনো পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিজ কলেজ বা প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হবে না। পরীক্ষার্থী স্থানান্তরের মাধ্যমে প্রতিটি পরীক্ষার্থীর জন্য ‘আসনবিন্যাস’ করা হবে।
১০. উপস্থিতিপত্রে স্বাক্ষর
পরীক্ষার দিন প্রতিটি বিষয়ের বহুনির্বাচনি, সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) ও ব্যবহারিক পরীক্ষার অংশে ‘পরীক্ষার্থীর উপস্থিতিপত্র’ রয়েছে। মনে করে অবশ্যই পরীক্ষার উপস্থিতির জন্য সেই উপস্থিতিপত্রে অবশ্যই প্রত্যেক পরীক্ষার্থী স্বাক্ষর করবে।
লেখক: গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার পিএসসি (অব.), অধ্যক্ষ, সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, উত্তরা শাখা, ঢাকা।