অভিনয় কাশিকার স্বপ্ন নয়, ভবিতব্য
টি-সিরিজের মিউজিক ভিডিও ‘দিল পে জখম’ দিয়ে মাত্র ১৬ বছর বয়সে গ্ল্যামার–দুনিয়ায় পা রেখেছিলেন কাশিকা কাপুর। মডেলিংয়ের জগতে তিনি ইতিমধ্যেই পরিচিত মুখ। প্রথম চলচ্চিত্র ‘আয়ুষ্মতী গীতা ম্যাট্রিক পাস’-এ অভিনেত্রী হিসেবে নজর কাড়েন, প্রশংসিত হয় তাঁর অভিনয়। এবার তেলেগু ছবি ‘এলওয়াইএফ: লাভ ইয়োর ফাদার’ দিয়ে দক্ষিণ ভারতীয় ছবির জগতে পা রেখেছেন কাশিকা। এ ছবির জন্য শতাধিক মেয়ের অডিশন নেওয়া হয়েছিল, যাঁদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন কাশিকা।
তিনি জানান, অডিশনের রাতেই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু পথটা সহজ ছিল না। নিজের শুরুর দিনের কথা বলতে গিয়ে কাশিকা বলেন, ‘১৬ বছর বয়সে যখন ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলাম, তখন কিছুই জানতাম না। একেবারে অজ্ঞ ছিলাম, কিন্তু মনের মধ্যে ছিল জ্বলে ওঠা আগুন। প্রত্যাখ্যান আমার নিত্যসঙ্গী হয়ে গিয়েছিল। একটা ছবিতে সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরও বাদ পড়েছিলাম।
ছবিটা আমার খুব কাছের ছিল। সেদিন স্নানঘরে গিয়ে শাওয়ারের তলায় দাঁড়িয়ে অবিরত কেঁদেছিলাম। সেই দিনগুলোই আজ আমাকে গড়েছে, মনোবল তৈরি করেছে। জীবনের ছোট ছোট জিনিসেরও মূল্য বুঝতে শিখিয়েছে। এখন আর ভাবি না কতটা লড়াই করে কাজটা পেয়েছি। কারণ, অভিনয় আমার স্বপ্ন নয়, এটাই আমার ভবিতব্য।’
‘পিংক’ ছবিতে তাপসী পান্নুর চরিত্রটা তাঁকে বরাবরই অনুপ্রাণিত করেছে। কাশিকা বলেন, ‘আমি এমন চরিত্রে অভিনয় করতে চাই, যেগুলো আমাকে ভাবায়, চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। চরিত্র যদি বাস্তবিক না লাগে, তাহলে সেটা আমি করি না। গল্পে যদি গভীরতা থাকে, তবেই সেটা আমাকে টানে। আমি এখানে শুধু আলোচনায় আসার জন্য আসিনি, আমি এসেছি প্রভাব ফেলতে।’
অভিনয়ের শুরুতে বাবার একটু দ্বিধা ছিল জানিয়ে কাশিকা বলেন, ‘বাবা তখন একটু রক্ষণশীল ছিলেন। চাইতেন, আমি যেন বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু মা প্রথম দিন থেকেই আমার ভেতরের আগুনটা দেখেছিলেন।
তাঁর নিরন্তর সমর্থন আমাকে সাহস জুগিয়েছে। ধীরে ধীরে বাবা আমার নিষ্ঠা আর পরিশ্রম দেখেছেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অডিশনের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা দেখেছেন। আজ বাবা আমার সবচেয়ে বড় চিয়ারলিডার। মা-বাবা দুজনই এখন আমার পাশে গর্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। মনে হয়, গোটা দুনিয়াই জয় করে ফেলেছি।’
২০০২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন কাশিকা কাপুর। অভিনয়ে দক্ষতা বাড়াতে তিনি মুম্বাইয়ের জেফ গোল্ডবার্গ স্টুডিওতে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ নেন। পরে নিউইয়র্ক ফিল্ম একাডেমিতে এক বছরের কোর্স করেন।
আন্তর্জাতিক জনপ্রিয় ভিডিও গেম ‘ফ্রি ফায়ার’-এ ‘মোকো’ চরিত্রের জন্য কাশিকা ভারতীয় মুখ হিসেবে পরিচিতি পান। এই চরিত্রের চেহারা ও অভিব্যক্তির জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে তাঁকে বেছে নেওয়া হয়।