১১ বছর পর অনন্য মান

রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলনে পরিবেশন করা হয় নাচ
রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলনে পরিবেশন করা হয় নাচ

সারা দেশের রবীন্দ্রসংগীত অনুরাগীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, পরস্পর অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে শেষ হলো জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ্ আয়োজিত ৩৮ তম জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন। সমাপনী অনুষ্ঠানে দেওয়া হলো সম্মাননা পদক, ঘোষণা করা হলো পরিষদের নতুন কমিটি।

তিন দিনের আয়োজনের শেষ দিন গতকাল রোববার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংগঠনের নেতারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সকাল ১০টায় প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পরিষদের সহসভাপতি আ ব ম নুরুল আনোয়ারের সভাপতিত্বে শুরুতেই আর্থিক প্রতিবেদন পেশ করেন কোষাধ্যক্ষ নাসেহুন আমীন। বিভিন্ন শাখার প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।

বিকেলে সন্জীদা খাতুনের সভাপতিত্বে শুরু হয় সমাপনী অধিবেশন। এ আয়োজনে প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ আহমদ রফিকের। শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি আসতে পারেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয়। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন মাঈনুদ্দিন নাজির এবং সম্মেলনের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন লাইসা আহমদ লিসা। রবীন্দ্র পদক ও গুণীজন সম্মাননা প্রদান করা হয় লোকসংগীতশিল্পী সুষমা দাশকে। এ সময় কিশোর বিভাগ ও সাধারণ বিভাগের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় মানপ্রাপ্তদের সনদ ও পুরস্কার প্রদান করা হয়। দীর্ঘ ১১ বছর পর এবার প্রতিযোগিতায় সাধারণ বিভাগে অনন্য মান পেয়েছেন একজন শিল্পী, তিনি ঢাকার তাহমিদ ওয়াসীফ। এ ছাড়া সাধারণ বিভাগে এবার ১৩ শিল্পী প্রথম মান পেয়েছেন, দ্বিতীয় মান পেয়েছেন ২১ জন এবং সাধারণ মান পেয়েছেন ৩ জন শিল্পী। কিশোর বিভাগে ২৩ জন প্রথম মান পেয়েছে, দ্বিতীয় মান পেয়েছে ২১ জন এবং সাধারণ মান পেয়েছে ৪ জন।

সম্মেলনে সনজীদা খাতুনকে সভাপতি, আতিউর রহমানকে নির্বাহী সভাপতি, বুলবুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক এবং নাসেহুন আমীনকে কোষাধ্যক্ষ ÿকরে ৬১ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়।

সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে সমাপনী পর্বের সন্ধ্যাকালীন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সংগীত পরিবেশন করেন খায়রুজ্জামান কাইয়ুম, মনসুরা বেগম, সুস্মিতা আহমেদ, রোকাইয়া হাসিনা, এ টি এম জাহাঙ্গীর, স্বপন দত্ত, অসীম দত্ত, পাপিয়া সারোয়ার, কাঞ্চন মোস্তফা, সেমন্তী মঞ্জরি, মিতা হক, ফাহিম হোসেন চৌধুরী, সমাপ্তি রায়, লাইসা আহমদ লিসা, পার্থ তানভীর নভেদ, অণিমা রায়, সুমন চৌধুরী, সত্যম কুমার দেবনাথ। লোকসংগীত পরিবেশন করেন চন্দনা মজুমদার, কিরণ চন্দ্র রায়, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, রথীন্দ্রনাথ রায়। সম্মেলক গান পরিবেশন করে ঢাকা মহানগর ও সিরাজগঞ্জ শাখা। আবৃত্তি করেন জয়ন্ত রায়। নৃত্য পরিবেশন করেন অমিত চৌধুরী, সুইটি দাস, র্যা চেল প্রিয়াঙ্কা প্যারিস। গুণীজন সম্মাননাপ্রাপ্ত সুষমা দাশের গান ছিল দর্শকের জন্য বিশেষ প্রাপ্তি।

এবারের তিন দিনেরই সান্ধ্য সম্মেলন সাজানো হয়েছিল গুণীজনের কথা, আবৃত্তি, পাঠ, নৃত্য ও গান দিয়ে। প্রকাশিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির নানা দিক নিয়ে বিশিষ্টজনদের লেখা সংগীত সংস্কৃতি শীর্ষক প্রবন্ধের সংকলন।

১৯৭৮ সালে শুরু। অবশ্য শুরু হয়েছিল জাহিদুর রহিম স্মৃতি পরিষদ নামে। পরে দেশব্যাপী বৃহত্তর পরিসরে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার লক্ষ্য নিয়ে বাঙালির চিরকালের সঙ্গী রবীন্দ্রনাথের নাম যুক্ত করে সংগঠনের নাম করা হয় ‘জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ্’।