সাংবাদিক দম্পতি নিজ বাসায় খুন হন, ডিসেম্বরেই আসছে ‘অমীমাংসিত’
রায়হান রাফীর মুক্তিপ্রতীক্ষিত ওয়েব ফিল্ম ‘অমীমাংসিত’ দর্শকদের সামনে প্রদর্শন উপযোগী নয় বলে চূড়ান্ত রায় দিয়েছিল চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড। গত বছরের ২৪ এপ্রিল এই সিদ্ধান্ত জানান বোর্ডের উপপরিচালক মো. মঈনউদ্দীন। এরপর পেরিয়ে গেছে প্রায় দেড় বছর, অবশেষ খুলছে ‘অমীমাংসিত’ জট, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আইস্ক্রিনে মুক্তি পাবে রায়হান রাফী পরিচালিত সিনেমাটি
অবশেষে মুক্তি
সাংবাদিক দম্পতি নিজ বাসায় খুন হন, কিন্তু কারা খুন করল তাঁদের? কী তাদের উদ্দেশ্য? সেই সাংবাদিক দম্পতির মৃত্যুরহস্য নিয়ে ওটিটি প্লাটফর্ম আইস্ক্রিনের জন্য রায়হান রাফী বানিয়েছেন ওয়েব ফিল্ম ‘অমীমাংসিত’। শুটিংসহ যাবতীয় কাজ শেষ হলেও অনেক দিন ধরে আটকে আছে ফিল্মটি। অবশেষে শেষ হচ্ছে প্রতীক্ষা। আগামী ডিসেম্বরে ওটিটি প্লাটফর্ম আইস্ক্রিনে মুক্তি পাচ্ছে ‘অমীমাংসিত’। সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি। তবে তৎকালীন সেন্সর বোর্ডের আপত্তির মুখে মুক্তি আটকে যায়। অবশেষে জট খুলতে যাচ্ছে রহস্যের।
আইস্ক্রিন সূত্রে জানা গেছে, সব ঠিক থাকলে এই ডিসেম্বরেই আইস্ক্রিনে দেখা যাবে ‘অমীমাংসিত’। সিনেমার দুই কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইমতিয়াজ বর্ষণ ও তানজিকা আমিন।
কী বলেছিল সেন্সর বোর্ড
‘অমীমাংসিত’ সিনেমাটিকে ছাড়পত্র না দেওয়ার পেছনে চারটি উল্লেখযোগ্য কারণের কথা উল্লেখ করেছিল তৎকালীন সেন্সর বোর্ড। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে সিনেমাটি ছাড়পত্র না দেওয়ার পেছনে যে চারটি কারণের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল, তা হচ্ছে চলচ্চিত্রটিতে নৃশংস খুনের দৃশ্য রয়েছে, কাল্পনিক কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপের বিষয়বস্তু বাস্তবতার সঙ্গে মিল রয়েছে—এ ধরনের কাহিনি বাস্তবে ঘটেছে এবং ঘটনা-সংশ্লিষ্ট মামলা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন ও চলচ্চিত্রটির কাহিনি/বিষয়বস্তু বিচারাধীন মামলার সঙ্গে মিল থাকায় ভুল বার্তা দিতে পারে এবং তদন্তের বিঘ্ন ঘটাতে পারে। এ ছাড়া সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা আরও মতামত দেন, ‘দ্য কোড ফর সেন্সরশিপ অব ফিল্মস ইন বাংলাদেশ, ১৯৮৫ এর ১-এর I, V, VII দফায় বর্ণিত উপাদানগুলো চলচ্চিত্রটিতে বিদ্যমান থাকায় এটি জনসাধারণের মধ্যে প্রদর্শন উপযোগী নয়। তাই বাংলাদেশ সেন্সরশিপ আইনের বিধি ১৬(৫) মোতাবেক ওই চলচ্চিত্রের সেন্সর আবেদনপত্র নির্দেশক্রমে অগ্রাহ্য করা হলো।’
এসেছিল টিজারও
সেন্সর বোর্ডের আপত্তির আগে ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ছবিটির টিজার প্রকাশ করা হয়েছিল। সেটা দেখে অধিকাংশ দর্শক আঁচ করেছেন, এটি আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ড ঘিরে নির্মিত, যে ঘটনার রহস্য এক যুগ পেরিয়ে এখনো খোলাসা হয়নি।
প্রকাশ্যে আসা ৪০ সেকেন্ডের টিজারে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিখিত সংলাপ আকারে তুলে ধরা হয়েছিল। সেগুলো এ রকম—‘খুনগুলো হয়েছে আনুমানিক রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে। ধারণা করছি, এটা কোনো চুরি–ডাকাতির কেস...’, ‘সাংবাদিক, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন সবাই ক্রাইম জোনের আলামত নষ্ট করেছে। আমার করার কী ছিল?’, ‘ওদের কেউ মারেনি। ওরা নিজেরাই নিজেদের খুন করেছে’, ‘এটা নিশ্চিত পরকীয়া কেস! নইলে সেদিন...।’ এমন সব সংলাপ।
সিনেমাটি নিয়ে তখন প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমতিয়াজ বর্ষণ বলেছিলেন, ‘শুরু থেকেই রায়হান রাফী চেষ্টা করেছিলেন আলাদাভাবে কাজটি বানানোর। সেভাবেই শুটিং করা। আলাদা বলতে, আমাদের এই সিরিজে গল্পের প্রয়োজনে লং টেকের শর্ট রয়েছে। কিছু কিছু দৃশ্য ৩ থেকে ৪ মিনিট করে। মনস্তাত্ত্বিক বিষয় রয়েছে। যে কারণে নতুন একটি ভিজ্যুয়াল লুক পাবেন দর্শকেরা।’
ছবিটি মুক্তির চূড়ান্ত দিনক্ষণ এখনো নিশ্চিত করেনি আইস্ক্রিন।