‘কে যে আজ এই লেখা লিখছে, জয়া না বিলকিস, জানি না’
২০১১ সালের পয়লা বৈশাখেই মুক্তি পেয়েছিল ‘গেরিলা’। ছবিটি মুক্তির এক যুগ পূর্ণ হচ্ছে আজ। ‘গেরিলা’য় বিলকিস বানু চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন জয়া আহসান, সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জিতেছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও। ‘গেরিলা’র এক যুগ পূর্তিতে আজ দুপুরে ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন জয়া। লিখেছেন ছবিটি ও তাঁর চরিত্র নিয়ে নানা অনুভূতির কথা।
পোস্টের শুরুতেই জয়া আহসান লিখেছেন, ‘কিছু কিছু ছবি থাকে, অভিনয়জীবন জুড়ে যার বিস্তর প্রভাব, যা ভালো লাগার, মাঝে মাঝেই স্মৃতিতে উজ্জ্বল। কিন্তু কিছু ছবি অচিরেই জীবন হয়ে যায়। কিছু চরিত্রের হয়ে একটা অন্য জীবন বেছে নেওয়া যায়। এক যুগ আগে, এই দিনে মুক্তি পাওয়া, মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ পরিচালিত গেরিলা ছবিটি তেমনি একটি ছবি।
আর বিলকিস আমার কাছে তেমন একটি রক্ত–মাংসের চরিত্র। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আজ আমার দেশে স্বাধীনতার আলো হয়ে প্রতি বাঙালির মনে জ্বলছে। সেই মুক্তিযুদ্ধের এমন বাঙ্ময় পরিবেশনা, সত্যি আজও শিহরিত হই।’
১২ বছর আগে মুক্তি পাওয়া ছবিটির স্মৃতি কীভাবে এখনো তাঁর সঙ্গে রয়ে গেছে, তা জানিয়ে জয়া আরও লিখেছেন, ‘এই চলচ্চিত্রের অংশ হতে পারা আজ ১২ বছর পরও আমার জন্য বড় আপন এক অনুভূতি।
১২ বছরে সময় অনেক বদলেছে, ১২ বছরে প্রযুক্তির ঘোড়া দৌড়ে এগিয়ে গেছে অনেকটা পথ, কিন্তু অনুভূতির বিন্দু বিন্দুজুড়ে গেরিলা ছবির স্মৃতিগুলো আজও জীবন সমার্থক, এই অনুভূতির কোনো পরিবর্তন নেই।’
জয়া মনে করেন, বিলকিস বানু চরিত্রে উঠে এসেছিল মুক্তিযুদ্ধে অসংখ্য মেয়ের সাহসী অবদানের গল্প। উপন্যাসে এ চরিত্র তৈরি করেছিলেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, আর পর্দায় পরিচালক নাসির উদ্দীন ইউসুফ।
ছবিটি সৈয়দ শামসুল হক ও নাসির উদ্দীন ইউসুফের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা জানানোর উপলক্ষ ছিল উল্লেখ করে অভিনেত্রী লিখেছেন, ছবিটি একসঙ্গে ছিল তাঁর মুক্তিযোদ্ধা বাবার কাছে সামান্য ঋণ স্বীকার করা সুযোগও।
নিজের পোস্টে জয়া আরও লিখেছেন, ‘কে যে আজ এই লেখা লিখছে, জয়া না বিলকিস, জানি না, তবে এটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি, এই দুই সত্তার মাঝে দেশ নামক ভাবনাখানি মিলেমিশে এক মুগ্ধবোধ হয়ে আছে…।’
‘গেরিলা’কে তাঁর অভিনয়জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ছবি হিসেবেও উল্লেখ করেন জয়া আহসান, এ ছবিটিই তাঁকে টেলিভিশন ছেড়ে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করার সাহস দেয়।