নিজের 'প্রেগনেন্সি' নিয়ে বললেন বিদ্যা

বিদ্যা বালান
বিদ্যা বালান

‘মিশন মঙ্গল’ ছবি মুক্তির সঙ্গে সঙ্গেই বাজিমাত করেছে। তাই ছবি মুক্তির পরদিনই ছবির সাফল্য ভাগ করে নেন এর অন্যতম নায়িকা বিদ্যা বালান। বলিউডের সুন্দরী-প্রাণবন্ত নায়িকা বিদ্যা বালানের সঙ্গে আড্ডায় যোগ দেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য।

‘মিশন মঙ্গল’ ছবি শুরুতেই বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে। অনেকে বলছেন, ছবিটা বক্স অফিসে দুর্দান্ত সাফল্য পাবে।
সত্যি দারুণ অনুভূতি। অক্ষয় কুমারের মতো সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ করা দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা। তবে আমি মনে করি, এই ছবিতে প্রত্যেকে খুবই লক্ষণীয়। অক্ষয়ের নামের জোরেই এত ভালো সাড়া পাচ্ছি। আর ছবিটা দুর্দান্ত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সবার মিলিত প্রয়াস বলতে পারেন।

‘বেগম জান’ ছবির পর আবার এত নায়িকার সঙ্গে কাজ করলেন।
একদম তাই। তবে আমরা পাঁচ নায়িকা (বিদ্যা বালান, তাপসী পান্নু, সোনাক্ষী সিনহা, কীর্তি কুলহারি, নিত্যা মেনন) খুব মজা করে কাজ করেছি। একজন আরেকজনের পেছনে লাগতাম। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। আর আমরা অনেকটা এমনই। তাই আমাদের মধ্যে সুন্দর একটা বোঝাপড়া তৈরি হয়। আমি শুধু সোনাক্ষীকে আগে থেকে জানতাম। বাকিরা নতুন হলেও কখনো তা মনে হয়নি। আর আমরা সেটে অত্যন্ত নিরাপত্তা অনুভব করতাম। আমরা একে অপরের কাজের প্রশংসা করতাম। সত্যি বলতে, তাঁরা প্রত্যেকে খুব ভালো অভিনেত্রী।

বিদ্যা বালান
বিদ্যা বালান

অক্ষয়ের সঙ্গে ১২ বছর পর কাজ করলেন। আপনাদের সম্পর্কের সমীকরণটা কোথাও বদলেছে?
কোথাও মনে হয়নি যে ১২ বছর পর আমরা কাজ করছি। সেটে তার কাছ থেকে যা ভালোবাসা পেয়েছি, তা আমার জন্য খুবই বিশেষ। অক্ষয় কুমার সব সময় আমাকে বলত, ‘তুই আমাদের সেটে একটা ছেলে। তুই এতটাই বদমাশ যে সবাইকে অতিষ্ঠ করে তুলিস।’ আমি বলতাম, এই সবকিছু তোমার কাছ থেকেই শেখা। আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে তার সঙ্গে কাজ করেছি। সেটের পুরো খাবার তার বাসা থেকে আসত। আমরা সবাই চেটেপুটে খেতাম।

আপনি এখন ৪০-এর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। কথায় আছে, ‘নটি অ্যাট ফোর্টি’। এ ব্যাপারে বলুন।
এখন আমি যতটা খুশি, তা আগে কখনো অনুভব করিনি। আমি সবকিছু উপভোগ করতে ভালোবাসি। আর আমি মনে করি, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে পরিপক্বতা আসে। কিন্তু তা থেকে আমি বেশি প্রাণবন্ত হয়েছি। আমার এখন কোনো কটুকথা খারাপ লাগে না। এখন নিজের ব্যাপারে সব ধরনের কথা সহ্য করতে পারি। আসলে সহ্যশক্তি অনেক বেড়েছে। আর এই সময় দাঁড়িয়ে আপনি নিজে যে রকম, তা গ্রহণ করতে অসুবিধা হয় না। এই মতাদর্শে চললে জীবন অনেক সহজ হয়ে ওঠে। আর ছোট ছোট জিনিসের মধ্যে খুশি খুঁজে বের করা যায়।

এই সময় ‘মিড লাইফ ক্রাইসিস’ তৈরি হয়।
আমার মনে হয় মেয়েরা সব সময় ক্রাইসিসের মধ্যে থাকে। আসলে এই সময় মেনোপজের জন্য মেয়েদের মধ্যে নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। এই সময় মেয়েরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। সত্যি বলতে আমার মা, কাকিমারা এসব জিনিসকে এতটা গুরুত্ব দেননি। আমরা এসব নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি।

বিদ্যা বালান
বিদ্যা বালান

বিদ্যা আপনার মা হওয়ার খবর হামেশাই সামনে আসে। এ ধরনের খবরে বিরক্ত বোধ করেন?
এ ধরনের খবর কেন হয়, আমি বুঝতে পারি না। আমি একটু ঢিলেঢালা জামা পরলে চারদিকে রব ওঠে, আমি নাকি প্রেগনেন্ট। আমার একটু পেট দেখা গেলেও এ ধরনের খবর রটে। আমি তো কখনোই রোগা কিংবা পাতলা নই। তাই এসব খবরের কোনো মানে হয় না। তাহলে আপনি ধরে নিন, আমি সারা জীবনের জন্য প্রেগনেন্ট।

ছবিতে আপনি নিজের লুক নিয়ে তেমন সচেতন নন। এ ব্যাপারে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন?
না, একদমই না। অনেক দিন আগে আমি ‘আমেরিকান বিউটি’ নামে একটা সিনেমা দেখেছিলাম। সেই সিনেমার একটা লাইন আজও আমার স্মৃতিতে আছে। ওই ছবিতে বলা হয়েছিল, ‘আপনার কাজই আপনার সৌন্দর্য। আপনার লুক নয়।’ তবে বাড়িতে আমাকে সব সময় অনুভব করানো হয়েছে যে আমি সুন্দর। তাই আমার কখনো নিজেকে অসুন্দর বলে মনে হয়নি। ক্যামেরার সামনে কোনো চরিত্রকে তুলে ধরার জন্য আমার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো আমার অভিনয়। আমার সৌন্দর্য নয়।

বিদ্যা বালান
বিদ্যা বালান

‘মিশন মঙ্গল’ ছবিতে আপনাকে লুচি ভাজতে দেখা গেছে। বাড়িতে রান্না করার অভ্যাস আছে?
‘তুমহারি সুলু’ ছবিতেও অনেক লুচি ভেজেছি। পরিচালক চেয়েছিলেন শটের সময় যেন আমার লুচিগুলো ফুলে ওঠে। কিছু রিটেক হয়েছিল। কিন্তু লুচি ভাজা শিখে গিয়েছিলাম। আর প্রায় সব লুচি ফুলত। তবে বাড়িতে একদম রান্না করি না। রান্না করার কোনো ইচ্ছা আমার নেই। আর আমার মধ্যে সে প্রতিভাও নেই। তবে অন্যরা রান্না করেন আর তা চেটেপুটে খাই। এমনকি ‘মিশন মঙ্গল’ ছবির সেটে অক্ষয় কুমারকে দিয়ে তার বাড়ি থেকে খাবার আনিয়ে খেয়েছি।