দাদা আমার বাদন শুনে চমকে গিয়েছিলেন

>বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবে এবারই প্রথম সরোদে যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত খ্যাতিমান শিল্পী আশিস খাঁ। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব দ্য আর্টসে শিক্ষকতা করছেন তিনি। তাঁর দাদা আলাউদ্দিন খাঁ ও বাবা আলী আকবর খাঁর জন্ম বাংলাদেশেই। গতকাল রোববার সকালে ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে নিজের কক্ষে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নেন গ্র্যামির জন্য মনোনয়ন পাওয়া এই শিল্পী।
আশিস খাঁ l ছবি: খালেদ সরকার
আশিস খাঁ l ছবি: খালেদ সরকার

উৎসবে সংগীত পরিবেশন করে কেমন লাগল?
খুব ভালো। অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল এখানে বাজাব। ঢাকায় আগেও বাজিয়েছি, কিন্তু সেগুলো ছিল ঘরোয়া আয়োজন। এটা দেখে গর্ববোধ করছি যে এ দেশের মানুষ এখনো তাদের সংগীত–ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। সারা পৃথিবীতে, বিশেষ করে বলিউডে যা হচ্ছে, সেগুলোকে গান বা নাচ বলা যাচ্ছে না। মা-বাবারাও দেখছি বেশ খুশি হচ্ছেন যে তাঁদের সন্তানেরা নাচগান করছে!
আপনি নিজে শিখেছেন গুরু-শিষ্য পরম্পরায়, শেখাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই দুই শিক্ষাপদ্ধতি থেকে প্রাপ্তি কতটা ভিন্ন?
ভারতীয় সংগীত নিয়ে অনেক বিদেশি ছাত্র গবেষণা করছে। তাদের পরম্পরায় শেখানো সম্ভব নয়। যে কজনকে শেখাচ্ছি, চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব উজাড় করে দিতে।
শৈশবে আমরা সরোদ শুনেছি, সঙ্গে বড়জোর তবলার কাজ ছিল। এখন সংগতে গিটারসহ নানা আধুনিক যন্ত্র যুক্ত হচ্ছে...
কাণ্ডটার জন্য আমিই দায়ী। চেষ্টা করেছিলাম নানা যন্ত্রানুষঙ্গে নতুন কিছু করার। খারাপ হচ্ছে না আশা করি। আমার নতুন অ্যালবামটি বের হলে দেখবেন, তাতে আরও কিছু ব্যতিক্রম কাজ রাখা হয়েছে। তবে যে যেই যন্ত্র নিয়েই কাজ করুক না কেন, নিজ যন্ত্রটিকে ভালো করে না জানলে কোলাবরেশন করা যায় না।
আপনার ফুফু বিদুষী অন্নপূর্ণা দেবীর কথা জানতে ইচ্ছা করছে।

দাদা বাইরে যাওয়ার সময় ফুফুকে বলে যেতেন আমার দেখভাল করার জন্য। আলাপটা আমি তাঁর কাছ থেকেই শিখেছি। এটা দাদার জন্য একটা চমক ছিল। একদিন দাদা আমার বাদন শুনে চমকে গিয়েছিলেন।
আমাদের শিল্পীদের গান শোনার সুযোগ হয়েছে আপনার?
এখানে অনেক ছেলেমেয়ে আছে খুব ভালো গায়। বিশেষ করে মেয়েরা। অনেক বছর আগে ফিরোজা বেগমের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তিনি খুব ভালো নজরুলসংগীত করতেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আপনার দাদার স্মৃতিবিজড়িত জায়গাটায় যাবেন না?
এবার আর যাওয়া হবে না। পরেরবার এলে অবশ্যই যাব। সেখানে যেটা ঘটে গেল, সেটা সত্যিই দুঃখজনক। আমরা সব ধর্মের মানুষকে সমান শ্রদ্ধা ও সম্মানের চোখে দেখি।
সাক্ষাৎকার: রাসেল মাহমুদ