৪২ দিন ‘পরাণ’ ৯ হলে, ২৩ দিন ‘হাওয়া’ ২১ হলে
অনেক বছর পর ঢাকার চলচ্চিত্রে সুদিন যেন ফিরে এসেছে। হলমুখী হচ্ছেন দর্শক। এই চিত্রই এখন দেখা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে। ঈদে মুক্তি পাওয়া রায়হান রাফির ‘পরাণ’ ছবিটি সপ্তম সপ্তাহে এসেও ৩৯টি প্রেক্ষাগৃহে, অন্যদিকে মেজবাউর রহমান সুমনের ‘হাওয়া’ ছবিটি চতুর্থ সপ্তাহে ৫৬টি প্রেক্ষাগৃহে চলছে। অল্পসংখ্যক হলে ছবি দুটি মুক্তি পেলেও পরের সপ্তাহ থেকে দর্শকের চাপে ছবি দুটির হলসংখ্যা বেড়েছে। তবে ছবি দুটি প্রথম দিন থেকে যে হলগুলোতে মুক্তি পেয়েছে, বেশির ভাগ হলে এখনো চলছে। বেশ কিছু হলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই হলগুলোতে আরও এক মাস ‘পরাণ’ ও ‘হাওয়া’ চলতে পারে।
প্রথম দিন মাত্র ১১টি হলে মুক্তি পায় ‘পরাণ’। সপ্তম সপ্তাহে এসেও এই ১১টির মধ্যে ৯টি হলে এখনো চলছে ছবিটি। তথ্যটি দিয়েছেন ছবির পরিবেশক সংস্থা অভি কথাচিত্র। তারা জানায়, পঞ্চম সপ্তাহে এসে খুলনার শঙ্খ ও পুরান ঢাকার আজাদ হল থেকে ‘পরাণ’ নেমে গেছে। বাকি নয়টি হলে এখনো প্রদর্শন অব্যাহত রয়েছে। হলগুলো হলো স্টার সিনেপ্লেক্স (বসুন্ধরা শপিং মল, ঢাকা), স্টার সিনেপ্লেক্স (সীমান্ত সম্ভার ধানমন্ডি, ঢাকা), স্টার সিনেপ্লক্স (সনি স্কয়ার, ঢাকা), ব্লকবাস্টার সিনেমাস (যমুনা ফিউচার পার্ক, ঢাকা), সিলভার স্ক্রিন (চট্টগ্রাম), লায়ন সিনেমাস (কেরানীগঞ্জ, ঢাকা), ঝুমুর (জয়দেবপুর), পূরবী (ময়মনসিংহ) ও চিত্রালী (খুলনা)।
ছবিটির পরিবেশক জাহিদ হাসান বলেন, ‘আগে দেখতাম ছবি মুক্তির দু-তিন সপ্তাহ পর দর্শকের আগ্রহ কমে যেত। কিন্তু “পরাণ” যতই দিন গেছে হল বেড়েছে। সাত সপ্তাহ পার হলেও এখনো নয়টি হলে টানা চলছে। এর আগে “ঢাকা অ্যাটাক” ছবিতে দেখেছি, প্রথম দিন থেকে পাঁচটি হলে প্রায় দুই মাস চলেছে ছবিটি।’ এই পরিবেশক আরও বলেন, ‘এখনো নতুন নতুন দর্শক আসছে ছবিটি দেখতে। অনেক দর্শক একাধিকবার দেখেছেন। জানতে পেরেছি, প্রথম দিন থেকে যে হলগুলোতে এখনো চলছে, দর্শকের আগ্রহের কারণে এই হলগুলোতে আরও এক মাস চলতে পারে ছবিটি।’প্রথম দিন থেকে ময়মনসিংহের পূরবী হলে চলছে ‘পরাণ’। হলের ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শুরুর দিন থেকে এই হলে এখনো চলছে ছবিটি। প্রথম ১০-১২ দিন প্রায় সব কটি শো হাউসফুল ছিল। এখনো সব কটি শো মোটামুটি যাচ্ছে। সেই “শিকারি’ ও ‘নবাব’ ছবির সময় আমরা এমন সেল দিতে পেরেছিলাম।’ এই ব্যবস্থাপক মনে করেন, আরও এক মাস ছবিটি দেখতে দর্শক হলে আসবেন।
অন্যদিকে ২৩টি হল দিয়ে ২৯ জুলাই মুক্তি পায় ‘হাওয়া’। দ্বিতীয় সপ্তাহে চট্টগামের সিনেমা প্যালেস ও সুগন্ধা হল থেকে নেমে যায় ছবিটি। ছবিটির পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দিন থেকে এখনো ২১টি হলে ‘হাওয়া’র প্রদর্শন চলছে। হলগুলো হলো ঢাকার মধ্যে স্টার সিনেপ্লেক্স (বসুন্ধরা), সীমান্ত স্কয়ার (ধানমন্ডি), বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর (বিজয় সরণি), এসকে টাওয়ার (মহাখালী), সনি স্কয়ার (মিরপুর), ব্লকবাস্টার সিনেমাস (যমুনা ফিউচার পার্ক), শ্যামলী সিনেমা হল (শ্যামলী), মধুমিতা (মতিঝিল), লায়ন সিনেমাস (কেরানীগঞ্জ)। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে সাভারের সেনা অডিটরিয়াম, নারায়ণগঞ্জের সিনেস্কোপ, ময়মনসিংহের ছায়াবাণী, গাজীপুরের উল্কা, চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিন। এ ছাড়া খুলনার শঙ্খ ও লিবার্টি। বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্স ও মম ইন, পাবনার রূপকথা, সিরাজগঞ্জের রুটস সিনে ক্লাব ও গ্র্যান্ড সিলেট সিনেপ্লেক্স।
ময়মনসিংহের ছায়াবাণী ও খুলনার শঙ্খ হলে প্রথম দিন থেকেই ‘হাওয়া’ চলছে। হল দুটির পরিচালক কামাল হোসেন বলেন, ‘এখনো ৫০ শতাংশ দর্শক পাচ্ছি। বহু বছর ধরে আমি হল চালাচ্ছি, এত দর্শক পাইনি। আশা করছি, এভাবে আরও চার সপ্তাহের বেশি সময় দর্শক পাব এই ছবিতে।’