সেই উচ্ছ্বাস এখনো রয়ে গেছে গৌতমদার মধ্যে

চঞ্চলের সেলফিতে গৌতম ঘোষ
ছবি : সংগৃহীত

২০১০ সালে ‘মনের মানুষ’ ছবিতে কাজ করতে গিয়ে ভারতের পরিচালক গৌতম ঘোষের সঙ্গে সখ্য হয়েছিল বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর। মাঝখানে টুকটাক কথাবার্তা হলেও প্রায় এক যুগ পর একান্তে  দীর্ঘ সময় কাটল দুজনের। ৩ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় ‘ইন্দো-বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব’।  সেই উৎসবে যোগ দিয়ে এভাবে দেখা হয় তাঁদের দুজনের। সেখানে তাঁদের আড্ডা হলো, দুই বাংলার সিনেমা নিয়ে কথা হলো। কথায় কথায় স্মৃতিতে ফিরে গেলেন ‘মনের মানুষ’-এর সেই শুটিংয়ের দিনগুলোয়।

চঞ্চল চৌধুরী ও গৌতম ঘোষ
ছবি : সংগৃহীত

সোমবার দুপুরে নিজের ফেসবুকে গৌতম ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী নীলাঞ্জনা ঘোষের সঙ্গে একটি সেলফি দিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী। তাতে বাংলাদেশের এই অভিনেতা লিখেছেন, ‘এক যুগের বেশি সময় পর গৌতমদা আর বৌদির সঙ্গে এভাবে সময় কাটানো। একই রকম প্রাণোচ্ছল মানুষ রয়ে গেছেন আমাদের অতি প্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা গৌতম ঘোষ। ‘মনের মানুষ’–এর সেই সময়েই যেন ফিরে গেলাম আড্ডা দিতে দিতে। কৃতজ্ঞতা জানাই “ইন্দো-বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব” আয়োজকবৃন্দকে।’

আরও পড়ুন

প্রথম আলোকে চঞ্চল চৌধুরীর বলেন, ‘এক যুগ আগে যেমন দেখেছিলাম, মনে হচ্ছিল তেমনই আছেন দাদা। কথাবার্তায় বোঝা যাচ্ছিল, ভেতরের মানুষটির কোনো পরিবর্তন হয়নি আর। সেই প্রাণখোলা, সেই উচ্ছ্বাস এখনো রয়ে গেছে গৌতমদার মধ্যে।’
উৎসবে চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত ‘হাওয়া’ ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছে। একই উৎসবে গৌতম ঘোষের ‘রাহগির’ ছবিটি দেখানো হয়। উৎসবে পাশাপাশি বসে দুজনই দুজনার সিনেমা দেখেছেন। চঞ্চল বলেন, ‘আমি দাদার পাশে বসে “রাহগির” ছবিটি দেখেছি, দাদাও আমার পাশে বসে “হাওয়া” দেখেছেন। “হাওয়া” দেখে দারুণ প্রশংসা করেছেন দাদা। ছবিটির  প্রদর্শন শেষ হলে আমাকে জড়িয়ে ধরে গৌতমদা বললেন, “তোমার অভিনয় আর কী বলব! ছবির সিনেমাটোগ্রাফি অসাধারণ, টিমওয়ার্ক দুর্দান্ত।” আমি ওখান থেকে ভিডিও কলে ছবির পরিচালক সুমনের সঙ্গে দাদাকে ধরিয়ে দিয়েছিলাম। দুজন অনেকক্ষণ কথা বললেন।’

চঞ্চলের সেলফিতে গৌতম ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী নীলাঞ্জনা ঘোষ
ছবি : সংগৃহীত

৪ ফেব্রুয়ারি উৎসবে যোগ দেন চঞ্চল চৌধুরী। একই হোটেলে পাশাপাশি রুমে ছিলেন চঞ্চল চৌধুরী ও গৌতম ঘোষ। দুই রাত তাঁদের এভাবে থাকার সুযোগ হয়েছে। চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘উৎসবে তো কথা হতোই। হোটেলে ফিরে অনেক রাত পর্যন্ত আমরা গল্প করতাম। মামুনুর রশিদের বন্ধু মানুষ তিনি। মামুন ভাইয়ের কথা বলতেন, বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে কথা হতো। মৃণাল সেন, সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক ছিল। তাঁদের স্মৃতি নিয়ে অনেক কথা বলেছেন। এই দুই রাতের আড্ডায় অনেক কিছুই শিখেছি দাদার কাছ থেকে।’

পদাতিক সিনেমার পোস্টারে চঞ্চল
ছবি: সংগৃহীত

‘পদাতিক’ সিনেমায় মৃণাল সেনের চরিত্র করছেন চঞ্চল চৌধুরী, সে খবরও রাখেন গৌতম ঘোষ। চঞ্চল জানান, এই উৎসবে যোগ দিয়ে মৃণাল সেন চরিত্রটির জন্য দারুণ উপকার হয়েছে তাঁর। বলেন, ‘গৌতম ঘোষের সঙ্গে মৃণাল সেনের একটা সময় দারুণ সখ্য ছিল। মৃণাল সেন সম্পর্কে তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছুই জানতে পেরেছি। তা ছাড়া, মৃণাল সেনের আপন ভাতিজি শুক্লা ব্যানার্জির সঙ্গেও দেখা হয়েছিল। আমি দিল্লিতে ছিলাম, সেটা জেনে তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। ওই ভাতিজির কাছে মৃণাল সেনের শেষ বয়সের কিছু সময় কেটেছে। শুক্লার কাছ থেকে মৃণাল সেনের বেশ কিছু অজানা তথ্য জেনেছি। পরের ধাপের শুটিংয়ে মৃণাল সেন করতে বিষয়গুলো আমার অনেক কাজে দেবে।’

এদিকে চঞ্চল চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘পদাতিক’ ছবির দ্বিতীয় ধাপের কাজ করতে ৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় যাবেন তিনি।  ছবিটি পরিচালনা করছেন সৃজিত মুখার্জি।

আরও পড়ুন