‘ছেলেরা বড় হলে আমার শার্ট-জুতা পরবে’, নায়ক জসীমের স্মৃতিচারণা নাসরিনের
চলতি বছরের ২৭ জুলাই জিমে হঠাৎ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান রক ব্যান্ড ওন্ড-এর ভোকালিস্ট, বেজিস্ট ও শব্দপ্রকৌশলী এ কে রাতুল। তিনি প্রয়াত চিত্রনায়ক জসীমের মেজ ছেলে। এই সংগীতশিল্পীর স্মরণে শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে আয়োজন করা হয় এক অনুষ্ঠানের। সেখানে রাতুলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি ট্রিবিউট ভিডিও প্রদর্শিত হয়। আয়োজনে জসীমের স্ত্রী চিত্রনায়িকা নাসরিন ও জসীমের দুই পুত্র সংগীতশিল্পী এ কে সামী এবং এ কে রাহুলসহ পরিবারের কাছের মানুষজন উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সন্তানদের নিয়ে নায়ক জসীমের স্মৃতি তুলে ধরেন তিনি।
মাত্র ৪৮ বছর বয়সে ১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মারা গেছেন জসীম। তখন বড় ছেলে সামীর বয়স আট, মেজ রাতুলের চার আর ছোট রাহুলের বয়স দুই বছর। জসীমের তিন ছেলে বাবার পথ ধরে অভিনয়ে নাম লেখাননি, কাজ করছেন সংগীতজগতে। এর মধ্যে রাহুল ‘ট্রেনরেক’ ব্যান্ডের গিটারিস্ট ও ‘পরাহো’ ব্যান্ডের ড্রামার, সামী যুক্ত আছেন ‘ওন্ড’ ব্যান্ডের সঙ্গে, রাতুলও এই ব্যান্ডেই যুক্ত ছিলেন। ছিলেন ‘ওন্ড’-এর ভোকালিস্ট ও বেজিস্ট।
সন্তানদের ক্যারিয়ার নিয়ে সব সময় ইতিবাচক ছিলেন জসীম। সন্তানদের ক্যারিয়ার নিয়ে স্ত্রীকে দেওয়া উপদেশে জসীম বলেছিলেন, ওরা ওদের ভবিষ্যৎ বেছে নেবে। নাসরিন বলেন, ‘ওনার একটাই কথা ছিল, ছেলেরা বড় হওয়ার পরে তুমি ওদের ফোর্স করবে না যে এটা হও, ডাক্তার হও বা ইঞ্জিনিয়ার হও। ওরা যেটাকে ভালো মনে করবে, যেটা ওরা পছন্দ করে, সেটাই করতে দিবা।’
সন্তানদের গানের প্রতি ঝোঁক বাবার থেকেই এসেছে বলে মনে করেন নাসরিন। তিনি বলেন, ‘ওরা মিউজিকটাই বেশি পছন্দ করে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, ওর আব্বু কিন্তু গান খুব পছন্দ করত। সব সময় গান-বাজনা নিয়ে থাকত, হয়তোবা ওখান থেকেই ওদের মধ্যে গানের বিষয়টা এসেছে।’
শুটিং শেষে সন্তানদের নিয়েই মেতে থাকতেন জসীম। তবে বেশির ভাগ সময়ই তাঁদের ঘুমে রেখে বের হতেন, আবার বাসায় ফিরে ঘুমে পেতেন। স্ত্রীকে প্রায়ই বলতেন দেখো, আমার ছেলেরা একদিন নাম করবে। স্মৃতিচারণা করে নাসরিন বলেন, ‘ওর আব্বু শুটিং থেকে এসে মাঝে মাঝে বলত, “আমি চাই যে আমার ছেলেরা যখন বড় হবে, তখন আমার এই শার্টটা বা স্যুটটা ওরা পরতে পারবে, এই জুতাটা পরবে।” দেখো, ওরা একদিন অনেক নাম করবে।’
অনুষ্ঠানে প্রয়াত মেজ ছেলে রাতুলকে নিয়ে বলতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন নাসরিন। বলেন, ‘ও সব সময় আমার সঙ্গে বেশি থাকত, আমাকে সব সময় সময় বেশি দিত। ওর কোনো তুলনা নেই, ও যে আমার কত প্রিয় আমি কী বলব! আমার বাবাটাকে দেখি না আজ কত দিন।’