যে কারণে ১২টি সিনেমার প্রস্তাব ফিরিয়েছেন কুসুম
একসময় নিয়মিতই বড় পর্দা ও ছোট পর্দায় দেখা যেত কুসুম শিকদারকে। ‘লাল টিপ’, ‘গহীনে শব্দ’ কিংবা ‘শঙ্খচিল’–এর মতো সিনেমায় অভিনয় করে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন দর্শকের মনে। অথচ সাম্প্রতিক সময়ের পর্দায় তাঁকে দেখা যায় খুবই কম। এতদিন এই ‘নীরবতা’ নিয়ে দর্শকের কৌতূহল কম ছিল না। অবশেষে বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন কুসুম শিকদার।
চলচ্চিত্র ও নাটকের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী সম্প্রতি চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে দীর্ঘ বিরতি, কাজের নির্বাচন ও ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করেন। গত বছর ‘শরতের জবা’ সিনেমা দিয়ে আবারও বড় পর্দায় ফিরলেও এরপর কুসুম শিকদারকে নতুন কোনো কাজে দেখা না যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে উপস্থাপকের প্রশ্ন ছিল—হঠাৎ করেই কি তিনি হারিয়ে গেছেন? জবাবে কুসুম শিকদার বলেন, ‘হারিয়ে গেলাম কোথায়? যদি কাজের কথা বলেন, তাহলে নাটক করতেই আমার আগ্রহ নেই এখন। সিনেমার অনেক প্রস্তাবই এসেছে। চাইলে অবশ্যই কাজ করতে পারতাম। হ্যাঁ বলে কাজে নেমে যাওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু আমি একটু খুঁতখুঁতে, একটু পারফেকশনিস্ট। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মনে হয়েছে কোথাও ঘাটতি আছে, বা যাঁরা বানাচ্ছেন, তাঁরা পুরোপুরি প্রস্তুত নন। তাই সেগুলো করা হয়নি।’
কুসুম শিকদার জানান, ‘শরতের জবা’ মুক্তির পর অন্তত ১২টি সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছেন। তবে সব কটি ফিরিয়ে দিয়েছেন। এর পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘আমি ধীরগতির মানুষ। ধীরে কাজ করি। আমার বিশ্বাস, ধীরলয়ে কাজ করলে মানটাও ভালো হয়। সিনেমার জন্য এক বছর খুব কম সময়। ‘শরতের জবা’ করতে আমার দুই বছর লেগেছে। আর লেখা ধরলে তো আরও বেশি সময় লাগে। মনমতো গল্প, প্রস্তুত প্রজেক্ট হলে অবশ্যই আমি করব।’
অনুষ্ঠানে নিজের রূপ ও ফিটনেস নিয়েও কথা বলেন ‘লাল টিপ’–এর অভিনেত্রী। কুসুম শিকদারের মতে, বাহ্যিক যত্নের পাশাপাশি ভেতরের পরিচর্যাই আসল।
তিনি বলেন, ‘আমি মন খুব সতেজ রাখার চেষ্টা করি। পারতপক্ষে মিথ্যে বলি না। কৃতজ্ঞ মানুষ হতে চেষ্টা করি। আমার ভেতরে প্রবলভাবে মুগ্ধ হওয়ার ক্ষমতা আছে, ভালোবাসার শক্তি আছে। এই বিষয়গুলো আমি লালন করি। আমার বিশ্বাস, ভেতরে যদি এগুলো থাকে, তাহলে সেটার প্রভাব বাইরেও পড়ে। মানুষকে সুন্দর রাখে।’
অভিনয় থেকে দূরে থাকা নয়, বরং নিজের মতো করে কাজের অপেক্ষায় থাকার কথাই বারবার উঠে আসে কুসুম শিকদারের কথায়। তিনি মনে করেন, পর্দায় নিয়মিত থাকা নয়—ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়াটাই তাঁর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।