‘বাবা পুরস্কারটি পেলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম’
দুই বছর আগেও অভিনয়ের স্বীকৃতি নিয়ে পরিচিতজনদের কাছে বলার মতো তেমন কিছু ছিল না। স্বীকৃতি নিয়ে কেউ জানতে চাইলে তেমন কিছু বলার থাকত না। সেই অভিনেতা পরপর সেরা অভিনেতা হিসেবে দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়ে বাজিমাত করেছেন। এখন সহকর্মীদের মধ্যে তিনিই আলোচনায়। এবার যেন অপেক্ষা হ্যাটট্রিকের। বলছি চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদের কথা। গত বছর তিনি ‘বিশ্বসুন্দরী’ এবং এ বছর ‘মৃধা বনাম মৃধা’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মনোনীত হয়েছেন।
ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়ে সিয়াম বলেন, ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়ে ভালো লাগছে। আমি আনন্দিত, পছন্দের গল্পে এই পুরস্কার পেয়ে। “মৃধা বনাম মৃধা” সিনেমা শুটিং থেকে আমাদের সবার ইনভলভমেন্ট অনেক বেশি ছিল। আমরা পুরো টিম চাচ্ছিলাম ভালো একটি নির্মাণ হোক সিনেমাটির। গল্পের বিভিন্ন বিষয় নিয়েও অনেক যুক্তিতর্ক হয়েছে। তারপরেই ভালো কিছু হয়েছে। বিশেষ একটি কারণে আনন্দ বেশি লাগছে, দর্শকদের জন্য কাজটি করতে চেয়েছি। সিনেমাটি দিয়ে আমি দর্শকদের সঙ্গে থাকতে চেয়েছি। সেই কাজটার রাষ্ট্রীয় সম্মান, আমার কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি।’
সিনেমাটি নিয়ে অনেক প্রত্যাশা ছিল সিয়ামের। প্রচারণারও অনেকটা সময় দিয়েছেন। সিনেমা সিনেমা হলে দর্শক সেভাবে দেখেননি। পরে অবশ্য ওটিটিতে মুক্তি পেলে দর্শকদের কাছ থেকে সিয়াম প্রশংসা পান। সিয়াম বলেন, ‘সিনেমাটি নিয়ে হয়তো অনেক কিছু করতে পারিনি আবার অনেক কিছুই পেয়েছি। আমাদের তো অনেক সময় হাত বাঁধা থাকে। তবে সিনেমাটি মুক্তির পর আরও অনেক দর্শকের সিনেমাটি দেখা উচিত ছিল। পরে অবশ্য ওটিটিতে মুক্তি পাওয়ার সময় প্রপার অ্যাপ্রিসিয়েশন পেয়েছি। ওটিটিতে ৩৫ লাখের ওপর মানুষ দেখেছেন। তখন মনে হয়েছিল সিনেমাটার আরও আরও কিছু প্রুফ করা বাকি আছে। অবশেষে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পেলাম।’
‘মৃধা বনাম মৃধা’ পরিচালনা করেছেন রনি ভৌমিক। বাবা-ছেলের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব নিয়ে ছবির গল্প। গল্পটি এই শহরের। প্রতিটি পরিবারের। গল্পে সিয়াম আহমেদের বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান। একসঙ্গে সিনেমা দেখে পর্দার বাবা–ছেলে কেঁদেছেন। এবার পুরস্কার পাওয়ার পরও পর্দার বাবার জন্য কিছুটা মন খারাপ। সিয়াম বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় “মৃধা বনাম মৃধা” দিয়ে আরও একজন মানুষ যদি পুরস্কার পেতেন, তাহলে আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম। তিনি আমাদের অভিভাবক তারিক আনাম খান। এখন যেহেতু আমারটা ডিক্লিয়ারে এসেছে, আমি সিনেমার গল্পে ছেলে, বাবা হয়তো ছেলের এই প্রাপ্তিতে একইভাবে খুশি হবে। বাবা পুরস্কারটি পেলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম। অবশ্যই অ্যাওয়ার্ডটা তারও।’
ছবিতে আরও দেখা যাবে নিমা রহমান, নোভা ফিরোজ, সানজিদা প্রীতি, তৌফিকুল ইসলাম প্রমুখকে। গল্প ও চিত্রনাট্য করেছেন রায়হান খান। গল্পে দেখা যাবে, বাবা-ছেলের আবেগ-ভালোবাসা আর পুত্রবধূর সম্পর্কের সমীকরণ নিয়েই সিনেমাটি। আশফাক মৃধা তাঁর বাবা ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির কর্মকর্তা। অফিস থেকে প্রমোশন নিয়ে সুইডেনে যাওয়া নিয়ে বিপত্তি ঘটে বাবা-ছেলের। তা গড়ায় কোর্ট পর্যন্ত। এই লড়াইয়ে জিতবে কে? এমন গল্পটি ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছিল।