আমি নিজে যা না, তা–ই হতে চাই

বাংলাদেশ টেলিভিশনে আজ রাতে দেখানো হবে ধারাবাহিক নাটক এখানে কেউ থাকে না। অনিমেষ আইচের রচনা ও পরিচালনায় ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন নওরিন হাসান জেনি

প্রশ্ন :

মাঝে একবার বলছিলেন, বাসার সবাই করোনায় আক্রান্ত...

সবাই এখন কোভিডমুক্ত। আমি ও আমার জামাই ছাড়া সবাই আক্রান্ত হয়। সবার কেয়ার করে নিজেও সাবধান থাকতে হয়।

নওরিন হাসান জেনি
ছবি : জেনির সৌজন্যে

প্রশ্ন :

শুটিং শুরু করেছেন কি?

এর মধ্যে তিন দিন ঢাকায় এখানে কেউ থাকে নার শুটিং করলাম। ১৬ অক্টোবর থেকে মধুপুর যেতে হবে। এই মুহূর্তে টেলিভিশনে আমার একটাই ধারাবাহিক চলছে। অনিমেষ ভাইয়ের সঙ্গে এবারই প্রথম কাজ করা। খুবই সারপ্রাইজিং যে আমার জীবনের প্রথম অভিনয়ের প্রস্তাবও তাঁর কাছ থেকে পেয়েছিলাম, তখন আমি স্কলাস্টিকায় ক্লাস এইট কি নাইনে। ২১ ফেব্রুয়ারির বিশেষ নাটক ছিল, কিন্তু করিনি। না করার কারণ, আমার চরিত্রটা অতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।

প্রশ্ন :

অবশেষে কীভাবে হলো?

গত দেড়-দুই বছরে অনিমেষ আইচের একাধিক নাটকে অভিনয়ের প্রস্তাব পাই। এবার আর দিনক্ষণ মেলাতে পারছিলাম না। তবে এই নাটকের স্ক্রিপ্ট লেখার আগেই তিনি আমার সম্মতি নেন। বলেছিলেন, ‘জেনি তুমি যদি অভিনয় করো আমি চরিত্রটি একভাবে লিখব, না করলে ওই ভাবে লিখব না।’ আমি খুব সারপ্রাইজ হইছি, একটা মানুষের সঙ্গে যেখানে কোনো দিন কাজ হয়নি, তিনিই বলছেন, আমি করলে একভাবে লিখবেন, না করলে চরিত্রটা লিখবেন না, দ্যাটস ভেরি সুইট। আমি টাচড হইছি। রাজি না হয়ে উপায় ছিল না।

প্রশ্ন :

কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

অনেক দিন পর মনে হয়েছে, আমরা আগের মতো সুন্দর পরিবেশে নাটকের শুটিং করছি। মেকআপ রুম থেকে শুরু করে সব জায়গায় কথা বলছি নাটকের চরিত্র নিয়ে। এটা হওয়ার কারণ হয়তো ভালো সব অভিনয়শিল্পী পরিচালক কাস্ট করেছেন। সবার মধ্যে অন্য রকম উদ্দীপনা কাজ করেছে। সব ভালো অভিনয়শিল্পী থাকলে অভিনয় ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। নিজের মধ্যে আরও ভালো কাজ করার তাড়না থাকে। পরিচালক তো ভীষণ পরিশ্রমী। অনেককে দেখি, ধারাবাহিক নাটকের শুটিংয়ে একটা গা ছাড়া ভাব নিয়ে থাকেন, কিন্তু এখানে তেমন কিছু ছিল না। তিনি ভীষণ সিরিয়াস। সবাই বেশ আন্তরিক।

নওরিন হাসান জেনি
ছবি : জেনির সৌজন্যে

প্রশ্ন :

এখন তো আবার অনেককে বলতে শুনি, বেশির ভাগ নাটকের কাজ অযত্নে হয়।

আগেও অযত্নের ভিড়ে ভালো কাজ হতো। এখনো অযত্নের ভিড়ে ভালো কাজ হচ্ছে। আগে পার্সেন্টেজ কম ছিল, এখন সেটা বেড়ে গেছে।

প্রশ্ন :

কেন বেড়ে গেছে মনে করছেন?

ইন্ডাস্ট্রি বড় হচ্ছে। আগে গুটিকয় পরিচালক ছিলেন, আমরা তাঁদের সঙ্গে কাজ করতাম। এখন নির্মাতা দেড় হাজারের বেশি মনে হয়। সবার নামই তো আমরা জানি না। এই দেড়-দুই হাজার সবাই তো ক্রিম হতে পারেন না। এখানে ২০-২৫ জনই হন। দ্যাটস ফাইন। প্রতিটা ইন্ডাস্ট্রির অবস্থাই তা-ই। ইন্ডিয়ার সব ফিল্ম বা সব নাটক ভালো হয়, তা তো না। হলিউডেরও একই অবস্থা। আমরা কতটারই-বা খবর রাখি। শুধু ভালো কাজগুলো আমাদের কাছ পর্যন্ত আসে।

নাটকের সহশিল্পী ও নির্মাতার সঙ্গে জেনি
ছবি ফেসবুক থেকে

প্রশ্ন :

আপনি কি কম কাজ করেন?

আমি কখনোই মাসে ৩০ দিন কাজ করিনি। সবাই যেমন মাসে ৩০ দিন এবং ঈদে ২০-৩০টি নাটকের কাজ করেন, আমি সেসবের পক্ষপাতি নই। আমি বরাবরই স্ক্রিপ্ট সেন্সর করতাম। একঘেয়ে স্ক্রিপ্টে কখনোই কাজ করতে চাই না। একটা ফোন করা যাবে প্লিজ নাটক প্রচারের পর তো আমার কাছে ২০টি পাগলের চরিত্রের স্ক্রিপ্টের প্রস্তাব আসে। প্রতিনিয়ত নিজেকে নতুন চরিত্রে এক্সপ্লোর করতে চাই। আমি নিজে যা না, তা-ই হতে চাই। যে ধরনের চরিত্রে অনেক লেয়ারস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ আছে, তা-ই করতে চাই। এ ধরনের চরিত্রে কষ্ট হয়, ভয় লাগে—তারপরও আনন্দ থাকে।