বেশ কিছু গান শোনানোর পর তিনি 'নাসেক নাসেক' বেছে নিলেন

অনিমেষ রায়
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
লোকগান কাভার করে ফেসবুক–ইউটিউবে এখন পরিচিত মুখ অনিমেষ রায়। কোক স্টুডিও বাংলার প্রথম গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। হাজং ভাষার এই গান প্রশংসা কুড়াচ্ছে, শ্রোতাদের নজর কেড়েছে শিল্পীর পরিবেশনা। অনিমেষ কথা বললেন প্রথম আলোর সঙ্গে।

প্রশ্ন :

আপনার পরিবেশনা প্রশংসিত হয়েছে। নিশ্চয় ভালো লাগছে?

নিজের গান, ভালো তো লাগবেই। নিজের ভাষার গান এত বড় একটা প্ল্যাটফর্মে উপস্থাপন করতে পেরেছি, এটা আমার জন্য অনেক বড় ব্যাপার। আমার হাজং ভাষার গান বহু মানুষের কাছে পৌঁছে গেল। কোক স্টুডিওতে গাওয়ার আগে থেকেই গানটা নিয়ে আমার ভালোলাগা ছিল।

প্রশ্ন :

আর আপনার গোষ্ঠীর মানুষেরা?

সবাই প্রশংসা করছে। সুন্দর একটা জায়গায় আমাদের ভাষার গানটা গেছে, সবাই দেখছে, সেই জায়গা থেকে সবাই খুশি। এই গানটা আমি দু–এক বছর আগে লিখেছিলাম। আমাদের গোষ্ঠীর কোনো অনুষ্ঠানে আমি গানটি বেশ কয়েকবার গেয়েছি।

তাঁর কণ্ঠে বাংলা লোকগান সাড়া ফেলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

প্রশ্ন :

বাড়িতে আপনার কে কে আছেন?

আমরা তিন ভাই, এক বোন। আমি সবার ছোট। বোন বিয়ে করেছেন। বাড়িতে মা, দুই বউদি আছেন।

প্রশ্ন :

কবে থেকে গাইছেন? উকুলেলে বেছে নিলেন কী ভেবে?

ছোটবেলা থেকেই সব ধরনের গান করি। আমার পরিবারের হাজং গান লেখার চর্চা ছিল। দাদু লেখেন, আঙ্কেল লেখেন, বাবাও লিখতেন। সেই সুবাদে আমিও লিখি। আমাদের পরিবারের সবাই গান ভালোবাসেন, গান করেন। হাজং সমাজে কোনো অনুষ্ঠান হলে আমরা গান করি। আর উকুলেলে নিজের ভালো লাগে বলে ইউটিউব দেখে শিখেছি। এমনিতে আমাদের কমিউনিটির সবাই হারমোনিয়াম, খোল, করতাল বাজিয়ে গান করতেন।

গানের সঙ্গেই থাকতে চান অনিমেষ
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

প্রশ্ন :

কোক স্টুডিও বাংলার প্রযোজক অর্ণব আপনাকে কীভাবে খুঁজে পেলেন?

আমার একটা ইউটিউব চ্যানেল আছে, সেখানেই তিনি আমাকে দেখেছেন। সিলেকশনের সময় তিনি আমার গান শুনেছিলেন। কথা বলে যখন জানলেন আমি হাজং, তখন তিনি আমাকে আমার মাতৃভাষার গান দিতে বললেন। আমার পরিবারের সদস্যদের লেখা বেশ কিছু গান শোনানোর পর তিনি আমার 'নাসেক নাসেক' বেছে নিলেন। অদিতদা গানটা পছন্দ করলেন।

প্রশ্ন :

গানের বাইরে কী করছেন, কোথায় থাকছেন?

ময়মনসিংহের ত্রিশালে থাকি। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লোকসংগীতে মাস্টার্স পড়ছি। আগামী মাসে আমার পরীক্ষা।

লোকসংগীত নিয়ে পড়াশোনা করছেন অনিমেষ
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

প্রশ্ন :

আপনি কি শিল্পী হতেই চেয়েছিলেন?

শিল্পী হব, এ রকম কোনো ভাবনা আমার ছিল না। গান ভালোবাসতাম, গাইতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন এলাম, তখন মনে হলো যে গানটা করতে ভালো লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের একটা ব্যান্ড ছিল। আমরা নানা রকম গান করতাম। লোকসংগীতের প্রতি আমার আলাদা টান ছিল। এ কারণে এটার ওপরে জোর দিলাম, মাস্টার্সেও নিলাম লোকসংগীত। গানের জন্য আমার তেমন কষ্টও করতে হয়নি, ভালোবাসার কাজ করতে কষ্ট হবে কেন। পরিবার আমাকে খুব সাপোর্ট দিয়েছে। এখনো ভিডিও করার সময় সবাই চুপচাপ থাকে, যাতে কোনো শব্দ না হয়।

প্রশ্ন :

ভবিষ্যতে কী করবেন?

গান নিয়েই থাকতে চাই। জানি না কী করতে পারব। কিছু হতে পারি বা না পারি, কোনো অবস্থানে যেতে পারি বা না পারি, এসব নিয়ে আমার কোনো ভাবনা নেই।