এখনো কাজ থেকে ফিরলে মা নিজের হাতে খাইয়ে দেন: বিজয় দেবরাকোন্ডা

‘অর্জুন রেড্ডি’ তে বিজয়
ছবি : আইএমডিবি

‘অর্জুন রেড্ডি’ দিয়ে দক্ষিণ ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় তারকায় পরিণত হন বিজয় দেবরাকোন্ডা। এরপর ‘গীতা গোবিন্দাম’ ও ‘ডিয়ার কমরেড’ দিয়ে নিজের জায়গা আরও পাকাপোক্ত করেন। দক্ষিণের পর এবার উত্তর জয় করতে নেমে পড়েছেন বিজয়। আগামীকাল শুক্রবার মুক্তি পাবে তাঁর বহুল প্রতীক্ষিত প্যান ইন্ডিয়া ছবি ‘লাইগার’। বলিউডে পা রাখার আগেই বিজয়ের জনপ্রিয়তা অবাক করার মতো। বিশেষ করে তাঁর নারী ভক্তের সংখ্যা হু হু করে বেড়েই চলেছে। মুম্বাইয়ের এক পাঁচতারা হোটেলে বিজয় দেবরাকোন্ডার মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি। সম্প্রতি সারা আলী খান ও জাহ্নবী কাপুর অকপটে জানিয়েছেন বিজয়ের প্রতি তাঁদের ‘ক্রাশ’–এর কথা।

ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় তারকায় পরিণত হন বিজয় দেবরাকোন্ডা
ছবি : সংগৃহীত

সাক্ষাৎকারের শুরুতে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করতেই এই দক্ষিণি তারকা লাজুক হাসি হেসে বলেন, ‘যখন কেউ ভালোবাসা প্রকাশ করে, তখন নিশ্চয় ভালো লাগে। ওরা দুজনই খুব মিষ্টি মেয়ে। দুজনের সঙ্গেই দেখা হয়েছে।’ বিজয়ের এই বিপুল জনপ্রিয়তার রহস্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে, এর পেছনের রহস্য জানা নেই। যেখানেই যাই, সেখানেই সবার ভালোবাসা পাই। আমাকে জড়িয়ে ভক্তরা ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠেন। আমার চোখেও জল চলে আসে। মেয়েরা আমার নামে ট্যাটু বানায়। ভারতের যে শহরেই গিয়েছি, আমার নাম ধরে চিৎকার করতে দেখেছি। এসব দেখে আমার মা আবেগে কেঁদে ফেলেছিলেন। আমি মনে করি, এসব ওপরওয়ালার আশীর্বাদ ছাড়া আর কিছু নয়।’

‘লাইগার’–এর একটি দৃশ্যে বিজয় দেবারকোন্ডা ও
ছবি : আইএমডিবি

পুরী জগন্নাথ পরিচালিত ‘লাইগার’-এ বিজয়ের চরিত্রটি অ্যাকশন হিরোর। ছবিতে তাঁর বিপরীতে আছেন অনন্যা পান্ডে। সিনেমা ও ব্যক্তিজীবনে বিজয়ের ‘লাইগার’ কে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রির “লাইগার” আমিই। জীবনের “লাইগার” হলেন মা–বাবা। বাবা আমাকে জীবনে চলার শিক্ষা দিয়েছেন। মায়ের ভালোবাসা সব সময় আমার সঙ্গে আছে। এখনো কাজ থেকে ফিরলে মা নিজের হাতে খাইয়ে দেন।’

বিজয় দেবরাকোন্ডা
ছবি : সংগৃহীত

কথায়–কথায় বিজয় জানান, তিনি আধ্যাত্মিক চেতনায় ভীষণভাবে বিশ্বাসী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি আধ্যাত্মিক চেতনায় বিশ্বাস করি। মা আমার চেয়েও বেশি। আসলে ছোট থেকে আশ্রমে বড় হয়েছি। ভোর সাড়ে পাঁচটায় উঠে পড়তে হতো। প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় ভজন গাইতে হতো। বরাবরই পুজো পাঠ করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে অসুস্থ হয়েছিলাম। মা হাতে একটা কালো সুতা বেঁধে দিয়ে খুলতে নিষেধ করেছিলেন। তবে এসবে আমার বিশ্বাস নেই। তাই খুলে ফেলেছিলাম। ছবির প্রচারের একটা ভিডিওতে মা দেখেন, হাতের কালো সুতাটা নেই। সেদিন রাতেই ফোন করে বকাবকি করেন। আবার বাধ্য হয়ে কালো সুতাটা পরতে হয়েছে (সশব্দ হেসে)।’

‘লাইগার’–এ বিজয়
ছবি : আইএমডিবি

আড্ডার শেষ বেলায় উঠে আসে বিজয়ের আকাশছোঁয়া তারকাখ্যাতি প্রসঙ্গ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জীবনে কোনো কিছুই স্থায়ী নয়। সবকিছুই ক্ষণস্থায়ী। স্টারডমও তা–ই। মানুষ সবাইকে ভুলে যায়, একদিন আমাকেও ভুলে যাবে।’ বিজয় জানান যে অভিনয়ে আসার পেছনে অর্থই ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় প্রেরণা। এ নিয়ে কোনো লুকোছাপা না করে তিনি বলেন, ‘প্রচুর অর্থ কামাতে আর সম্মান পেতেই অভিনয়ে আসা। মা সোনার অলংকার পরতে খুব ভালোবাসেন। মাকে দেখেছি অন্যের থেকে ধার নিয়ে গয়না পরতে। কোনো অনুষ্ঠানে গেলে আমরা এক কোনায় চুপ করে বসে থাকতাম। প্রাপ্য সম্মান পেতাম না। এসব আমাকে ভাবাত। এখন আমি ভীষণ খুশি, মাকে একটা বাড়ি বানিয়ে দিয়েছি। মায়ের এটা স্বপ্ন ছিল।’

‘গীতা গোবিন্দাম’–এ রাশমিকা ও বিজয়
ছবি : আইএমডিবি

অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানার সঙ্গে বিজয়ের প্রেমের গুঞ্জন ফিল্মি পাড়ায় কান পাতলেই শোনা যায়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিজয় হেসে বলেন, ‘গুজব আমার ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে এসব নিয়ে আমি কথা বলতে ভালোবাসি না। আমি এমন এক পেশা বেছে নিয়েছি, যেখানে গোপনীয়তা বলে কিছু নেই।’

আরও পড়ুন