ভয় দেখাতে চান? কাজলকে ডাকুন
আবার ‘মা’-এর ভূমিকায় কাজল। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে এই বলিউড অভিনেত্রীর ছবি ‘মা’। ছবিটি বক্স অফিসে সাফল্য পেয়েছে, পাশাপাশি সমালোচকদের মনও জিতেছে এই পুরাণভিত্তিক ভৌতিক কাহিনি। তবে ‘মা’ ছবির সবচেয়ে বড় সম্পদ কাজল নিজেই। ছবির প্রায় পুরো ভার ছিল তাঁর কাঁধে। সেই দায়িত্ব তিনি কতটা দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছেন, সেটা দর্শকই বলে দিচ্ছেন।
আগেও ‘সালাম ভেঙ্কি’, ‘হেলিকপ্টার এলা’তে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন কাজল। ‘মা’ ছবির ‘মা’ ঠিক কতটা আলাদা, সে প্রশ্ন দিয়েই শুরু হলো মুম্বাইয়ের সান অ্যান্ড স্যান্ড হোটেলে চার সাংবাদিকের সঙ্গে তাঁর আড্ডা। কাজল বলেন, ‘প্রত্যেক মায়েরই এক চিন্তা—সন্তান যেন বিপদে না পড়ে। সন্তানের সুরক্ষায় পৃথিবীর সব শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত থাকেন মা। আমি মনে করি, একজন মায়ের নিজের প্রতি বিশ্বাস থাকা জরুরি। এ ছবিতে আমি এক শক্তিশালী মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। “সালাম ভেঙ্কি”তে ছেলেকে মরণব্যাধি থেকে বাঁচাতে লড়াই ছিল, আর “মা” ছবিতে মেয়েকে অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষার জন্য লড়েছি।’
এ চরিত্রে নিজেকে মানিয়ে নিতে খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয়নি, জানান কাজল। তাঁর কথায়, ‘২২ বছর ধরে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করছি। ফলে শরীরী ভাষা, অভিব্যক্তি, আবেগ—সবই সহজাত হয়ে গেছে। আমাকে শুধু হরর ঘরানায় নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়েছে। পরিচালক বিশাল ফুরিয়ার ওপর আমার সম্পূর্ণ আস্থা ছিল। হরর ঘরানায় ওনার দৃষ্টিভঙ্গি একেবারেই আলাদা।’
‘মা’ ছবিতে জাদুটোনা আর অলৌকিক সব বিষয় উঠে এসেছে। কাজল নিজেও এসব একেবারে উড়িয়ে দেন না। তাঁর ভাষায়, ‘আপনি যদি আলোয় বিশ্বাস করেন, তাহলে অন্ধকারেও কিছুটা বিশ্বাস রাখতে হবে। ভালো যদি মেনে নেন, তবে মন্দকেও মানতেই হবে। কারণ, মন্দ না থাকলে ভালোকে উপভোগ করা যায় না। জীবনের ভারসাম্য রক্ষায় এটার প্রয়োজন আছে।’
হরর ছবিতে অভিনয় করলেও ব্যক্তিগত জীবনে এ ধরনের ছবি দেখতে ভালোবাসেন না কাজল। মজা করে বলেন, ‘কারও যদি কাউকে ভয় দেখাতে হয়, আমায় ডাকতে পারেন। বিনা মূল্যে ভয় দেখিয়ে দেব। আমার মা দুটি ভৌতিক ছবিতে অভিনয় করেছেন, কিন্তু আমি সাহস করে সেগুলো এখনো দেখিনি। আমি যে “মা” ছবিটা দেখতে পেরেছি, সেটাই আমার জন্য বড় ব্যাপার।’
ছবির কাহিনি পুরাণভিত্তিক হওয়ায় কাজলের আগ্রহও ছিল বাড়তি। ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন পুরাণকথা পড়তে ভালোবাসেন তিনি। ‘শুধু ভারতীয় পুরাণ নয়, ভাইকিংস, জিউস, গ্রিক পুরাণসহ অনেক কিছুই আমি পড়েছি,’ বলেন তিনি। ভবিষ্যতে পৌরাণিক ছবিতে অভিনয়ের আগ্রহও আছে। পর্দায় কোন চরিত্রে নিজেকে দেখতে চান? কাজল সঙ্গে সঙ্গেই বলেন, ‘আমি মহাভারতের কৃষ্ণ এবং রামায়ণের রাবণের চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। জানি, কেউ আমাকে ওই সব চরিত্রের প্রস্তাব দেবে না (হাসি)। কিন্তু চরিত্র দুটি দারুণ ইন্টারেস্টিং।’
বলিউডের তারকা দম্পতি কাজল ও অজয় দেবগন, তাঁদের দুই সন্তান। সন্তানদের বিষয়ে কে বেশি কঠোর? হাসতে হাসতে কাজল বলেন, ‘আমি বেশি স্ট্রিক্ট। ছোটবেলায় ওদের অনেক বকাঝকা করেছি। এখন একটু ছাড় দিই। মেয়েটা তো এখন প্রাপ্তবয়স্ক। তবে আমি আর অজয়—দুজনই খুব প্রটেকটিভ।’
কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে আমির খান বলেছিলেন, উচ্চতা কম হওয়ায় ক্যারিয়ারের শুরুতে হীনম্মন্যতায় ভুগতেন। এমন কিছু কাজলেরও ছিল কি না—এ প্রশ্নে কাজলের জবাব, ‘আমি আমার কোনো খামতিকে কখনো গুরুত্ব দিইনি। আমি জানি, সবাই কিছু না কিছু নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেন। কিন্তু আমি বরাবরই বিশ্বাস করেছি, কঠোর পরিশ্রম আর সততার কাছে সব খামতি চাপা পড়ে যায়।’