শর্টফিল্ম, গানসহ শিল্পকর্ম আহ্বান

‘আর্ট অব টুগেদারনেস ২০২০’-এর কিউরেটর। ছবি: সংগৃহীত
‘আর্ট অব টুগেদারনেস ২০২০’-এর কিউরেটর। ছবি: সংগৃহীত

করোনাকালে ঘরে বসে তৈরি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি, গান ও আলোকচিত্র আহ্বান করেছে শিল্পীদের সংগঠন ‘টুগেদার উই ক্যান’ ও ‘মুক্ত আসর’। আর্ট ইন দ্য টাইম অব করোনা, পাওয়ার অব আর্ট ট্যাগ দিয়ে ‘আর্ট অব টুগেদারনেস ২০২০’ শিরোনামে একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সংস্থাটি। এতে আর্ট কিউরেটর হিসেবে যুক্ত হয়েছেন দেশ-বিদেশের প্রথিতযশা শিল্পী, সাহিত্যিক, চলচ্চিত্রকার, আলোকচিত্রীরা।

‘দূরে থেকেও জুড়ে থাকি, শিল্পের শক্তিতে’ স্লোগান নিয়ে টুগেদার উই ক্যান তাদের এ উদ্যোগ সম্পর্কে জানিয়েছে, অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে সবাই। সবখানে যখন আতঙ্ক ও মৃত্যু বাড়ছে, তখন গৃহবন্দী জীবনে আনন্দ নিয়ে বাঁচতে শিল্পকে আশ্রয় করতে চায় তারা।

সংস্থাটির সহপ্রতিষ্ঠাতা অমিত সিনহা জানান, ‘মূলত গৃহবন্দী মানুষের মনোবল ধরে রাখতে মনের দাওয়াখানা খুলেছে টুগেদার উই ক্যান। আমরা বিশ্বাস করি, মনের সবচেয়ে বড় পথ্য হলো শিল্প। এই কঠিন সময়ে দূরে দূরে বসে আমরা শিল্পকর্ম সৃষ্টি করে সেগুলো একত্র করব। এই সৃষ্টিকর্মগুলো হয়ে থাকবে করোনাকালের ঐতিহাসিক শিল্প দলিল।’

এই প্ল্যাটফর্মে যে কেউ জমা দিতে পারবেন চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য, আলোকচিত্র, কার্টুন ও অলংকরণ। নিজের লেখা, সুর করা ও গাওয়া গান, যন্ত্রসংগীত, কবিতা, ছোটগল্প বা তিন মিনিটের চলচ্চিত্র। জমা হওয়া শিল্পকর্মগুলো বাছাই করবেন স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত গুণী শিল্পীরা। নতুন একটি ভোরে বেছে নেওয়া শিল্পকর্মগুলো নিয়ে হবে প্রদর্শনী। পাশাপাশি শিল্পকর্মগুলো প্রদর্শিত ও বিক্রি হবে অনলাইনে। বিক্রির অর্থ সাহায্য হিসেবে পৌঁছে দেওয়া হবে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে।

শিল্পকর্মের মাধ্যম হবে আলোকচিত্র, চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্য, কার্টুন ও অলংকরণ, গান, যন্ত্রসংগীত, সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার শব্দের ছোটগল্প, কবিতা, সর্বোচ্চ তিন মিনিটের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এ ছাড়া শিশুদের নিয়ে থাকবে ‘শিশু আঙ্গিনা’। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য শিল্পকর্মের বিষয়বস্তু হবে ‘জীবন তোমার আঙ্গিনায়’, ‘নতুন করে নতুন প্রভাতে’, ‘পরের প্রজন্মকে দিতে চাওয়া সেরা উপহার’। এ ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয় নিয়ে কাজ জমা দেওয়া যাবে। ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা, মনে মনে’, ‘আমরা সবাই এক’ ছাড়াও যেকোনো বিষয়ের ওপর শিল্পকর্ম জমা দিতে পারবে ১২ বছরের নিচের শিশুরা।

মৌলিক ও অপ্রকাশিত শিল্পকর্মটি ২৯ এপ্রিল রাত ১২টার আগে পাঠাতে হবে [email protected] ই–মেইলে। এতে অংশ নিতে পারবেন যেকোনো দেশের নাগরিক। যে কেউ যেকোনো শাখায় একাধিক শিল্পকর্ম পাঠাতে পারবেন। শিল্পকর্মের সঙ্গে নাম, বয়স, জাতীয়তা ও শিল্পীর ছবি সংযুক্ত করতে হবে। নির্বাচিত শিল্পকর্ম নিয়ে সপ্তাহব্যাপী একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। সেরা গল্প ও কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হবে বই। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, গান ও যন্ত্রসংগীত একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত হবে। জমা দেওয়া শিল্পকর্মগুলো কোনো প্ল্যাটফর্মে প্রকাশ করা যাবে না। উল্লেখ্য, এসব শিল্পকর্ম বিক্রি করে পাওয়া অর্থের ৭০ শতাংশ করোনা দুর্গত ব্যক্তিদের জন্য ব্যয় করা হবে, বাকি ৩০ শতাংশ শিল্পীর হাতে তুলে দেওয়া হবে।

চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্য কিউরেট করবেন শিল্পী শেখ আফজাল হোসেন, জামাল আহমেদ, কনকচাঁপা চাকমা, মোস্তফা পলাশ ও কলকাতার দেবদত্ত গাঙ্গুলী। আলোকচিত্র মাহমুদ রহমান, সাজ্জাদ হোসেন, তাহসিন রহমান, শাহাদাত পারভেজ, নাসিফ ইমতিয়াজ ও কলকাতার মালা মুখার্জি। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র কিউরেট করবেন নূরুল আলম আতিক, দীপংকর দীপন, কামাল বায়েজিদ, লিসা গাজী, মেসবাহ উর রহমান সুমন, কলকাতার অনির্বাণ চ্যাটার্জি ও অভিজিৎ চৌধুরী।

শিশু আঙ্গিনার কিউরেটররা হলেন আহসান হাবীব, সেলিনা হোসেন, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মোহাম্মদ আলী হায়দার, বন্যা মির্জা, নবনীতা চৌধুরী, মুনিরুল ইসলাম, লুৎফর রহমান রিটন ও কলকাতার স্মারক রায়। ছোটগল্প ও কবিতা বাছাই করবেন আনিসুল হক, রাশিদা সুলতানা, শাহজাহান সৌরভ, শুভাশিস সিনহা এবং কলকাতার সাদিক হোসেন ও অনির্বাণ মজুমদার। কার্টুন ও অলংকরণ কিউরেট করবেন সব্যসাচী হাজরা, মোর্শেদ মিশু, রিশাম শাহাব তীর্থ, কলকাতার উপল সেনগুপ্ত, কানাডা থেকে ওয়াহিদ ইবনে রেজা। সংগীতে শফি মণ্ডল, রাফা, কলকাতার উপল সেনগুপ্ত, গৌরব চ্যাটার্জি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাসেল আলী, যুক্তরাজ্য থেকে রাজা কাসিফ ও রুবাইয়াত জাহান।