জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল কোনটি, আমির বললেন...
কিরণ রাওয়ের সঙ্গে আমির খানের বিচ্ছেদ হয়েছে তাও প্রায় চার বছর হয়ে গেছে। রিনা দত্তের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর কিরণের সঙ্গে ঘর বাঁধেন অভিনেতা। ষোলো বছরের দাম্পত্য জীবন তাঁদের। অনেকের কাছে আদর্শ যুগল ছিলেন আমির-কিরণ। কেন হলো তাঁদের বিচ্ছেদ? সম্প্রতি রাজ সামানির পডকাস্টে হাজির হয়ে এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন অভিনেতা।
আমির খান অকপট বলেন, রিনাকে বিয়ের সিদ্ধান্ত ছিল একেবারেই হঠকারী। বর্তমানে তিনি গৌরি স্প্র্যাটের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন। তবে অভিনেতা জানান, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখেছেন তিনি। মাত্র ২১ বছর বয়সে রিনাকে বিয়ে করেছিলেন আমির, সে সময় রিনার বয়স ছিল ১৯। তখনই অভিনয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেছেন আমির, আর তাঁদের বিয়ের বিষয়টি একেবারে গোপন রেখেছিলেন দুজন।
জীবনে সবচেয়ে বড় কোনো আফসোস আছে কি না, এমন প্রশ্নে আমির বলেন, ‘ভুল তো অনেক করেছি। একটা নয়। রিনা আর আমি খুব তাড়াতাড়িই বিয়ে করে ফেলেছিলাম। আমি তখন ২১, ও ছিল ১৯। আসলে, আমি যেদিন আইনিভাবে বিয়ে করতে পারতাম, সেদিনই করেছি; ১৮ এপ্রিল।’
আমির আরও বলেন, ‘আমরা একে অপরকে চেনার সুযোগই ঠিকমতো পাইনি, মাত্র চার মাসের পরিচয়। ভালোবাসতাম খুব, কিন্তু এখন ফিরে তাকালে মনে হয়, তখন একটু ভেবে নেওয়া উচিত ছিল। ওই বয়সে অনেক কিছুই বোঝা যায় না, আবেগে অনেক কিছু করে ফেলা হয়।’ তবে সবটা শুধুই ভুল ছিল, এমন ভাবনায় বিশ্বাসী নন আমির।
তাঁর ভাষায়, ‘রিনার সঙ্গে আমার জীবনটা খুব ভালো কেটেছে। এটা ভাববেন না, আমি বলছি রিনাকে বিয়ে করাটা ভুল ছিল। আমি বলছি, সময়টা হয়তো সঠিক ছিল না। রিনা দারুণ একজন মানুষ। আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা আছে, ভালোবাসাও আছে। তবে আমি মনে করি না, এত ছোট বয়সে কারও এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, তাও আবার এমন তাড়াহুড়ো করে।’
পডকাস্টে আমির আরও বলেন, ‘এটা শুধু একটা উদাহরণ। বাস্তবে আমি জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার ইরা আর জুনায়েদকে পেয়েছি ওই বিয়ের মাধ্যমেই। আমি ও রিনা ১৬ বছর একসঙ্গে কাটিয়েছি। কেউ চাইলে একে ভুল বলতে পারেন, কিন্তু আমি মনে করি, ওটা না হলে আজ আমি এখানে থাকতাম না।’
আমির ও রিনার বিচ্ছেদের একটি বড় কারণ নিয়েও কথা বলেন তিনি। ‘আমি তখন সিনেমায় ডুবে ছিলাম। সেটাই ছিল রেড ফ্ল্যাগ। আমি একপ্রকার কাজের নেশায় বুঁদ ছিলাম,’ বলেন আমির।
এর আগের এক সাক্ষাৎকারে আমির জানিয়েছিলেন, কীভাবে তাঁরা পালিয়ে গিয়ে গোপনে বিয়ে করেছিলেন। রিনাকে আমি কোর্টে বিয়ে করি, মাত্র তিনজন সাক্ষী ছিল।
দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে আমির জানান, কিরণের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে আবেগ নাকি শেষ হয়ে আসছিল।
অভিনেতা জানান, তাঁর অহংবোধ তাঁর আবেগের বহিঃপ্রকাশে বাধা দেয়। তিনি কিরণের প্রতি এতটাই আবেগহীন হয়ে পড়েন যে তাঁর থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে নেন। আমিরের কথায়, ‘কিরণ সব ঠিক করার চেষ্টা করে, কান্নাকাটি করে। কিন্তু আমি এতটাই বিচ্ছিন্ন বোধ করতাম, যেন চারপাশে ইস্পাতের আবরণ আমার। সারা জীবনের জন্য আবেগহীন হয়ে পড়ছিলাম।’
আমিরকে সামনে দেখা যাবে ‘সিতারে জমিন পার’ সিনেমায়।