ফিরছে 'টার্মিনেটর', ফিরছেন শোয়ার্জেনেগার

‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’ ছবিতে আরনল্ড শোয়ার্জেনেগার
‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’ ছবিতে আরনল্ড শোয়ার্জেনেগার

আবার টার্মিনেটর, আবার আরনল্ড শোয়ার্জেনেগার। আবারও প্রযোজনায় জেমস ক্যামেরন। ফিরছেন লিন্ডা হ্যামিলটন। ১ নভেম্বর মুক্তি পাবে ‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’। ইতিমধ্যে মুক্তি পেয়েছে ছবিটির একাধিক ট্রেলার। সর্বশেষ ২৯ আগস্ট প্রকাশিত ২ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের ট্রেলারটি দ্রুত সাড়া ফেলেছে দর্শকদের মধ্যে।

‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’ ছবির পোস্টার।
‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’ ছবির পোস্টার।

যাত্রা শুরু হয়েছিল ৩৫ বছর আগে, জেমস ক্যামেরনের হাত ধরে। বিজ্ঞান কল্পকাহিনির অ্যাকশন চলচ্চিত্র ‘টার্মিনেটর’ সিরিজের প্রথম ছবি ‘দ্য টার্মিনেটর’ মুক্তি পায় ১৯৮৪ সালে। ওই সময়ে ৬০ লাখ ডলার বাজেটের ‘টার্মিনেটর’ বানিয়ে প্রায় আট কোটি ডলারের ব্যবসা করেন জেমস ক্যামেরন। প্রথম ছবির ব্যাপক সাফল্যের রেশ ধরে ১৯৯১ সালে মুক্তি পায় সিরিজের দ্বিতীয় ছবি ‘টার্মিনেটর টু’। প্রথম ছবির চেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছিল ছবিটি।

ভিসিআর-ভিসিপির সেই যুগে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অনুরাগীদের মধ্যেও সাড়া ফেলেছিল ‘টার্মিনেটর টু’। আরনল্ড শোয়ার্জেনেগার নামটি তখন থেকে এ দেশের দর্শকের মধ্যে পরিচিতি পায়। এক যুগ বিরতির পর ২০০৩ সালে সিরিজের তৃতীয় ছবি ‘টার্মিনেটর থ্রি: রাইজ অব দ্য মেশিনস’ মুক্তি পায়। প্রথম তিনটি ছবিতেই কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন আরনল্ড শোয়ার্জেনেগার। তবে ২০০৯ সালে সিরিজের চতুর্থ ছবি ‘টার্মিনেটর স্যালভেশন’ আর পঞ্চম ছবির ‘টার্মিনেটর: জেনেসিস’ মুক্তি পেলেও তাতে অভিনয় করেননি হলিউডের এই জনপ্রিয় তারকা। আগের ছবিগুলো বক্স অফিসে ঝড় তুললেও ‘টার্মিনেটর স্যালভেশন’ বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। এর মধ্যে আরনল্ড শোয়ার্জেনেগার রাজনীতিতে নাম লেখান। ২০০৩ সালে নির্বাচিত হন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর হিসেবে।

এবার আবারও মিলবে গত শতকের আশি ও নব্বই দশকের সেই স্মৃতিজাগানিয়া ‘টার্মিনেটর’, ষষ্ঠ কিস্তি আসছে ‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’ নামে। নতুন গল্প, নতুন মোড়ক। পুরোনো কিছু মুখের সঙ্গে আছে নতুন মুখও। ছবির ট্রেলার এবং পোস্টারে নিশ্চিত করা হয়েছে আগামী ১ নভেম্বর মুক্তি পাচ্ছে। জেমস ক্যামেরনের গল্পে এবার ছবিটি পরিচালনা করেছে ‘ডেড পুল’ ছবির পরিচালক টিম মিলার।

১ নভেম্বর মুক্তি পাচ্ছে ‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’
১ নভেম্বর মুক্তি পাচ্ছে ‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’

ছবির অভিনেত্রী লিন্ডা হ্যামিল্টন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, অ্যাকশন দৃশ্যগুলো আগের তুলনায় দশ গুণ বড়। আর প্রযোজক ও সহ-চিত্রনাট্যকার জেমস ক্যামেরনের ভাষায়, ‘আগের দুটি মূল “টার্মিনেটর” অপেক্ষা এটা আরও বড়, আরও দারুণ। ছোট করে বলতে গেলে, এটি ভয়ানক, বিস্ময়কর!’ সব মিলিয়ে বলা যায়, নতুন পর্বে যুদ্ধটা আরও ভয়ংকর, আরও কঠিন হবে। যন্ত্রের হাত থেকে মুক্তির জন্য মানুষের এই যুদ্ধ শুধু চোখ ধাঁধিয়েই দেবে না, চিন্তা করতেও বাধ্য করবে।

পুরোনো কিছু মুখের সঙ্গে নতুন মুখও আছে ‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’ ছবিতে
পুরোনো কিছু মুখের সঙ্গে নতুন মুখও আছে ‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’ ছবিতে

গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে একই সঙ্গে দেখা যায় লিন্ডা হ্যামিল্টন এবং আরনল্ড শোয়ার্জেনেগারকে। তাঁরা এসেছিলেন মূলত ‘সিনেমাকন’-এর বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিতে। এই সম্মেলনে তাঁরা অনুরাগীদের সামনে তুলে ধরেন ‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’ ছবির ঝলক। সেদিন অনুষ্ঠানে শোয়ার্জেনেগার বললেন, ‘আমি আরও একবার খুবই উত্তেজিত, কারণ আমরা সবাই একসঙ্গে হতে পেরেছি। পরিচালক জেমস ক্যামেরন, লিন্ডা হ্যামিল্টন আর দলের পুরোনো সবাই ফিরে এসেছে।’ আরনল্ড শোয়ার্জেনেগার এরপর সবার সঙ্গে দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দেন। ৭১ বছর বয়সী এই হলিউড তারকা তারপর বলেন, ‘আমাদের এই যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮৪ সালে। এই ছবি আমার জীবন বদলে দিয়েছিল।’

জানা গেছে, উপমহাদেশে ছবিটির পরিবেশনার দায়িত্বে থাকবে ফক্স স্টার ইন্ডিয়া। সে সূত্রে ‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’ ভারতে ছয়টি ভাষায় মুক্তি পাবে। ইংরেজির পাশাপাশি থাকবে হিন্দি, তামিল, তেলেগু, কন্নড় ও মালয়ালম ভাষায় ছবিটি দেখার সুযোগ। বাংলায় আপাতত দেখার সুযোগ না থাকলেও চলচ্চিত্রের চিরন্তন ভাষায় ‘টার্মিনেটর: ডার্ক ফেট’ যে আমাদের দেশেও সাড়া ফেলবে, তা অনুমান করা যায়।