এক্ষুনি কাজি ডাকেন, আজই ওদের বিয়ে দেব...
১৯৯৫ সালের মার্চ মাসের ঘটনা। সেই সময় মহাখালী ডিওএইচএসের ৩১ নম্বর রোডে থাকতেন ওমর সানী আর মৌসুমী থাকতেন ৩২ নম্বর রোডে। তখন তুমুল গুঞ্জন উঠেছিল ওমর সানী ও মৌসুমীর প্রেম-বিয়ে নিয়ে। কিন্তু তখনো তাঁরা বিয়ে করেননি। তবে দুই পরিবারের সদস্যরা এ গুঞ্জন সম্পর্কে জানতেন। তখন বিয়ে নিয়ে আগ্রহী হয়ে এগিয়ে এলেন মৌসুমীর নানি ও ওমর সানীর মা। সে ঘটনাও ছিল বেশ মজার।
মৌসুমীর শুটিংয়ে মাঝেমধ্যে তাঁর নানি আসতেন। এভাবেই ওমর সানীর মায়ের সঙ্গে মৌসুমীর নানির পরিচয়। এ পরিচয় থেকেই ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই দুই নায়ক–নায়িকার মা ও নানির মধ্যে নানা বিষয়ে কথা হতো। তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়া ভালো ছিল। তাঁরা ছেলে ও নাতনির প্রেমের গুঞ্জন শুনে সম্পর্ক জোড়া দিতে এগিয়ে আসেন। তত দিনে ওমর সানীর মা মৌসুমীকে ভীষণ পছন্দ করে ফেলেছেন। অন্যদিকে মৌসুমীর কাছে ওমর সানীর প্রশংসা করতেন তাঁর নানি। এভাবে দুই তারকার মধ্যে প্রেমটা আরও বেড়ে যায়।
এদিকে মৌসুমীর মা কখনোই চাইতেন না সিনেমার কেউ তাঁর মেয়েকে বিয়ে করুক। তিনিও একসময় রাজি হন। কারণ, মৌসুমীর নানিই ছিলেন দুই পরিবারের মূল মধ্যস্থতাকারী। তাঁকে পছন্দ করতেন সবাই। মৌসুমীর নানি তাঁর মেয়েকে, অর্থাৎ মৌসুমীর মাকে বিয়েতে রাজি করান। এর মধ্যে হঠাৎ একদিন সানীদের বাসায় মৌসুমীকে নিয়ে হাজির তাঁর নানি। মৌসুমীর নানি ওমর সানীর মাকে সরাসরি বলেছিলেন, ‘এক্ষুনি কাজি ডাকেন, আজই ওদের বিয়ে দেব।’ কাজি ডেকে সেদিনই বিয়ে হলো। দিনটা ছিল ১৯৯৫ সালে ৪ মার্চ।’
তবে মৌসুমী ও ওমর সানীর বিয়ের খবর গোপনই রয়ে গেল। অনেক দিন কেউ জানতেন না। কেন জানাননি—এ প্রসঙ্গে ওমর সানী প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘বিয়ের পর দুজনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, নিয়মিত শুটিং চালিয়ে যাব, তাই কাউকে জানাইনি।’ পরে অবশ্য ঘটা করে ১৯৯৫ সালের ২ আগস্ট তাঁরা বিয়ে করেন। সেই দিনটিও তাঁরা উদ্যাপন করেন।
গতকাল ছিল সেই ৪ মার্চ। তাঁদের বিয়ের ৩০ বছর। সেই দিনটি ওমর সানী ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘কীভাবে কেটে গেল ৩০ বছর টের পেলাম না, আমার ভালো লাগাটা একই জায়গায় আছে। দেরি হলো, কারণ আমার হোম মিনিস্টার আমেরিকার টাইমে আমাকে উইশ করলেন, তার জন্য ওয়েট করলাম। হ্যালো ফারদিন, ফাইজা।’
এই দম্পতির দুই সন্তান ফারদিন এহসান ও ফাইজা।