খলনায়ক কি ডোনাল্ড ট্রাম্প
আলোচনা তো হবেই, ছয় বছর পর নতুন সিনেমা নিয়ে ফিরলেন বং জুন-হো। অস্কারজয়ী এই নির্মাতা কি নামের প্রতি সুবিচার করতে পারলেন, এমন আলোচনার পাশাপাশি আলোচনা চলছে সিনেমাটির খলচরিত্র নিয়ে। অনেকেই বলছেন, খলচরিত্রটি তৈরি হয়েছে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেরণায়!
অস্কার জয়ী ‘প্যারাসাইট’-এর পর বং জুন-হোর নতুন সিনেমা ‘মিকি ১৭’। ধরনে সায়েন্স ফিকশন, তবে নির্মাতার অন্য সিনেমাগুলোর মতো এটিও ডার্ক কমেডিতে ভরপুর।
২০২২ সালে প্রকাশিত এডওয়ার্ড অ্যাস্টনের উপন্যাস ‘মিকি ৭’ অবলম্বনে তৈরি সিনেমাটি বং জুন-হোর প্রথম ইংরেজিভাষী সিনেমাও। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বার্লিন উৎসবে প্রিমিয়ারের পর ২৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায় দক্ষিণ কোরিয়ায়। গত শুক্রবার সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেয়েছে।
হিমশীতল এক গ্রহে বসতি গড়ার বিপজ্জনক এক মিশন ঘিরে সিনেমার গল্প। সেই গ্রহ মানুষের জন্য কতটা উপযোগী, পরীক্ষা করতে মিকিকে বেছে নেওয়া হয়।
পরীক্ষা করতে গিয়ে মিকি মারা গেলেও সমস্যা নেই, মিকির নতুন ক্লোন বানিয়ে নেওয়া যাবে আবার। এভাবে মিকি ১৭ মারা যায়, এ জন্যই সিনেমার নাম ‘মিকি ১৭’। মূল উপন্যাসে মিকি মারা যায় সাতবার, বং জুন-হো তাঁকে আরও ১০ বার মেরেছেন! ট্রেলারেই দেখা যায়, সবাই যখন ধরে নিয়েছে মিকি আবার মারা গেছে, তখন তার নতুন ক্লোন তৈরি করা হয়। কিন্তু আগের মিকি মরে না, ফিরে এসে দেখে নতুন মিকি দিব্যি তাঁর বিছানায় শুয়ে আছে!
‘মিকি ১৭’-এর প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রবার্ট প্যাটিনসন, বহুল চর্চিত সেই খলচরিত্রে আছেন মার্ক রাফালো।
মুক্তির পর কোরিয়ায় দারুণ ব্যবসা করেছে সিনেমাটি। দেশটিতে এটি এখন কোভিড–পরবর্তী দ্বিতীয় ব্যবসাসফল সিনেমা। সমালোচকদের কাছেও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। সমালোচকেরা বলছেন, সিনেমাটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ রবার্ট প্যাটিনসন। বহুমাত্রিক চরিত্রটি সম্ভবত তাঁর ক্যারিয়ার–সেরা। অনেক সমালোচক আবার সিনেমাটিতে নতুন কিছু খুঁজে পাননি। তাঁদের ভাষ্য, এ সিনেমাতেও বৈষম্য, প্রাণী অধিকারের মতো পুরোনো থিমকেই প্রাধান্য দিয়েছেন নির্মাতা। এ সিনেমার আরেক আকর্ষণ মার্ক রাফালো। পর্দায় তাঁর সংলাপ বলা, অঙ্গভঙ্গি দেখে অনেকে ধরেই নিয়েছেন চরিত্রটি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আদলে গড়া। সত্যিই কি তাই?
এই প্রশ্নের উত্তরে এন্টারটেইনমেন্ট উইকলিকে বং জুন-হো বলেন, ‘আমরা যখন গত মাসে বার্লিনে ছবিটির প্রিমিয়ার করি, বিভিন্ন দেশের দর্শক সিনেমাটি নিয়ে মন্তব্য করেন। তাঁরা বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে চরিত্রটি মেলাচ্ছিলেন। ইতিহাসে অনেক রাজনৈতিক আর স্বৈরশাসক এসেছেন, চরিত্রটি সেগুলোরই মিশ্রণ।’
এর আগে চরিত্রটি নিয়ে জিমি ফ্যালনের শোতে রাফালো বলেন, ‘আমি এক স্বৈরশাসকের চরিত্রে অভিনয় করেছি। তিন বছর আগে যখন শুটিং করি মনে হয়েছিল, অনেক কিছুই ওভার দ্য টপ হয়ে যাচ্ছে কি না। এখন বুঝতে পারছি, আমরা আসলে কমই দেখিয়েছি। আমরা মনে হয়, একটা তথ্যচিত্র তৈরি করেছি।’