ধর্মেন্দ্রকে বিয়ের পর বিপর্যয়, বি গ্রেড সিনেমাও করতে হয়েছিল হেমাকে

হেমা মালিনী। আইএমডিবি

ক্যারিয়ারের সেরা সময়টিতেই জীবনের সবচেয়ে বড় সংকটে পড়েছিলেন হেমা মালিনী। ১৯৮০ সালে ধর্মেন্দ্রকে বিয়ে করার পর যখন ব্যক্তিগত জীবনেও স্বস্তি ফিরছিল, ঠিক তখনই সামনে আসে বিশাল আর্থিক বিপর্যয়। এক সাক্ষাৎকারে ও জীবনীগ্রন্থে উঠে এসেছে—এই সংকট টেনে নিয়ে গিয়েছিল পুরো ১০ বছর, যা হেমা নিজের জীবনের ‘সবচেয়ে খারাপ সময়’ বলে উল্লেখ করেছেন।

ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনী। ছবি: এক্স থেকে

বিয়ের পরই চরম আর্থিক বিপর্যয়
সত্তরের দশকে ধারাবাহিক হিটের পর হেমা মালিনী ছিলেন বলিউডের শীর্ষ তারকা। তাঁর ক্যারিয়ার ও আয়রোজগার সামলাতেন মা–বাবা—জয়া চক্রবর্তী ও ভি এস রামানুজাম চক্রবর্তী। ১৯৮০ সালের শুরুর দিকে হঠাৎ জানতে পারেন, সরকারের কাছে তাঁর ১ কোটি রুপি আয়কর বাকি। সেই সময় অভিনেতারা কোটি টাকার আয় করতেন না, তাই তারকার জন্যও এই অঙ্ক ছিল ভয়াবহ।

হেমার জীবনী ‘হেমা মালিনী: বিয়ন্ড দ্য ড্রিম গার্ল’ বইটিতে লেখক রাম কমল মুখার্জি লিখেছেন, ‘এই কঠিন সময়ে ধর্মেন্দ্র সাহায্য করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু হেমা তা একেবারেই নেননি। হেমার মতে, তাঁর মা কর দেওয়ার ব্যাপারে বেশ গাফিলতি করতেন, যদিও বাবা বারবার সতর্ক করতেন।’

সিনেমার দৃশ্যে হেমা মালিনী ও ধর্মেন্দ্র। আইএমডিবি

বাবার মৃত্যুর পরই পুরো পরিস্থিতি স্পষ্ট হয়। হেমা বলেন, ‘বাবার মৃত্যুর পর আমরা বুঝলাম বছরের পর বছর ধরে আমরা এক বিশাল আর্থিক জটিলতায় জড়িয়ে গেছি। প্রচুর বকেয়া কর পরিশোধ করতে হতো।’

বড় ব্যানার হাতছাড়া, ‘বি গ্রেড’ ছবিতে নামতে হলো
এই বিপদ কাটাতে হেমার দরকার ছিল দ্রুত অনেক টাকা। আর অভিনেত্রীর কাছে দ্রুত আয়ের সবচেয়ে সহজ উপায়—অধিকসংখ্যক সিনেমা করা। কিন্তু সে সময় বড় ব্যানারগুলো তাঁকে নেওয়ার ঝুঁকি নিতে চাইছিল না। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁকে করতে হয় অনেক ‘বি গ্রেড’ সিনেমা।

ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনী। ছবি: এক্স থেকে

হেমার কথায়, ‘এটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ সময়। প্রায় ১০ বছর চলেছিল। ঋণ শোধ করতে হতো, আর ওই ছবিগুলো ছাড়া কোনো পথ ছিল না। নাচের শো করতাম, কিন্তু বড় টাকা আসত সিনেমা থেকেই।’

এই সময়েই তিনি দুই মেয়ের মা—ঈশা ও আহানা হয়ে উঠেছেন। ঈশা পরে জানান, শিশুকালে তিনি দেখতেন মা ঘরে খুব কম সময় থাকেন। পরে পুরোনো কিছু ছবি দেখে কারণ জিজ্ঞেস করায় হেমা তাঁকে জানান সেই সময়কার আর্থিক দুঃসময়ের কথা। আটের দশকের শেষ দিকে হেমা প্রযোজনা ও পরিচালনার দিকেও ঝুঁকেছিলেন।

আরও পড়ুন

ধর্মেন্দ্র-হেমার সম্পর্ক আর পরের ঘটনাপ্রবাহ
১৯৭০ সালে ‘শরাফত’ ছবিতে প্রথম একসঙ্গে কাজ করা থেকে ধর্মেন্দ্র-হেমার সম্পর্ক বলিউডের সবচেয়ে আলোচিত প্রেমকাহিনিগুলোর একটি। ধর্মেন্দ্র তখন প্রকাশ কৌরকে বিয়ে করে সংসার করছিলেন। তবু নানা বিতর্ক পেরিয়ে অবশেষে ১৯৮০ সালে বিয়ে করেন হেমা ও ধর্মেন্দ্র।
গত ২৪ নভেম্বর মুম্বাইয়ে ৮৯ বছর বয়সে মারা যান ধর্মেন্দ্র।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অবলম্বনে