গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে খুব আলোচিত হয়েছিল বিষয়টা। অর্থাৎ 4000 বছরের পুরোনো বীজগণিতের দ্বিঘাত সমীকরণের একটি সহজ সমাধান পদ্ধতি খুঁজে পেয়েছেন মার্কিন গণিতবিদ এবং আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের যুক্তরাষ্ট্র দলের দলনেতা পো শেন লো (Po-Shen Loh)।
আজ সেটাই আলোচনা করব। প্রথমেই version 1.0 আরেকবার লিখে ফেলি। এটা তো আগের পর্বে অর্থাৎ ‘সমীকরণ সমাধান-৪’ পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম।
x = {-b±√(b2 - 4ac)}/2a
এবার আমাদের নতুন সমীকরণটা দেখো।
x = (-B/2)±√{(B2/4)-C}
এবার চলো পটভূমি দেখে আসি। আমাদের সমীকরণের আদর্শ রূপ হলো ax2+bx+c=0।
এখন এই সমীকরণের উভয় পাশে a দিয়ে ভাগ করলে হয় x2+(b/a)x+(c/a) = 0। a দিয়ে ভাগ করার কারণ হলো, x2 এর সহগকে একক সহগ করা। আমাদের এই নতুন সদস্য b/a ও c/a কে নাম দিলাম যথাক্রমে B ও C। যেহেতু এরা সহগ বা ধ্রুবক, তাই নতুন আরেকটি ধ্রুবক ধরাই যায়। তাহলে আমাদের নতুন সমীকরণটা দেখতে অনেকটা x2+Bx+C=0 এমন হবে।
আমরা একটা সূত্রের সঙ্গে পরিচিত আছি। দেখো তো চিনতে পারো নাকি, (x-a)(x-b) = x2-(a+b)x+ab এবং (x-a)(x-b) = 0 হলে আমরা বলতাম x = a, b।
x2+Bx+C = 0 সমীকরণকেও একইভাবে উৎপাদক বিশ্লেষণ করলে পাব x2+Bx+C = (x-R)(x-S), যেখানে R ও S দুইটি মূল। সেটাই আরকি! এখন ডানপক্ষকে একটু সাজানো যাক। আমাদের সমীকরণ হবে x2+Bx+C = x2-(R+S)x+RS।
এখন দুই পাশ মেলালে (সহগ সমীকৃত) দেখা যায়, B এর জায়গায় ডানপক্ষে আছে –(R+S) এবং C এর জায়গায় ডানপক্ষে আছে RS। যেহেতু আগেই বলেছি, R, S দুইটি মূল।
এখন আরেকটি ব্যাপার দেখো। দুইটি সংখ্যার যোগফল 6+6=12। এখন যোগফলকে যদি 2 দিয়ে ভাগ করো, তাহলে ভাগফল পাবে 6। অর্থাৎ, এ ক্ষেত্রে যে দুইটি সংখ্যার যোগফল 12 ছিল, সেই সংখ্যা দুটিও 6! আবার যদি এমন হতো, 7+6=13 আর 13/2 = 6.5! আচ্ছা, আমাদের সংখ্যা দুটি হলো 6 ও 7 আর যোগফল ছিল 13! এদের গড় আবার 6.5! আমরা 6 কে কিন্তু (6.5-0.5) আর 7 কে (6.5+0.5) আকারেও লিখতে পারি।
অর্থাৎ আমি বলতে চাচ্ছি, যদি অঙ্ক দুটি অসমান হয়, একটি সংখ্যা তাদের গড় মানের চেয়ে যতটা বেশি হবে, অপর সংখ্যাটা গড় মানের চেয়ে ততটাই কম হবে। আর দুটি সমান সংখ্যার ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি তো গড়মানের সমান।
ওপরের উদাহরণে গড় মান 6.5 এর সঙ্গে ±0.5 যোগ করে আমরা 6, 7 পেয়েছিলাম। এবার যদি আমি বলি, যদি দুইটি মূলের গড় ½(R+S) হয়, তবে একটি মূল হবে ½(R+S) + Z, আর অপর মূল হবে ½(R+S) – Z। এখানে Z হলো সেই 0.5, অর্থাৎ যেটা গড় মানের চেয়ে কম বা বেশি।
এখন আমাদের দ্বিঘাত সমীকরণ 2.0 তে আমরা দেখেছিলাম B এর জায়গায় ডানপক্ষে আছে -(R+S)। তাই লেখা যায় (R+S) = -B।
এখন, মূল দুটি দাঁড়ায়, (-B/2)+Z এবং (-B/2)-Z।
এখন এদের গুণফল বের করো।
{(-B/2)+Z}×{(-B/2)-Z}=(-B/2)2-Z2=C
তাই লেখা যায়, Z2 = (-B/2)2-C
বা, Z = ±√{(B2/4)-C}
আমরা এটাও দেখেছিলাম C = RS। তাহলে বলা যায়, C হলো মূল দুইটির গুণফল। আমরা এখান থেকে Z এর মান বের করতে পারলাম।
এখন, মূল দুটি যেহেতু, (-B/2)+Z এবং (-B/2)-Z। এবার আমরা জানি, আমাদের x = (-B/2)±Z, আর একটু আগেই Z এর একটা মান তো পেয়েছি, এবার Z এর মানটা বসিয়ে দাও। শেষে তোমার বামপাশে থাকবে শুধু x আর ডানপাশে থাকবে B সংবলিত একটি রাশি।
x = (-B/2)±√{(B2/4)-C)}
এবার B এর মান দিয়ে x এর মান বের করে ফেলো।
দ্বিঘাত সমীকরণের version 2.0 নিয়ে মুনির হাসান স্যারের একটি ভিডিও আছে। নিচে দেওয়া হলো
তোমাদের জন্য সমস্যা:
i. x2-2x+4 = 0
ii. 3x2-4x+6 = 0
নতুন পদ্ধতি মানে version 2.0 ব্যবহার করে x এর মান বের করে ফেলো।