সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে আমরা এখন একসঙ্গে আছি: সারিকা

বিবাহোত্তর সংবর্ধনার এক মাসের মাথায় গত বছরের ২৮ নভেম্বর স্বামী জি এস বদরুদ্দিন আহমেদ ওরফে রাহির নামে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নারী নির্যাতনের মামলা করেন মডেল, অভিনেত্রী ও উপস্থাপক সারিকা সাবরীন। নাটকেও কাজ কমিয়ে দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। মামলার পরের ঘটনাসহ নিজের বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন সারিকা।

সারিকা সাবরীন

প্রশ্ন :

মামলার অগ্রগতি কী?

রাহি ক্ষমা চেয়েছে, আমি মামলা তুলে নিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবার বসেছিল। একসঙ্গে থাকার সুযোগ চেয়েছে রাহি। সেই অনুরোধে সাড়া দিয়ে আমরা এখন একসঙ্গে থাকছি। কারণ, আমি রাহিকে ভালোবাসি। এখন রাহির ভাড়া করা বাসা বসুন্ধরায় আছি। এই সুন্দর সমাধানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তা ছাড়া আমিও চেয়েছি, সুন্দরভাবে সংসার করতে। কারণ, বিয়ে ভাঙা ভালো কিছু নয়। দুজনেরই পরিবার আছে, সমাজ আছে। এটা নিয়ে তারা তো বিব্রত অবস্থায় পড়ে। সুতরাং আমরা দুজনই একসঙ্গে সংসার চালাতে চেষ্টা করে যাচ্ছি।

প্রশ্ন :

তাহলে এমন কী হয়েছিল যে আপনাকে মামলা পর্যন্ত করতে হয়েছে?

মানুষ চায় সবার আগে নিজে ভালো থাকতে, তারপর আশপাশের মানুষকে ভালো রাখতে। ওই সময় আমার ওপর দিয়ে খুব ঝড় বয়ে গিয়েছিল। মামলা করার আগেও চেষ্টা করেছি সমাধান করতে, হয়নি। পরে বাধ্য হয়েই কাজটি করতে হয়েছিল আমাকে। থাক, সেসব কথা এখন আর না বলি।

সারিকা সাবরিন
ছবি : সংগৃহীত

প্রশ্ন :

মাঝে অভিনয়ে নিয়মিত হয়েছিলেন, বেশ কিছুদিন হলো কাজ থেকে দূরে। পরিবার থেকে কোনো বাধা আছে নাকি?

আমার কাজের ব্যাপারে দুই পরিবার থেকে কোনো বাধা নেই। বিয়ের আগে দুই ঈদে কাজ করেছি। কিন্তু নাটকগুলো যখন প্রচারিত হয়, তখন নিজেকে দেখে নিজেরই খারাপ লেগেছে। আমি অনেকটাই মুটিয়ে গিয়েছিলাম। এরপর কাজ বাদ দিই। পরে প্রায় ১৪/১৫ কেজি ওজন ঝরিয়ে ফেলি। মাঝখানে টুকটাক কাজ করা শুরু করি। এর মধ্যে চরকির অ্যান্থলজি সিরিজ ‘ক্যাফে ডিজায়ার’–এর একটি পর্বে কাজ করি। গত মাসেও সর্দার রোকনের একটি নাটকে কাজ করেছি। তবে নিয়মিত কাজ শুরু করিনি। অনেক ঝুটঝামেলা গেল। আবার ওজন খানিকটা বেড়েছে। এখন সব গুছিয়ে এনেছি, কিছুটা ওজন কমিয়ে আবার শুরু করব। ভালো কাজের অপেক্ষায় আছি।

প্রশ্ন :

কিন্তু এত ঝড়ঝাপটার মধ্যেও উপস্থাপনা নিয়মিতই করেন!

বাংলাভিশনের ‘আমার আমি’ অনুষ্ঠানটাই শুধু করি। কাজটি করতে আমার খুব ভালো লাগে। কারণ, এখানে বিনোদনের সব মাধ্যমের মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়। নাটকের নতুন প্রজন্মের যাঁদের সঙ্গে আমার কাজ করা হয়নি, তাঁদের সঙ্গেও জানাশোনা হয়। এমনকি নাটকের বাইরে সংগীতশিল্পী, সিনেমার শিল্পীসহ আরও অন্য পেশার মানুষের সঙ্গে চেনাজানা হয়। তাঁদের জীবনের গল্প শোনা যায়। মজার মজার অভিজ্ঞতা হয়।

সারিকা সাবরিন ও আহমেদ রাহি

প্রশ্ন :

প্রথম ওটিটিতে কাজ করলেন, কেমন অভিজ্ঞতা হলো?

নাটক আর ওটিটির কাজের ধারা আলাদা। ওটিটির কাজে বাজেট আছে, কাজের সঠিক পরিকল্পনা আছে। এতে করে কাজটি ভালোভাবে করা যায়। নাটকের শুটিংয়ের আগে রিহার্সাল করার প্রচলন এখন নেই, সরাসরি গিয়ে শুটিং করতে হয়। কিন্তু ওটিটির কাজের ধরন একেবারেই ভিন্ন। শুটিংয়ের আগে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হয়। কয়েক দিন আগে চরিত্রের লুক টেস্ট করতে হয়, চরিত্রের মহড়া করতে হয়। তারপর শুটিংয়ে যেতে হয়। ভালো কাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম।

সারিকা সাবরিন

প্রশ্ন :

আপনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেই কিন্তু আপনার নামে অনেক আইডি, পেজ আছে। যেখানে বন্ধুর তালিকায় বিনোদন জগতের অনেক তারকাই যুক্ত আছেন। তাঁরা কি প্রতারিত হচ্ছেন না?

আমি প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেই। আমার কোনো আইডি, পেজও নেই। কিন্তু শুনেছি, আমার নামে ফেসবুকে বেশ কিছু আইডি, পেজও আছে। যেখানে ১ লাখ থেকে ১৫ লাখ পর্যন্ত অনুসারী আছেন, যার মধ্যে মিডিয়ার বন্ধুরাও আছেন। মিডিয়ার বন্ধু ও ভক্তদের বলতে চাই, আমার নামে যেসব আইডি আছে, সব ভুয়া। অনেক দিন থেকেই এসব বন্ধের জন্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, সমাধান হয়নি এখনো।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন