এর মধ্যে কী সিনেমা দেখলেন?
তটিনী: সম্প্রতি ওরকমভাবে কোনো কাজ দেখা হয়নি। সচরাচর আমি মালয়ালম সিনেমা দেখি। মালয়ালম সিনেমায় গ্ল্যামারের চেয়ে স্টোরি ও ক্যারেক্টারে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। সিনেমাগুলো খুবই বিশ্বাসযোগ্য লাগে। বাসিল জোসেফের কাজ ভালো লাগে। ঋষভ শেঠি খুব ভালো কাজ করেন। ‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’ সিনেমাটা ভালো লেগেছে। এর মধ্যে ‘লিংকন লইয়ার’ দেখেছি। আমি সচরাচর জিবলি ফিল্মস দেখি।
কী বই পড়লেন?
তটিনী: যখন বরিশালে ছিলাম, তখন অনেক বই পড়তাম। সমরেশ মজুমদারের বই আমার খুব ভালো লাগে। ইমদাদুল হক মিলনের লেখা ভালো লাগে। মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের বই ভালো লাগে। সম্প্রতি ‘ইকিগাই’ পড়েছি, ‘সুইট বিন পেস্ট’ পড়েছি। পরে ‘সুইট বিন’ সিনেমাটিও দেখেছি।
‘মি টাইম’ কীভাবে কাটান?
তটিনী: যখন টিভিসি করতাম, তখন অনেক অবসর সময় পেতাম। তখন ছবি আঁকতাম। পরে নর্থ সাউথে (ইউনিভার্সিটি) যখন ছিলাম, তখন মিউজিকের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। প্রোগ্রামও করতাম। তবে এখন আর করা হয় না। সত্যি বলতে, এখন ‘মি টাইম’ পাই না বললেই চলে। শুটিংয়ের বাইরে বাসায় মায়ের সঙ্গে বেশি সময় কাটাই।
আপনাকে নিয়ে খুব একটা বিতর্ক শোনা যায় না...
তটিনী: আমি ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সবচেয়ে কম বিতর্কিত (হাসি)।
প্রথম আলো :
বিষয়টি কীভাবে সামলান?
তটিনী: আমার কাছে মনে হয়, যা রটে; তার কিছু হলেও ঘটে। আপনি সৎ থাকেন, তাহলে আপনাকে নিয়ে বিতর্ক হলেও ভয় থাকবে না। আমি তো এটা করিইনি, বিষয়টি দর্শক বুঝবেন। আমি ওভাবেই নিজেকে মেইনটেইন করার চেষ্টা করি। মেইনটেইন করে চললে বিতর্ক হওয়ার কথা নয়।
অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা পেয়েছেন আপনি। এটা শিল্পীর কাছে স্বপ্নের মতো...
তটিনী: এটা অবশ্যই উপভোগ করি। আমার মনে হয়, আমার ক্যারিয়ারে যে বড় পরিবর্তন এসেছে, সেটা স্বপ্নেও ভাবিনি। মানুষ তো অন্তত স্বপ্ন দেখে, আমি আর্টিস্ট হব—কখনো এই স্বপ্নও দেখিনি। সেই জায়গা থেকে আল্লাহ আমাকে এত বড় কিছু দিয়েছে, এর জন্য আমি কৃতজ্ঞ। দর্শক আমাকে পছন্দ করেন, এটা তো একটা আশীর্বাদ। ওভারহোয়েলমড লাগে মাঝেমধ্যে। সে কারণে আমি যত বড় হচ্ছি, যত জনপ্রিয়তা বাড়ছে; আমি তত ট্রাই করি, মানুষের সঙ্গে যতটা বিনয়ী থাকা যায়। আমি জনপ্রিয় হয়ে গেছি—বিষয়টি ওভাবে দেখি না। আমি আমার মতো থাকার চেষ্টা করি।
বলা হয়, তারকাখ্যাতি শিল্পীদের ব্যক্তিগত জীবনকে সীমিত করে ফেলে। আফসোস লাগে?
তটিনী: একটু তো লাগেই। অনেকে বলে, কোনো কিছুই বিনা মূল্যে আসে না। সবকিছুর একটা অপারচুয়েনিটি কস্ট থাকে। আমি মানুষ হিসেবে খুব ইন্ট্রোভার্ট। ফলে আমার জন্য খুব একটা আলাদা কিছু মনে হচ্ছে না। তবে ব্যক্তিগত জীবনে একটু ঝামেলা হয়। নিজের জন্য তেমন একটা সময় হয়ে ওঠে না। এ কারণে মাঝেমধ্যে মনে হয়, অনেক আগে আমি যেমন বাবলি (উচ্ছল) ছিলাম; এখানে–ওখানে ঘুরতাম। সেটা অনেক কমে গেছে। একই সময়ে আমি আমার কাজও উপভোগ করি। ব্যালান্স হয়ে যায়।
ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার বন্ধু কারা?
তটিনী: ইন্ডাস্ট্রিতে আমার কোনো বন্ধু নেই। ইয়াশ (রোহান) ভাইয়ার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভালো। কিন্তু বন্ধু যে বিষয়টা, ওই রকম আসলে ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ নেই। আমি খুবই প্রাইভেট মানুষ; এমন না যে আমি ইন্টারঅ্যাকশন পছন্দ করি না। আমি ইন্ডাস্ট্রিতে একটু কম কথা বলতে চাই।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইয়াশ রোহানের সঙ্গে আপনার প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে...
তটিনী: আপনি যদি কিছু না করে থাকেন, তাহলে কোনো ভয় থাকবে না। আমরা শুরুতে একটু ভয় পেতাম, এটা ব্যাকফায়ার কিংবা পার্সোনালি ইমেজ ক্ষুণ্ন করে কি না। পরে আমাদের মনে হলো মানুষ যদি এটা বলে আনন্দ পায়, পাক—সমস্যা নেই। মানুষ আমাদের একসঙ্গে পছন্দ করে—এটা আমাদের জন্য আশীর্বাদ। আপনিও জানেন, আমিও জানি—এটা (প্রেম) হবে না। নাটক–সিনেমায় প্রেম–ভালোবাসা যেভাবে দেখায়, বাস্তবে ভিন্ন। এটা আমিও জানি, ভাইয়াও (ইয়াশ রোহান) জানে, এটা হবে না। এগুলো নিয়ে কিছু ভাবি না।
এর আগে নাটকে বহুবার ইয়াশ রোহান ও তটিনী জুটিকে দেখেছেন দর্শকেরা, তবু ‘তোমার জন্য মন’ সিনেমাটা কেন দেখছেন?
তটিনী: এটার পুরোপুরি কৃতিত্ব শিহাব শাহীন ভাইয়ের। ওনার সঙ্গে কাজ করাটা আমার জন্য অনেক বড় সুযোগ। আমাদের প্রজন্মের শিল্পীদের দুর্ভাগ্য, আমরা ভালো ডিরেক্টর খুবই কম পেয়েছি। তাঁদের কাজের সঙ্গে এখনকার কাজের পার্থক্য আছে। ওনার সঙ্গে কাজ করতে পারাটা আমার অনেক বড় লার্নিং প্রসেস (শিক্ষণীয়), অনেক কিছু শিখেছি।