‘বরফি’র স্মৃতিচারণায় আবেগাপ্লুত প্রিয়াঙ্কা
নিজের অভিনীত আলোচিত সিনেমা ‘বরফি’ নিয়ে স্মৃতিকাতর হলেন বলিউড তারকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। ৯ আগস্ট ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বরফি নিয়ে শনিবার এক দীর্ঘ ও আবেগঘন পোস্ট দিলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। ১২ বছর আগে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে রণবীর কাপুরের সঙ্গে তাঁর অভিনয়, পরিচালক অনুরাগ বসুর সঙ্গে প্রথম কাজ এবং ‘ঝিলমিল’ চরিত্রে প্রস্তুতির নেপথ্যের নানা মুহূর্ত তুলে ধরেন তিনি।
প্রিয়াঙ্কা জানান, ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে নিউইয়র্কে ‘আনজানা আনজানি’–এর শুটিং চলাকালে রণবীর কাপুর তাঁকে ‘বরফি’ ছবির কথা বলেন। অনুরাগ বসু তাঁর প্রিয় পরিচালকদের একজন হওয়ায় ছবির প্রস্তাব পেয়ে না বলেননি। প্রথম সাক্ষাৎ হয় মুম্বাইয়ে, তাঁর বাসায়। সেদিন ইভেন্ট থেকে সদ্য ফেরা প্রিয়াঙ্কাকে ঝলমলে পোশাকে দেখে বসু বলেন, তাঁকে ঝিলমিল হিসেবে কল্পনা করতে পারছেন না। প্রিয়াঙ্কা বিষয়টি বুঝে পাঁচ দিনের ওয়ার্কশপে অংশ নেওয়ার সম্মতি দেন।
ওয়ার্কশপে তিনি অটিজম স্পেকট্রামের শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান, বই ও গবেষণাসামগ্রী পড়েন, ভিডিও দেখেন এবং প্রতিদিন নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন করেন। পরিচালকের নির্দেশে একপর্যায়ে তাঁকে কলার ধরে গালাগাল দিতে হয়, যা চরিত্রে প্রবেশে সাহায্য করে। ‘বেশ কয়েক সপ্তাহ পর অবশেষে ঝিলমিলের জন্ম হয়’, লিখেছেন তিনি।
প্রিয়াঙ্কার ভাষায়, ‘বরফি’—ঝিলমিলের অধিকাংশ দৃশ্যই ছিল ইমপ্রোভাইজড। পরিচালক শুধু ধারণা দিতেন, আর তাঁরা দুজন সেটি পর্দায় ফুটিয়ে তুলতেন। এই ছবির শুটিংয়ের সময়ই তাঁর বাবা শেষবারের মতো সেটে এসে দেখা করেছিলেন, যা আজও তাঁর কাছে আবেগের বিষয়। প্রিয়াঙ্কার বাবা অশোক চোপড়া ২০১৩ সালে মারা যান।
ছবির সিনেমাটোগ্রাফার রবি বর্মনের কাজকে তিনি ‘কবিতা’ আখ্যা দেন। প্রশংসা করেছেন প্রীতমের সংগীত, ইলিয়ানা ডি’ক্রুজের ‘শ্রুতি’ চরিত্রের সৌন্দর্য, রণবীর কাপুরের তারকাময় উপস্থিতি ও অনুরাগ বসুর মায়াময় গল্প বলার দক্ষতার।
দুই বছরের বেশি সময় ধরে বিরতিতে শুটিং হয় ছবিটির। মুক্তির আগে তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন না, দর্শক কেমন গ্রহণ করবেন।
কিন্তু মুক্তির পর দর্শকের ভালোবাসা সব প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যায়। ৮৫তম একাডেমি পুরস্কারে সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে ভারত থেকে পাঠানো হয়েছিল ‘বরফি’। পাশাপাশি ৫৮তম ফিল্মফেয়ারসহ ভারতের নানা পুরস্কারে সেরা ছবির স্বীকৃতি লাভ করে। প্রিয়াঙ্কার ভাষায়, ‘এটি আমার জীবনের অন্যতম মূল্যবান ছবি। এর সৃজনশীলতা, সহকর্মীদের সঙ্গে কাজের আনন্দ ও চ্যালেঞ্জ ভাগাভাগি করার স্মৃতি আজও ঠিক ততটাই সতেজ।’