যাত্রার মানুষ ভিক্টর দানিয়েল আর নেই

ভিক্টর দানিয়েল। ছবি: সংগৃহীত
ভিক্টর দানিয়েল। ছবি: সংগৃহীত

ভিক্টর দানিয়েল ছিলেন বাংলাদেশের যাত্রাপালার শাহজাদা সরফরাজ, নবাব সিরাজউদ্দৌলা, ইব্রাহিম লোদী, ইলিয়াস শাহ, সিরাজ সাঁই, দুর্যোধন, সূর্য সেন। ছিলেন দেশের সমকালীন যাত্রাশিল্পের দিকপাল। আজ শুক্রবার দুপুরে নিভে গেল তাঁর জীবনপ্রদীপ। মারা গেলেন দেশের অন্যতম যাত্রাশিল্পী ও নির্দেশক ভিক্টর দানিয়েল নাগ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

আজ দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিক্টর দানিয়েল শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। প্রথম আলোকে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাঁর ছেলে ভিক্টর দানিয়েল রাজু। তিনি জানান, প্রয়াত শিল্পীকে সমাহিত করার জন্য গ্রামের উদ্দেশে রওনা করেছেন। আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামে ভিক্টর দানিয়েলের স্ত্রীর কবরে সমাহিত করা হবে তাঁকে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় ভিক্টর দানিয়েলের শবযাত্রা মাওয়া এলাকায় ছিল।

ভিক্টর দানিয়েল রাজু বলেন, ‘বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন বাবা। এর মধ্যে দুই দিন আগে তিনি স্ট্রোক করেন। তখন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং ডাক্তার চিকিৎসা চালিয়ে নিতে বলেন। পরে আজ দুপুরে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।’

ভিক্টর দানিয়েল ১৯৫০ সালের ১৫ জানুয়ারি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা পল দেনদ্রোনাথ নাগ এবং মা কামিনী বালা নাগ।

উদীচীর যাত্রাপালা ‘বিয়াল্লিশের বিপ্লব’ নির্দেশনা দিয়েছেন ভিক্টর দানিয়েল। ছবি: ফেসবুক থেকে
উদীচীর যাত্রাপালা ‘বিয়াল্লিশের বিপ্লব’ নির্দেশনা দিয়েছেন ভিক্টর দানিয়েল। ছবি: ফেসবুক থেকে

এই যাত্রাব্যক্তিত্বকে হারিয়ে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একেডেমি। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করে পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে উদীচীর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যৌথ শোকবার্তায় গভীর শোক প্রকাশ করেন। তাঁরা জানান, ভিক্টর দানিয়েলের চলে যাওয়ায় যাত্রাশিল্পের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। যাত্রাশিল্পের এই ক্রান্তিকালে তাঁর মতো মানুষের প্রয়োজন পূরণ হওয়ার নয়। বাংলাদেশের যাত্রাশিল্পের উন্নয়নে এই শিল্পী ও নির্দেশকের অবদান অনন্য। সম্প্রতি তাঁর নির্দেশনায় উদীচীর যাত্রাপালা ‘বিয়াল্লিশের বিপ্লব’ দেশের দর্শকদের কাছে প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করে।