‘শোলে’ থেকে ‘চুপকে চুপকে’, ধর্মেন্দ্রর আলোচিত ১০ সিনেমা কোনগুলো

ধর্মেন্দ্রর আলোচিত ১০ সিনেমা কোনগুলো। কোলাজ

ছয় দশকের অভিনয় জীবনে তিন শর বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন ধর্মেন্দ্র। অ্যাকশন, রোমান্টিক থেকে শুরু করে পর্দায় দেখা গেছে নানা বৈচিত্র্যময় চরিত্রে। এমনকি চলতি শতকে এসেও নানা নিরীক্ষাধর্মী ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ার থেকে আলোচিত দশ সিনেমা বেছে নেওয়া সহজ নয়। তবে হিট, সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত অভিনেতার আলোচিত ১০ সিনেমার তালিকা প্রকাশ করেছে ভারতের অনলাইন গণমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস। সেই প্রতিবেদন অবলম্বনে জেনে নেওয়া যাক প্রয়াত অভিনেতার ১০ সিনেমার কথা।

‘হকিকত’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

‘হকিকত’ (১৯৬৪)
ধর্মেন্দ্র এই সিনেমায় একজন সেনা কর্মকর্তার চরিত্রে আবেগপূর্ণ অভিনয় করেন। ভারত-চীন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত সিনেমাটিতে ধর্মেন্দ্র অভিনীত চরিত্রটি সাহস, ত্যাগ এবং মানবিক দিক ফুটিয়ে তোলে। চেতন আনন্দ পরিচালিত সিনেমাটিতে আরও ছিলেন বলরাজ সাহনি, সঞ্জয় খান, বিজয় আনন্দ।

‘অনুপমা’ (১৯৬৬)
হৃষিকেশ মুখার্জি পরিচালিত সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন ধর্মেন্দ্র, শর্মিলা ঠাকুর। ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে এটি হিন্দিতে সেরা ফিচার ফিল্মের পুরস্কার জেতে। ছবিটির ব্যাপক প্রশংসা করেন সমালোচকেরা। ছবিতে ধর্মেন্দ্রকে দেখা যায় শান্ত, সংবেদনশীল চরিত্রে, যা তাঁর ‘হি-ম্যান’ ইমেজের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

‘অনুপমা’য় ধর্মেন্দ্র। আইএমডিবি

‘ফুল অউর পাত্থর’ (১৯৬৬)
এই ছবিই ধর্মেন্দ্রকে প্রতিশ্রুতিশীল অভিনেতা থেকে সুপারস্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। ছবির শাকা চরিত্রটি ছিল কঠোরতা ও কোমলতার এক আশ্চর্য সমন্বয়। এই সিনেমার জন্য প্রথমবার ফিল্মফেয়ার মনোনয়ন পান ধর্মেন্দ্র।

‘সত্যকাম’ (১৯৬৯)
ধর্মেন্দ্রর চরিত্রটি ছিল নৈতিকতা ও সততার সঙ্গে মানবিক মূল্যবোধের মিশেলে তৈরি। এই ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রমাণ করে তিনি কেবল তারকা নন বরং অভিনেতা হিসেবেও আলোচনার দাবি রাখেন। নারায়ণ সান্যালের একই নামের বাংলা উপন্যাস অবলম্বনে হৃষিকেশ মুখার্জির ছবিটিতে আরও অভিনয় করেছেন শর্মিলা ঠাকুর, সঞ্জীব কুমার ও অশোক কুমার।

‘সীতা অউর গীতা’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

‘সীতা অউর গীতা’ (১৯৭২)
ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীর কেমিস্ট্রি দর্শকদের মন জয় করেছিল। রমেশ সিপ্পির সিনেমাটির কাহিনি লিখেছিলেন সেলিম-জাভেদ জুটি। রাহুল দেব বর্মণ গানগুলোর সুরকার ছিলেন। চলচ্চিত্রটি দুই যমজ বোনের কাহিনি নিয়ে, যারা জন্মের পর আলাদা হয়ে আলাদাভাবে বড় হয়, এই চরিত্রে হেমা মালিনী অভিনয় করেছিলেন।

‘জঙ্গু’ (১৯৭৩)
ধর্মেন্দ্রকে ছবিতে দেখা যায় অশোক রায় জঙ্গু চরিত্রে। প্রমোদ চক্রবর্তী পরিচালিত সিনেমাটিতে আরও ছিলেন হেমা মালিনী। ছবিতে ধর্মেন্দ্র অ্যাকশন দিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত হন, এ ছাড়া হেমা মালিনীর সঙ্গে তাঁর পর্দার রসায়ন নিয়েও বিস্তর চর্চা হয়।

‘শোলে’ সিনেমায় ধর্মেন্দ্র। আইএমডিবি

‘শোলে’ (১৯৭৫)
ধর্মেন্দ্রের করা সিনেমায় বীরু চরিত্রটি এখনো মনে রেখেছেন দর্শকেরা। কিছুদিন আগেই সিনেমাটি মুক্তির সুবর্ণজয়ন্তী পালিত হলো। বীরু চরিত্রটি ছিল বহুমাত্রিক; যেখানে হাস্যরস ও রোমাঞ্চ একত্র হয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। ধর্মেন্দ্র ও অমিতাভ বচ্চনের পর্দার রসায়ন এখনো চর্চায়। ‘শোলে’ শুধু একটি সিনেমা নয়; এটি এক অনুভূতি, যা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে একত্র করে।

আরও পড়ুন

‘চুপকে চুপকে’ (১৯৭৫)
এই সিনেমায় প্রফেসর পরিমল ত্রিপাঠি চরিত্রে কমেডি করতে দেখা যায় ধর্মেন্দ্রকে। হৃষিকেশ মুখার্জি সিনেমাটিতে তিনি বুদ্ধিমত্তা ও হাস্যরসের নিখুঁত সমন্বয় দেখান। এই সিনেমায় শর্মিলা ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর জুটি আজও মনে আছে অনেক দর্শকের। উপেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলীর গল্প ‘ছদ্মবেশী’ অবলম্বনে নির্মিত হয় সিনেমাটি।

‘চুপকে চুপকে’ সিনেমায় ধর্মেন্দ্র। আইএমডিবি

‘প্রতিজ্ঞা’ (১৯৭৫)
ধর্মেন্দ্রকে এখানে দেখা গেছে প্রতিশোধপরায়ণ এক ন্যায়পরায়ণ তরুণ হিসেবে। ছবিতে অ্যাকশন, আবেগ ও কমেডি সবই রয়েছে। দুলাল গুহ পরিচালিত সিনেমাটিতে আরও অভিনয় করেছেন হেমা মালিনী, অজিত, জনি ওয়াকার।

‘আপনে’ সিনেমায় ধর্মেন্দ্র ও সানি দেওল। আইএমডিবি

‘আপনে’ (২০০৭)
অনিল শর্মার সিনেমাটিকে ধর্মেন্দ্রর পরের দিকের ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সিনেমা বলা হয়। এখানে তিনি অভিনয় করেন এক প্রবীণ বক্সারের চরিত্রে। সিনেমাটিতে ছিলেন তাঁর দুই সন্তান সানি ও ববি দেওলও।